‘রুদ্র’ নামের নতুন অল-আর্মস ব্রিগেড গড়ছে সেনা, জানালেন সেনাপ্রধান

নয়াদিল্লি: কার্গিল বিজয় দিবসের ২৬তম বর্ষপূর্তিতে ‘ভবিষ্যতমুখী বাহিনী’ গড়ার রূপরেখা দিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। শনিবার দ্রাসে আয়োজিত স্মরণসভায় সেনাপ্রধান ঘোষণা করেন, সেনার…

Rudra Brigade Indian Army

নয়াদিল্লি: কার্গিল বিজয় দিবসের ২৬তম বর্ষপূর্তিতে ‘ভবিষ্যতমুখী বাহিনী’ গড়ার রূপরেখা দিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। শনিবার দ্রাসে আয়োজিত স্মরণসভায় সেনাপ্রধান ঘোষণা করেন, সেনার কাঠামোয় আমূল রদবদলের অংশ হিসেবে গঠিত হচ্ছে নতুন “অল-আর্মস ব্রিগেড” , যার নাম ‘রুদ্র’ (Rudra Brigade Indian Army)। এই ব্রিগেডে একত্রে থাকবে ইনফ্যানট্রি, মেকানাইজড ইনফ্যানট্রি, ট্যাঙ্ক ইউনিট, আর্টিলারি, স্পেশাল ফোর্স এবং ইউএভি- সব মিলিয়ে একটি বহুমাত্রিক ও আঘাত-সক্ষম যুদ্ধঘাঁটি, যার পেছনে থাকবে উপযুক্ত লজিস্টিক ও কমব্যাট সাপোর্ট।

সেনাপ্রধান বলেন, ‘‘আমি গতকাল এই রুদ্র ব্রিগেড অনুমোদন করেছি। আজকের ভারতীয় সেনা শুধু বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে না, বরং দ্রুত এগিয়ে চলেছে রূপান্তর, আধুনিকায়ন ও ভবিষ্যতমুখী লড়াইয়ের পথে।’’ সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই দুটি ইনফ্যানট্রি ব্রিগেড রূপান্তরিত হয়েছে রুদ্র ব্রিগেডে। এতদিন আলাদা করে অস্ত্রভিত্তিক (arm-specific) ব্রিগেড থাকলেও, রুদ্র হবে একটি মিশ্র ও সমন্বিত বাহিনী।

   

এর পাশাপাশি আরও একটি বড় ঘোষণা সেনাপ্রধানের, সীমান্তে শত্রু বাহিনীকে মুহূর্তে স্তম্ভিত করতে তৈরি করা হয়েছে নতুন ‘ভৈরব’ লাইট কম্যান্ডো ব্যাটেলিয়ন, সেনাবাহিনীর নতুন স্পেশাল ফোর্স ইউনিট। প্রতিটি ইনফ্যানট্রি ব্যাটেলিয়নে এখন থেকে থাকবে ড্রোন প্লাটুন। আর্টিলারি বিভাগে সংযোজিত হয়েছে ‘দিব্যাস্ত্র ব্যাটারি’ ও লয়টার মিউনিশন ব্যাটারি, যা বহুগুণে বাড়িয়েছে গোলাবর্ষণ ক্ষমতা। সেনার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় যুক্ত হচ্ছে দেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি।

এই রূপান্তরের পেছনে রয়েছে সাম্প্রতিক অপারেশন সিঁদুর, যার উল্লেখ করে জেনারেল দ্বিবেদী স্পষ্ট বার্তা দেন পাকিস্তানকে। ৭ মে-র পহেলগাঁও হামলায় ২৬ জন নিরীহ নাগরিকের মৃত্যুর জবাবে ভারত যে আর শুধু ‘শোকপ্রকাশ’ নয়, ‘সুনির্দিষ্ট প্রতিশোধ’-এর পথ নিয়েছে, সেটাই তুলে ধরেন তিনি। তাঁর কথায়, “এই বার্তা পরিষ্কার, যারা সন্ত্রাসে আশ্রয় দেবে, তারা রেহাই পাবে না।”

Advertisements

জানা গিয়েছে, ৬-৭ মে রাতে ভারতীয় সেনা পিওকে ও পাকিস্তানে ৯টি হাই ভ্যালু টার্গেটে হামলা চালায়, সম্পূর্ণ নির্দোষ নাগরিকদের ক্ষতি না করেই। সেনাপ্রধান বলেন, “আমরা শুধু প্রতিশোধ নিইনি, বরং সামরিক ও কূটনৈতিক ভাবে বার্তা দিয়েছি, ভারতীয় সেনা আজ একটানা, সিদ্ধান্তমূলক ও সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ নিতে সক্ষম, সরকারের পূর্ণ সমর্থন ও দেশের আস্থাকে পাথেয় করে।”

তিনি আরও জানান, ৭ থেকে ৯ মে পর্যন্ত পাকিস্তান সেনার পালটা পদক্ষেপেও ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী মাপা ও নির্ভুল জবাব দেয়। সেনা, নৌ ও বায়ুসেনা একসঙ্গে Whole-of-Nation Approach-এ কাজ করে, ভারতীয় সার্বভৌমত্বে আঘাত হানার চেষ্টা করা যেকোনও শক্তিকে যোগ্য জবাব দেয়।

ভারতীয় সেনার এই নতুন রূপ ও প্রতিশোধমূলক ক্ষমতা ভবিষ্যতের যুদ্ধনীতিতে এক বড় পরিবর্তনের বার্তা বলেই মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা।