২১ জুলাই ধর্মতলার শহিদ দিবসের সভায় একদিকে যখন তৃণমূলের প্রথম সারির নেতাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো, ঠিক তেমনই চমক ছিল টলিউড তারকাদের (Actresses) অংশগ্রহণে। আর সেই মঞ্চেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন করলেন বাংলা বিনোদন জগতের দুই জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় ও রূপাঞ্জনা মিত্র।
এদিন সকাল থেকেই ধর্মতলার চারপাশে উৎসবের চেহারা। দুপুর ১২টার আগেই মঞ্চের সামনে হাজির হন তৃণমূলের হুগলির সাংসদ এবং অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। সবুজ ফুলের কাজ করা ছাইরঙা শাড়ি পরে অপেক্ষায় ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রচনা বলেন, “বাংলায় কথা বললেই যদি ধরে নিয়ে যাওয়া হয়, তবে আমাকেও নিয়ে যান। আমি বলব, বাঙালি এর জবাব দেবে।”
রূপাঞ্জনা মিত্র, যিনি একসময় বিজেপির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, এদিন নিজের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত স্পষ্ট করেন। বলেন, ‘‘অনেকদিন পর ঘরে ফিরে ভালো লাগছে। বিনোদন দুনিয়া বরাবরই ‘দিদি’র পাশে থেকেছে।’’ অন্যদিকে অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, যিনি আগের বছর ছিলেন বিজেপির মঞ্চে, এবার মুখ্যমন্ত্রীর হাত শক্ত করতে ফের ঘাসফুলে ফিরলেন। তাঁকে দেখা গেল হাসিমুখে মঞ্চের সামনে।
শুধু রূপাঞ্জনা ও শ্রাবন্তীই নন, এদিন শহিদ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন টলিউডের একাধিক জনপ্রিয় মুখ। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সায়নী ঘোষ, সৌমিতৃষা কুণ্ডু, লাভলী মৈত্র, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবলীনা কুমার, তৃণা সাহা, রণিতা দাস, রিমঝিম মিত্র, সুভদ্রা মুখোপাধ্যায়, তিয়াশা লেপচা, সৌরভ চট্টোপাধ্যায়, কাঞ্চন মল্লিক, ভরত কল, দিগন্ত বাগচী, সৌপ্তিক, রিজওয়ান, পিয়া সেনগুপ্ত প্রমুখ।
পরিচালক অরিন্দম শীল এবং অভিনেত্রী সোমা চক্রবর্তী কালো পোশাকে আসেন, যা তাদের অবস্থান ও প্রতিবাদের বার্তাই দেয়। কেউ সাদা, কেউ সবুজ, কেউ আবার প্যাস্টেল শেডে আসেন শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে। অভিনেত্রী সৌমিতৃষা বলেন, ‘‘দিদি যখনই ডেকেছেন, এসেছি। শরীর ভালো না থাকলেও এসেছি।’’ তাঁর ব্যাগে নাকি ছিল ওষুধও।
টলিউড ছাড়াও ক্রীড়াজগতের একাধিক ব্যক্তিত্ব উপস্থিত ছিলেন সভামঞ্চে। গায়ক সৌমিত্র রায়, নচিকেতা চক্রবর্তী, সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায়, শান্তনু রায়চৌধুরী-র পরিবেশনায় শহিদ দিবসের এই অনুষ্ঠান হয়ে ওঠে আরও আবেগঘন।
সব মিলিয়ে একুশের এই শহিদ দিবস মঞ্চ যেন রাজনৈতিক বার্তার সঙ্গে এক সাংস্কৃতিক ঐক্যবদ্ধতার প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠল। ‘দিদি’র আহ্বানে টলিউড যে বরাবরের মতো পাশে রয়েছে, তা প্রমাণ করল রবিবারের শহিদ মঞ্চ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৬-এর আগে এই তারকা উপস্থিতি তৃণমূলের বার্তা ও ভাবমূর্তিকে আরও মজবুত করবে।