মঞ্চে দাঁড়িয়ে দিল্লির উদ্দেশে বার্তা, বিজেপি হঠানোর ডাক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

কলকাতা: একুশে জুলাই শহিদ দিবসের সভায় মঞ্চ থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এবারের বক্তব্যে…

Mamata Banerjee Shahid Diwas

কলকাতা: একুশে জুলাই শহিদ দিবসের সভায় মঞ্চ থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এবারের বক্তব্যে তিনি শুধুমাত্র রাজ্য রাজনীতি নয়, সরাসরি দিল্লির দিকে তির ছুঁড়ে বলেন, “এই সংগ্রাম সে দিনই শেষ হবে, যেদিন দিল্লিতে রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটিয়ে বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারব।”

তাঁর এই মন্তব্যে স্পষ্ট হয়ে গেল, ২০২৬ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন নয়, বরং ২০২৯ সালের লোকসভা নির্বাচনই এখন তাঁর প্রধান লক্ষ্য। নেত্রী বলেন, “আমাদের লড়াই শুধু বাংলার জন্য নয়। ভারতের গণতন্ত্রকে বাঁচানোর জন্য। বিজেপি ধর্মের নামে মানুষকে ভাগ করছে, সংবিধান ধ্বংস করছে।”

   

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, “২০১৪ সালে মানুষ বিশ্বাস করেছিল পরিবর্তনের। কিন্তু তারা ভুল বুঝেছিল। মোদী সরকারের দশ বছরে মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, কৃষক আত্মহত্যা বেড়েছে। এখন NRC, CAA-এর নামে বিভাজন চালাচ্ছে।”

তিনি বলেন, “আমরা চাই নতুন ভারত, যেখানে শান্তি থাকবে, সাম্প্রদায়িকতা নয়। আমরা চাই এমন সরকার, যারা মানুষের পাশে দাঁড়াবে, শুধু নির্বাচনের সময়ে নয়।”

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED) এবং সিবিআই-এর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তাঁর অভিযোগ, “বিজেপির বিরোধিতা করলেই সিবিআই পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু বিজেপির নেতারা কোটি কোটি টাকা লুট করলেও তাদের ধরা হয় না।”

Advertisements

তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের তিনি আহ্বান জানান, “তোমরা প্রত্যেকটা ওয়ার্ডে, গ্রামে, শহরে মানুষের কাছে যাও। বুঝিয়ে বলো বিজেপি কীভাবে মানুষকে ঠকিয়েছে। শুধু মিছিল নয়, দরজায় দরজায় গিয়ে রাজনৈতিক শিক্ষা দাও।”

তিনি আরও বলেন, “বিজেপি কোটি কোটি টাকার প্রচার চালাবে, মিডিয়া কিনে নেবে। কিন্তু মানুষের হৃদয় কিনতে পারবে না। সত্যিকারের শক্তি মানুষের ভালোবাসা।”

মঞ্চ থেকেই ঘোষণা করেন, “আগামী লোকসভা নির্বাচনেই দিল্লির দরজা খুলে যাবে। বিজেপিকে হারাতে হবে। আমি দিল্লিতে গিয়ে ক্ষমতা দখলের জন্য লড়ব না, দেশের মানুষের জন্য লড়ব।” তিনি আরও যোগ করেন, “একতা, সম্মান ও ন্যায়বিচার—এই তিনটি হবে আগামী দিনের ভারত নির্মাণের মূল ভিত্তি।”

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একুশে জুলাইয়ের বক্তব্য ছিল অত্যন্ত রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি যেন বার্তা দিলেন, রাজ্য রাজনীতি এখন দ্বিতীয় সারিতে। এবার লক্ষ্য দিল্লি, আর সেই পথেই তিনি চান বিজেপিকে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করতে।