২১ জুলাই শহিদ দিবস ঘিরে কলকাতায় কড়া ট্র্যাফিক নজরদারিতে তৎপর কলকাতা পুলিশ

কলকাতা: সোমবার, ২১ জুলাই—তৃণমূল কংগ্রেসের বার্ষিক শহিদ দিবস। এই দিনটিকে কেন্দ্র করে কলকাতায় হাজার হাজার তৃণমূল কর্মী-সমর্থক ভিড় করবেন ধর্মতলায়। রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বাস,…

Clashes Erupt at Jadavpur 8B Bus Stand on India Bandh Day, Tensions Escalate

কলকাতা: সোমবার, ২১ জুলাই—তৃণমূল কংগ্রেসের বার্ষিক শহিদ দিবস। এই দিনটিকে কেন্দ্র করে কলকাতায় হাজার হাজার তৃণমূল কর্মী-সমর্থক ভিড় করবেন ধর্মতলায়। রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বাস, মিছিল, ছোট গাড়ি এবং ট্রেনে করে ধর্মতলায় পৌঁছানোর চেষ্টা করবেন কর্মীরা। ফলে সোমবার, সপ্তাহের প্রথম দিন হওয়ায় সাধারণ নিত্যযাত্রীদের জন্য রাস্তায় ব্যাপক ভোগান্তির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সেই ভোগান্তি রুখতেই রাস্তাঘাটে নেমে যান নিয়ন্ত্রণে প্রস্তুতি শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)।

কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ ভার্মা নিজে রাস্তায় নেমে যানবাহনের গতি, মিছিলের রুট, ঘুরপথ ও বিকল্প ব্যবস্থাগুলি খতিয়ে দেখেছেন। তাঁর সঙ্গে ব্যারাকপুর কমিশনারেট ও বিধাননগর কমিশনারেটের শীর্ষ আধিকারিকরাও যুক্ত ছিলেন এই প্রস্তুতিতে।

   

সোমবার সকালে সিঁথি মোড়ে যান পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন সিপি মনোজ ভার্মা। সেখানে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মুরলী ধর। উত্তর ২৪ পরগণা থেকে আসা মিছিল, বিশেষ করে ব্যারাকপুর, বেলঘরিয়া, বরানগর এলাকা থেকে আসা গাড়িগুলি কীভাবে ধর্মতলার দিকে যাবে, কোন কোন বিকল্প রুট ব্যবহার করবে, তা নিয়ে দু’জনের মধ্যে আলোচনা হয়।

তাদের মূল লক্ষ্য ছিল—যাতে শহরের প্রধান রাস্তাগুলি পুরোপুরি অচল না হয়ে যায় এবং অফিস টাইমে যাতায়াত করতে পারা যায়। কারণ এই রুটগুলির উপরেই কলকাতার এক বড় অংশের অফিসগামী মানুষের দৈনন্দিন যাতায়াত নির্ভর করে।

এরপর হাডকো মোড়ে যান পুলিশ কমিশনার। সেখানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিধাননগর কমিশনারেটের উচ্চপদস্থ এক আধিকারিক। বিধাননগর, কাঁকুড়গাছি, দমদম, লেকটাউন, সল্টলেক অঞ্চল থেকে মিছিল কবে ও কোন রাস্তা দিয়ে ঢুকবে, তা নিয়ে পরিকল্পনা হয়। এই রাস্তাগুলিতে অফিস টাইমে ভীষণ চাপ থাকে, তাই সঠিক সময় এবং পথ নির্ধারণে গুরুত্ব দিচ্ছে পুলিশ।

Advertisements

সবশেষে সিপি যান চিংড়িঘাটা ক্রসিংয়ে। ইএম বাইপাস থেকে আসা গাড়িগুলির গতি নিয়ন্ত্রণ এবং মিছিলগুলির সঙ্গে সাধারণ ট্র্যাফিক যাতে মিশে না যায়, সেদিকে বিশেষ নজর দেন তিনি। অফিস টাইমে গাড়ি চলাচল যাতে নিয়ন্ত্রিত থাকে, তার জন্য ট্রাফিক পুলিশের বাড়তি বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, ২১ জুলাই শহরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ রুটে ট্র্যাফিক ডাইভারশন থাকবে। কোথাও কোথাও রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ রাখা হতে পারে কিছু নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। নাগরিকদের সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যে ৭টা পর্যন্ত অপ্রয়োজনীয় যাতায়াত এড়াতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে গুগল ম্যাপ ও কোলকাতা পুলিশের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে নজর রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

২১ জুলাই শহিদ দিবস উপলক্ষে তৃণমূল কংগ্রেসের ধর্মতলা সমাবেশ ঘিরে গোটা কলকাতা কার্যত জর্জরিত হতে চলেছে রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং ট্র্যাফিক চাপে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মনোজ ভার্মার নেতৃত্বে কলকাতা পুলিশ আগে থেকেই মাঠে নেমেছে। এখন দেখার, সোমবার শহরবাসী কতটা স্বস্তিতে থাকতে পারেন এই বড় রাজনৈতিক জমায়েতের দিনে।