নয়াদিল্লি: তেলেঙ্গানায় জাতিগত জনসংখ্যা সমীক্ষা হয়ে গিয়েছে। এবার সেই মডেল ছড়িয়ে পড়বে গোটা দেশে, এই বার্তাই দিলেন রাহুল গান্ধী। দিল্লির টালকাটোরা স্টেডিয়ামে ‘ভাগীদারি ন্যায় সম্মেলনে’ দাঁড়িয়ে তিনি বললেন, ওবিসি-দের বঞ্চনার বিষয়টা তিনি অনেক দেরিতে বুঝেছেন। আগে বুঝলে, অনেক আগেই জাতিগণনা করাতেন। রাহুল বলেন, “এটা কংগ্রেসের ভুল নয়, এটা আমার ব্যক্তিগত ভুল। আমি তা শুধরে নেব৷ (Rahul Gandhi caste census)”
২১ বছরের রাজনৈতিক জীবনে জমি অধিগ্রহণ বিল, এমজিএনরেগা, খাদ্য নিরাপত্তা আইন, আদিবাসীদের অধিকার, এসব নিয়ে লড়াই করেছেন, সেটা স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। তবে এবার বললেন, ওবিসি-দের নিয়ে গভীরভাবে ভাবা হয়নি, সেটাই তাঁর সবচেয়ে বড় ত্রুটি।
তেলেঙ্গানার জনগণনা ‘রাজনৈতিক ভূমিকম্প’,
তেলেঙ্গানার কংগ্রেস সরকার সম্প্রতি জাতিগত সমীক্ষা করেছে। সেই উদ্যোগকে “রাজনৈতিক ভূমিকম্প” বলে বর্ণনা করে রাহুল বলেন, “এই সমীক্ষাই দেখিয়ে দেবে কারা ক্ষমতায় রয়েছে, আর কারা অদৃশ্য। এ যেন গোটা সমাজের এক্স-রে।” তিনি জানান, কংগ্রেস শাসিত সব রাজ্যেই এই সমীক্ষা হবে। জাতীয় স্তরে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের সীমাও তুলে দেওয়া হবে।
“মোদীকে আপনি যতটা গুরুত্ব দেন, তিনি ততটা গুরুত্বপূর্ণ নন”
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সরাসরি নিশানা করে রাহুল বলেন, “আমি ওঁর সঙ্গে কয়েক বার দেখা করেছি। দেখেছি, তিনি শুধু বাহারি শো। ভিতরে কিছুই নেই।” তিনি বলেন, মোদীর আসল সমস্যা নয়, বরং মিডিয়া তাঁর চারপাশে এক কৃত্রিম ভাবমূর্তি তৈরি করেছে।
ওবিসি তরুণদের প্রতি বার্তা: “আপনাদের ইতিহাস লোপ করার চেষ্টা চলছে”
রাহুলের বার্তায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে ওবিসি যুবকদের ভূমিকা। তিনি বলেন, “আরএসএস আপনাদের ইতিহাস মুছে দেওয়ার চেষ্টা করছে। হাজার হাজার বছর ধরে এই প্রক্রিয়া চলে এসেছে। এখন সময় জেগে ওঠার।”
তিনি জানান, তেলেঙ্গানার জনগণনা-তথ্য দেখাচ্ছে— কর্পোরেট স্তরে ওবিসি, দলিত, আদিবাসীদের প্রতিনিধিত্ব নেই বললেই চলে। কিন্তু এমজিএনরেগা, গিগ-ইকোনমির মতো খেটে-খাওয়া স্তরে এই শ্রেণিগুলোই গরিষ্ঠ।
“দেশ গড়ছেন আপনারা, বিনিময়ে কী পাচ্ছেন?”
“আপনারা যাঁরা খাবার উৎপাদন করেন, রাস্তাঘাট বানান, সেবা দেন, আপনারা দেশের মূল শক্তি। তাহলে দেশ আপনাদের কী দিচ্ছে?” এই প্রশ্ন তুলে ওবিসি ভোটারদের আত্মপরিচয় ও অধিকার চেতনায় জোর দিতে চান রাহুল। এদিন সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিদ্দারামাইয়া, গেহলট, ভূপেশ বাঘেল, সচিন পাইলট-সহ একাধিক শীর্ষ কংগ্রেস নেতা।