ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাঞ্চেস্টার টেস্টে কার্যত মরণ-বাঁচন লড়াইয়ে দাঁড়িয়ে ভারতীয় দল। মাত্র তিন দিনের মাথায় ইংল্যান্ড ১৮৬ রানে এগিয়ে ছিল। ভারতের প্রথম ইনিংসে ৩৫৮ রানের জবাবে ইংল্যান্ড তুলে ফেলেছে ৫৪৪ রান, সাত উইকেট হারিয়ে। জো রুট খেলেছেন দুরন্ত ১৫০ রানের ইনিংস। এই পরিস্থিতিতে প্রাক্তন ভারতীয় কোচ রবি শাস্ত্রী (Ravi Shastri) একযোগে প্রশ্ন তুললেন দলের নেতৃত্ব ও কৌশল নিয়ে। তাঁর নিশানায় রয়েছেন অধিনায়ক শুভমন গিল এবং কোচ গৌতম গম্ভীর।
রবি শাস্ত্রীর মতে, শুভমন গিলের সিদ্ধান্তে পরিণত হতে ২৪ ঘণ্টা সময় লেগে গিয়েছে, যা এই পর্যায়ের ক্রিকেটে একেবারেই কাম্য নয়। তাঁর বক্তব্য, “গিলের বোধোদয় তৃতীয় দিনে হয়েছে। অথচ এই কৌশলগত সিদ্ধান্তগুলি দ্বিতীয় দিনেই নেওয়া উচিত ছিল। ড্রেসিংরুম থেকেও যেই সাহায্য পাওয়া উচিত ছিল, সেটাও গিল পাননি।”
শাস্ত্রী স্পষ্টভাবেই বলেন, গিল এখনও তরুণ অধিনায়ক, তাঁর শেখার সময় চলছে। কিন্তু সেই শেখার পথে যদি কোচ এবং সাপোর্ট স্টাফের যথাযথ দিশানির্দেশ না মেলে, তাহলে তার প্রভাব মাঠে পড়বেই। তিনি যোগ করেন, “আমার সময় কোহলিকেও বুঝিয়ে দিতে হত। ও সবসময় চাইত প্রতিটি সেশনে পাঁচটা করে উইকেট পড়ুক। কিন্তু সেটা তো হয় না। তাই ওকে বোঝাতে হত কবে আক্রমণাত্মক হতে হবে, কবে সংযত থাকতে হবে। একই জিনিস গিলের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।”
ভারতের বোলিং অ্যাটাক নিয়েও বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন শাস্ত্রী। তাঁর মতে, পুরো পরিকল্পনাই ভুল ছিল। সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন উঠেছে স্পিনার ওয়াশিংটন সুন্দর এবং নতুন টেস্ট খেলোয়াড় অংশুল কম্বোজকে নিয়ে।
শাস্ত্রী বলেন, “আগের ম্যাচে ওয়াশিংটন সুন্দর চার উইকেট পেয়েছে। অথচ এবার ওকে বল দেওয়া হল ৬৭ ও ৬৯ নম্বর ওভারে! একজন বোলারের কাছে এর মানে কী দাঁড়ায়? ও ভাববে, আমি তো ভাল বল করেছি, তাহলে আমাকে এতো দেরিতে কেন ব্যবহার করা হল? অথচ সুন্দর বল হাতে পেয়েই দুই উইকেট তুলে নিল।”
নতুন বলে অংশুল কম্বোজকে দিয়ে বল করানো নিয়েও প্রশ্ন তোলেন শাস্ত্রী। তাঁর মতে, “কম্বোজ তো নিজের প্রথম টেস্ট খেলছে। ওর ওপর এই চাপ না দিয়ে নতুন বল দেওয়া উচিত ছিল মহম্মদ সিরাজের মতো অভিজ্ঞ কাউকে।”
এরপর যদিও সরাসরি নাম করেননি, তবুও রবি শাস্ত্রীর কটাক্ষের লক্ষ্য যে গৌতম গম্ভীর, তা অনেকটাই স্পষ্ট। তিনি বলেন, “শুভমন গিলকে অন্তত দেড় বছর সময় দিতে হবে। এই সময় ড্রেসিংরুমের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভুল করলেও সেটা শুধরে দিতে হবে ড্রেসিংরুম থেকেই।” গিলের পেছনে পর্যাপ্ত সাপোর্ট না পাওয়ার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
চতুর্থ দিন থেকে ভারতের লক্ষ্য হওয়া উচিত ম্যাচ বাঁচানো। যদিও তার জন্য প্রয়োজন ধৈর্যের সঙ্গে ব্যাটিং। বোলিং বিভাগে নিরুত্তাপ পারফরম্যান্স, কৌশলের ভুল, এবং নবীন অধিনায়কের সিদ্ধান্ত ঘিরে এখন চাপে টিম ম্যানেজমেন্ট। এই অবস্থায় কোচ গম্ভীর এবং অধিনায়ক গিলের যৌথ নেতৃত্ব কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।