গণতান্ত্রিক নেতাদের জনপ্রিয়তায় ফের শীর্ষে মোদী, প্রথম পাঁচেও নেই ট্রাম্প

নয়াদিল্লি: বিশ্ব রাজনীতিতে ফের উজ্জ্বল ভারতের মুখ। আমেরিকান গবেষণা সংস্থা মর্নিং কনসাল্ট-এর সাম্প্রতিকতম সমীক্ষায় ফের বিশ্বের সর্বাধিক জনপ্রিয় গণতান্ত্রিক নেতা হিসেবে শীর্ষস্থান অধিকার করলেন প্রধানমন্ত্রী…

modi most popular leader in world

নয়াদিল্লি: বিশ্ব রাজনীতিতে ফের উজ্জ্বল ভারতের মুখ। আমেরিকান গবেষণা সংস্থা মর্নিং কনসাল্ট-এর সাম্প্রতিকতম সমীক্ষায় ফের বিশ্বের সর্বাধিক জনপ্রিয় গণতান্ত্রিক নেতা হিসেবে শীর্ষস্থান অধিকার করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (modi most popular leader in world)। ২০২৫ সালের জুলাই মাসে করা এই সমীক্ষায় মোদীর গ্লোবাল অ্যাপ্রুভাল রেটিং ৭৫ শতাংশ, যা তাঁকে বিশ্বের অন্যান্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রনায়কদের তুলনায় অনেক এগিয়ে রেখেছে।

এই সমীক্ষায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং, যার জনপ্রিয়তা ৫৯ শতাংশ। উল্লেখযোগ্যভাবে, সদ্য দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্টের আসনে ফিরে আসা ডোনাল্ড ট্রাম্প তালিকায় অষ্টম স্থানে, জনপ্রিয়তা মাত্র ৪৪ শতাংশ।

   

বিশ্বজনীন সমর্থনের ছাপ

মর্নিং কনসাল্টের সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রতি চার জনে তিন জন নাগরিক মোদীর নেতৃত্বে আস্থা রাখছেন। মাত্র ১৮ শতাংশ নেতিবাচক মত পোষণ করেছেন এবং ৭ শতাংশের কোনও মত নেই। এ পরিসংখ্যান স্পষ্টভাবে দেখাচ্ছে, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃতীয়বার জয় পাওয়ার পরেও দেশে ও বিদেশে মোদীর গ্রহণযোগ্যতা আগের চেয়েও দৃঢ় হয়েছে।

বিজেপির প্রতিক্রিয়া

সমীক্ষার ফল সামনে আসতেই তা নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। দলের আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, “ভারতের একশো কোটির ভালোবাসায় মোদীজির জনপ্রিয়তা অটুট। আবারও বিশ্বের সর্বাধিক জনপ্রিয় ও আস্থাভাজন নেতা নির্বাচিত হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।”

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালও টুইট করে লেখেন, “বিশ্বমঞ্চে মোদীজির নেতৃত্ব ভারতকে গৌরবের আসনে বসিয়েছে। তাঁর দৃঢ়তা, দৃষ্টিভঙ্গি ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ভারতকে বিশ্বরাজনীতিতে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিচ্ছে।”

Advertisements

বিশ্লেষণ ও রাজনৈতিক তাৎপর্য

বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন, নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন এবং অভ্যন্তরীণ বিভাজনের আবহে মোদীর এই আন্তর্জাতিক জনপ্রিয়তা শুধু ভারতীয় রাজনীতির জন্য নয়, দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত পরিসরের দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। আন্তর্জাতিক কূটনীতির ক্ষেত্রে যেখানে চীন-যুক্তরাষ্ট্র দ্বৈরথ স্পষ্ট, সেখানে ভারতের ‘সতর্ক ও ভারসাম্যপূর্ণ নেতৃত্ব’কে আশাবাদী চোখে দেখছে অনেক দেশ।

শীর্ষ দশে আরও যাঁরা

তালিকার তৃতীয় স্থানে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মিলেই (৫৭%), চতুর্থ স্থানে কানাডার মার্ক কার্নি (৫৬%) এবং পঞ্চম স্থানে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার অ্যান্থনি অ্যালবানিজ (৫৪%)। মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাম (৫৩%) এবং সুইজারল্যান্ডের কারিন কেলার-সুটার (৪৮%) ষষ্ঠ ও সপ্তম স্থানে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঠিক পরেই রয়েছেন পোল্যান্ডের ডোনাল্ড টাস্ক (৪১%) এবং ইতালির জর্জিয়া মেলোনি (৪০%)।

সমীক্ষা পদ্ধতি ও গ্রহণযোগ্যতা

মর্নিং কনসাল্ট সংস্থাটি প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের মতামত নিয়ে সাত দিনের রোলিং অ্যাভারেজ ভিত্তিতে এই রেটিং তৈরি করে। এতে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক দেশ থেকেই পূর্ণবয়স্ক নাগরিকদের মতামত নেওয়া হয়। এই সমীক্ষা বর্তমান বৈশ্বিক জনমত ও নেতৃত্বের প্রতি আস্থার একটি স্পষ্ট প্রতিফলন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।