চায়ের কাপেই সই হল ইতিহাস! মোদী–স্টারমার সাক্ষাতে ভাইরাল প্রবাসী চা-উদ্যোক্তা

লন্ডন: চা শুধু একটা পানীয় নয়, এক একটি সংস্কৃতির প্রতীক। ব্রিটেনের দীর্ঘদিনের চা-প্রীতি আর ভারতের ‘চায়েওয়ালা’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ব্যক্তিগত ইতিহাস, এই দুই সত্তার সংযোগ…

India UK FTA Tea

লন্ডন: চা শুধু একটা পানীয় নয়, এক একটি সংস্কৃতির প্রতীক। ব্রিটেনের দীর্ঘদিনের চা-প্রীতি আর ভারতের ‘চায়েওয়ালা’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ব্যক্তিগত ইতিহাস, এই দুই সত্তার সংযোগ যেন এক অনন্য মুহূর্ত সৃষ্টি হল চেকার্সে৷ তাও আবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সরকারিভবনে। ভারতের সঙ্গে ব্রিটেনের বহুল প্রতীক্ষিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (FTA) সাক্ষরিত হল। তবে রাজনৈতিক চুক্তির চেয়েও অনেক বেশি আলোচিত হল সেই একটি কাপ চা, যা দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আলাপনের মাধ্যম হয়ে উঠল, এবং যার উৎস এক প্রবাসী ভারতীয় চা-উদ্যোক্তার হাতে (India UK FTA Tea)।

চেকার্সের সবুজ লনে সেদিন স্থাপন করা হয়েছিল একটি ছোট চায়ের স্টল। উদ্যোক্তা অখিল পটেল, ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ‘Amala Chai’, লন্ডনভিত্তিক এক ব্র্যান্ড, যার প্রতিটি চায়ে মিশে থাকে ভারতের মাটি ও মশলার সুবাস। এদিন রঙিন নেহরু কোটে সজ্জিত পটেল দুই রাষ্ট্রনায়কের সামনে নিজেকে তুলে ধরেন গর্বের সঙ্গে: “চা ভারতে উৎপন্ন, কিন্তু বানানো হয়েছে লন্ডনে।”

   

তিনি ব্যাখ্যা করেন, “মসলা চা, ভারতে উৎপন্ন। চা এসেছে আসাম থেকে, মশলা এসেছে কেরল থেকে।” এরপর যথাযোগ্য আতিথেয়তার সঙ্গে তিনি এক কাপ চা তুলে দেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের হাতে। তারপর, আর একটি কাপ বাড়িয়ে দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দিকে। আর ঠিক তখনই সেই উক্তি—যা মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে ওঠে, “একজন চায়েওয়ালা থেকে আরেকজন চায়েওয়ালার উদ্দেশে।”

উক্তিটি শুনে প্রধানমন্ত্রী মোদী হেসে ওঠেন, সম্মতির ভঙ্গিতে মাথা নাড়েন। শুধু রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, মানবিক এই দৃশ্য মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। পরে প্রধানমন্ত্রী মোদী নিজেও সেই ছবি শেয়ার করে লেখেন:
“চেকার্সে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে ‘চায় পে চর্চা’… গাঢ় হচ্ছে ভারত–ব্রিটেন সম্পর্ক!”

Advertisements

অন্যদিকে, পটেল নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলে একটি ভিডিও শেয়ার করে লেখেন:
“একটা একেবারে সাধারণ বৃহস্পতিবার, যেখানে আমি চা পরিবেশন করলাম নরেন্দ্র মোদী এবং কিয়ার স্টারমারের জন্য। কী অবিশ্বাস্য এক দিন! সম্মানিত বোধ করছি। কিছু অনুপ্রেরণাদায়ক কথা, কিছু মুহূর্ত যা সারাজীবন মনে থাকবে।”

এই মুহূর্ত শুধু একটি ‘চায়ের ছবি’ নয়, বরং তা হয়ে উঠল সংস্কৃতি, আত্মপরিচয় ও কূটনৈতিক সম্পর্কের এক উষ্ণ প্রতীক। যেখানে ইতিহাসের পাতায় লেখা হল এক নতুন অধ্যায়—চায়ের কাপে।