প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষ ভারতীয় রেলে যাতায়াত করেন। দেশের প্রতিটি প্রান্তকে সংযুক্ত করতে ভারতীয় রেলওয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার ট্রেন চালায়। এত বিপুল যাত্রী সংখ্যা সামাল দিতে এবং ট্রেনযাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে বিভিন্ন নিয়ম-কানুন মেনে চলা বাধ্যতামূলক। এরই মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল যাত্রীদের লাগেজ বা ব্যাগেজ সংক্রান্ত নিয়ম (Indian Railways Luggage Rules)।
অনেকেই জানেন না, রেলে ভ্রমণের সময় লাগেজ বহনের নির্দিষ্ট ওজন সীমা রয়েছে। অনেকেই জানতে চান—এই লাগেজ কোথায় চেক করা হয়? অতিরিক্ত লাগেজ থাকলে কী হয়? আজ আমরা এই সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য দিচ্ছি—
কোথায় চেক করা হয় লাগেজ?
সব যাত্রীর লাগেজ রুটিনভাবে চেক করা হয় না। তবে বড় বড় স্টেশনে লাগেজ স্ক্যানার বসানো থাকে এবং সেখানে লাগেজ পরীক্ষা হতে পারে। এছাড়াও পার্সেল অফিসের কাছাকাছি এলাকায় লাগেজ পরীক্ষার সম্ভাবনা থাকে। ট্রেন টিকিট পরীক্ষক (TTE) ও লাগেজ ইনস্পেক্টররা যদি কোনো যাত্রীর লাগেজ অতিরিক্ত বড় বা ভারী বলে মনে করেন, তবে তাঁরা তা চেক করতে পারেন।
নিরাপত্তা কর্মীরাও নিরাপত্তা তল্লাশির সময় লাগেজ চেক করতে পারেন, বিশেষ করে টিভি, বড় স্যুটকেস বা বাক্সজাত জিনিসের ক্ষেত্রে বেশি নজর দেওয়া হয়।
কত ওজন পর্যন্ত ফ্রি লাগেজ নেওয়া যায়?
রেলওয়ের নিয়ম অনুযায়ী, আপনি কোন শ্রেণির টিকিট কাটছেন, তার ওপর নির্ভর করে ফ্রি লাগেজের সীমা নির্ধারিত হয়েছে:
জেনারেল ক্লাস – সর্বোচ্চ ৩৫ কেজি (বিনামূল্যে)
স্লিপার ক্লাস – সর্বোচ্চ ৪০ কেজি (বিনামূল্যে)
থার্ড এসি – সর্বোচ্চ ৪০ কেজি (বিনামূল্যে)
সেকেন্ড এসি – সর্বোচ্চ ৫০ কেজি (বিনামূল্যে)
ফার্স্ট এসি – সর্বোচ্চ ৭০ কেজি (বিনামূল্যে)
অতিরিক্ত লাগেজ থাকলে কী করবেন?
যদি কারো লাগেজ অনুমোদিত সীমার বেশি হয়, তাহলে সেই লাগেজ রওনা হওয়ার আগেই পার্সেল অফিসে বুক করিয়ে নিতে হবে। বুকিং ছাড়া অতিরিক্ত লাগেজ বহন করলে তা নিয়মবহির্ভূত বলে গণ্য হবে।
অতিরিক্ত লাগেজ পেলে কী জরিমানা হয়?
টিকিট পরীক্ষক বা লাগেজ ইনস্পেক্টর যদি কাউকে অতিরিক্ত, আনবুকড লাগেজ নিয়ে ভ্রমণ করতে দেখেন, তবে তিনি জরিমানা করতে পারেন। জরিমানার পরিমাণ নির্ভর করে অতিরিক্ত কত কেজি লাগেজ রয়েছে এবং ভ্রমণের দূরত্ব কতটা তার উপর।
যাত্রার আগেই যদি বুঝতে পারেন লাগেজের ওজন বেশি হচ্ছে, তাহলে পার্সেল অফিসে গিয়ে অতিরিক্ত লাগেজ বুক করে নিন। এতে যাত্রার সময় কোনো ঝামেলা হবে না এবং জরিমানাও গুনতে হবে না। সচেতন যাত্রী হিসেবে রেলওয়ের লাগেজ সংক্রান্ত নিয়মগুলি জানা এবং তা মানা আমাদের দায়িত্ব। কারণ এতে যেমন নিজের অসুবিধা কমে, তেমনি সকলের জন্য ট্রেনযাত্রা নিরাপদ ও আরামদায়ক হয়।