কার্গিল বিজয় দিবসের (Shuvendu)পবিত্র উপলক্ষে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক সাংগঠনিক জেলা বিজেপির প্রাক্তন সৈনিক সেলের উদ্যোগে নিমতৌড়ি স্মৃতিসৌধে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে অপারেশন সিঁদুরের ঐতিহাসিক বিজয় উদযাপন করা হয় এবং দেশের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারকারী বীর সৈনিক ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শুভেন্দু অধিকারী।
এই অনুষ্ঠানে বীর যোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান এবং শহিদদের স্মরণে একটি স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়, যা উপস্থিত সকলের মধ্যে দেশপ্রেমের উদ্দীপনা জাগিয়ে তুলেছে।কার্গিল বিজয় দিবস ভারতের সামরিক ইতিহাসে একটি গৌরবময় অধ্যায়। ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনী অপারেশন বিজয়ের মাধ্যমে পাকিস্তানি অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে একটি অসাধারণ বিজয় অর্জন করে।
এই যুদ্ধে অসংখ্য বীর সৈনিক জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, যাদের ত্যাগের কারণে কার্গিল পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল। তমলুকের নিমতৌড়ি স্মৃতিসৌধে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সেই বীর শহিদদের স্মরণ করা হয় এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও সম্মান প্রকাশ করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপির স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, প্রাক্তন সৈনিকরা, শহিদ পরিবারের সদস্যরা এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার প্রাক্তন সৈনিক সেলের এই উদ্যোগ স্থানীয়দের মধ্যে দেশপ্রেমের বার্তা ছড়িয়ে দিতে সফল হয়েছে। অনুষ্ঠানের শুরুতে শহিদদের স্মরণে নীরবতা পালন করা হয় এবং স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়।
এরপর প্রাক্তন সৈনিকদের সম্মাননা প্রদানের মাধ্যমে তাদের দেশের প্রতি অবদানের কথা স্মরণ করা হয়। অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল শহিদদের স্মরণে আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির। এই শিবিরে বহু মানুষ অংশ নেন এবং রক্তদানের মাধ্যমে শহিদদের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন।
রক্তদান শিবিরে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন তরুণ-তরুণী, স্থানীয় বাসিন্দা এবং বিজেপি কর্মীরা। এই শিবির শুধুমাত্র শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর একটি মাধ্যমই নয়, সমাজে রক্তদানের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর একটি উদ্যোগ। স্থানীয় একজন রক্তদাতা বলেন, “আমাদের সৈনিকরা দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন।
আমরা রক্ত দিয়ে তাদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এটি আমাদের কাছে একটি গর্বের মুহূর্ত।”বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার নেতারা এই অনুষ্ঠানে কার্গিল যুদ্ধের বীরত্বগাথা তুলে ধরেন। তারা জানান, কার্গিল যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রতিকূল পরিস্থিতিতে অসাধারণ সাহস ও দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছিলেন।
এই যুদ্ধে অংশ নেওয়া সৈনিকদের মধ্যে অনেকেই পূর্ব মেদিনীপুরের সন্তান ছিলেন, যাদের ত্যাগ এই অঞ্চলের মানুষের কাছে চিরস্মরণীয়। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, “আমাদের শহিদদের ত্যাগ বৃথা যেতে দেওয়া যায় না। তাদের স্মৃতি আমাদের দেশপ্রেমের প্রেরণা। আমাদের দায়িত্ব হল তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের সম্মান রক্ষা করা।”
এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রাক্তন সৈনিকরা তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন এবং তরুণ প্রজন্মকে দেশের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান। তারা বলেন, কার্গিল যুদ্ধ আমাদের শিখিয়েছে যে দেশের সুরক্ষার জন্য একতা এবং সাহস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ধরনের অনুষ্ঠান তরুণদের মধ্যে দেশপ্রেম জাগিয়ে তুলতে এবং সৈনিকদের ত্যাগের গুরুত্ব বোঝাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কার্গিল বিজয় দিবসের এই আয়োজন তমলুকের মানুষের মধ্যে একটি গভীর প্রভাব ফেলেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এই ধরনের উদ্যোগ শুধুমাত্র শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর মাধ্যম নয়, বরং সমাজে ঐক্য ও দেশপ্রেমের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার একটি প্ল্যাটফর্ম। রক্তদান শিবিরে অংশ নেওয়া একজন তরুণ বলেন, “আমরা যদি আমাদের সৈনিকদের ত্যাগের কথা ভুলে যাই, তাহলে আমরা আমাদের দেশের ইতিহাসের প্রতি অবিচার করব।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন এই শিবিরে অংশ নিয়ে আমি গর্বিত।”এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিজেপির প্রাক্তন সৈনিক সেল শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি সমাজে সচেতনতা সৃষ্টির একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছে।
ভুয়ো চাকরি, ক্রিপ্টো ফাঁদ, কম্বোডিয়ায় গ্রেফতার শতাধিক ভারতীয়
তমলুকের নিমতৌড়ি স্মৃতিসৌধে আয়োজিত এই অনুষ্ঠান কার্গিলের বীরদের ত্যাগকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার একটি সফল প্রয়াস। আগামী দিনেও এই ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে দেশের প্রতি ত্যাগ ও নিষ্ঠার বার্তা ছড়িয়ে পড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।