ITR যাচাইয়ের আগে জেনে নিন এই ৫টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

নয়া করদাতাদের সবচেয়ে বড় ভুল অনেক নতুন করদাতা মনে করেন যে আয়কর রিটার্ন (ITR) জমা দিলেই কাজ শেষ। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। আসলে, আয়কর…

ITR Filing for Freelancers & Gig Workers: Forms, Deductions, and Required Documents for 2025

নয়া করদাতাদের সবচেয়ে বড় ভুল অনেক নতুন করদাতা মনে করেন যে আয়কর রিটার্ন (ITR) জমা দিলেই কাজ শেষ। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। আসলে, আয়কর রিটার্ন ফাইল করার পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো সেটিকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যাচাই বা ই-ভেরিফিকেশন করা। যদি আপনি এটি না করেন, তবে আপনার রিটার্ন অবৈধ বলে গণ্য করা হবে এবং সেই অনুযায়ী সমস্যা হতে পারে।
বর্তমানে আয়কর দপ্তর বেশ কয়েকটি সহজ উপায়ে ই-ভেরিফিকেশন করার সুযোগ দিচ্ছে, যা আপনি ঘরে বসেই করতে পারেন।

কীভাবে আপনি ই-ভেরিফিকেশন করবেন?
আপনার ITR জমা দেওয়ার পরে সেটিকে ই-ভেরিফাই করতে পারেন নিচের যে কোনো একটি পদ্ধতিতে:
১. আধার OTP ব্যবহার করে
এই পদ্ধতিতে, আপনার আধার লিঙ্কড মোবাইল নম্বরে একটি OTP পাঠানো হবে। সেটি ব্যবহার করে আপনি তাৎক্ষণিকভাবে ই-ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করতে পারবেন।
> শর্ত: আপনার মোবাইল নম্বর অবশ্যই আধারের সাথে লিঙ্ক থাকতে হবে।
২. নেট ব্যাংকিং ব্যবহার করে
আপনার ব্যাঙ্কের নেট ব্যাংকিং পোর্টালে লগ ইন করুন। সেখানে আয়কর বা ITR সেকশনে গিয়ে ‘e-Verify’ অপশনটি বেছে নিন।
৩. ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বা ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট থেকে EVC
আপনার প্রি-ভ্যালিডেটেড ব্যাঙ্ক বা ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট থেকে একটি Electronic Verification Code (EVC) তৈরি করুন এবং সেটি ব্যবহার করে ই-ভেরিফিকেশন করুন।
৪. এটিএম-এর মাধ্যমে (অফলাইন পদ্ধতি)
কিছু ব্যাঙ্ক তাদের ATM-এ EVC জেনারেট করার সুবিধা দেয়। আপনি ATM ব্যবহার করে EVC তৈরি করে পরে ই-ভেরিফিকেশন করতে পারেন।
৫. ডিজিটাল সিগনেচার সার্টিফিকেট (DSC)
এটি মূলত ব্যবসায়ী বা পেশাদারদের জন্য। যদি আপনার DSC আগে থেকে রেজিস্টার করা থাকে, তবে সেটি ব্যবহার করে ই-ভেরিফিকেশন করা যায়।

   

৩০ দিনের মধ্যে ই-ভেরিফিকেশন না করলে কী হবে?
২০২২ সালের ১ আগস্ট থেকে নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ITR জমা দেওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে ই-ভেরিফিকেশন করতেই হবে। এই সময়ের মধ্যে যদি যাচাই না করেন, তাহলে আপনার রিটার্ন “Invalid” বা অকার্যকর বলে গণ্য হবে।

এক্ষেত্রে আপনাকে করতে হবে:
Condonation Request জমা দিতে হবে আয়কর পোর্টালে
দেরির একটি বৈধ কারণ জানাতে হবে
আয়কর দপ্তরের অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে
অনুমোদন পেলে তবেই আপনার রিটার্ন সঠিকভাবে জমা ও যাচাই হয়েছে বলে ধরা হবে।

Advertisements

অন্য কেউ আপনার হয়ে ই-ভেরিফিকেশন করতে পারে?
হ্যাঁ। যদি আপনি নিজে ই-ভেরিফিকেশন করতে না পারেন, তাহলে আপনার Authorized Signatory বা Representative Assessee আপনার হয়ে ই-ভেরিফিকেশন করতে পারেন। তাঁরা নিচের পদ্ধতিগুলি ব্যবহার করতে পারেন:
তাদের আধার OTP
নেট ব্যাংকিং
প্রি-ভ্যালিডেটেড ব্যাঙ্ক বা ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট
কিভাবে বুঝবেন আপনার রিটার্ন যাচাই হয়ে গেছে?
যখন আপনার ই-ভেরিফিকেশন সফল হবে, তখন:
একটি সফলতার মেসেজ ও ট্রানজ্যাকশন আইডি স্ক্রিনে দেখা যাবে
আপনার নথিভুক্ত ইমেইল আইডিতে একটি কনফার্মেশন ইমেইল পাঠানো হবে
যদি কেউ আপনার হয়ে যাচাই করে, তাহলে আপনি ও সেই ব্যক্তি উভয়েই ইমেইল পাবেন

ই-ভেরিফিকেশনের আগে ৫টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
1. ৩০ দিনের সময়সীমা: ১ আগস্ট ২০২২ থেকে প্রযোজ্য এই নিয়ম অনুযায়ী, রিটার্ন জমার পর ৩০ দিনের মধ্যে যাচাই করতে হবে।
2. আধার OTP পেতে মোবাইল লিঙ্ক থাকা জরুরি: আধার OTP ব্যবহার করতে চাইলে অবশ্যই আপনার মোবাইল নম্বরটি আধারের সাথে সংযুক্ত থাকতে হবে।
3. ব্যাঙ্ক/ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট অ্যাকটিভ ও ভ্যালিডেটেড থাকতে হবে: নিষ্ক্রিয় বা অপ্রমাণিত অ্যাকাউন্ট থেকে EVC তৈরি সম্ভব নয়।
4. সময়মতো যাচাই না করলে জরিমানা: সময়মতো যাচাই না করলে রিটার্ন অবৈধ হিসেবে গণ্য হয়, যার ফলে জরিমানার মুখে পড়তে হতে পারে।
5. ই-ভেরিফাই করলেই আর ITR-V পাঠাতে হবে না: আগে যেখানে CPC, বেঙ্গালুরু-তে ITR-V ফর্ম ডাকযোগে পাঠাতে হতো, এখন ই-ভেরিফাই করলে সেটির আর প্রয়োজন নেই।

ITR ফাইল করা মানেই দায় শেষ নয়। ই-ভেরিফিকেশন একটি বাধ্যতামূলক এবং গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, যা ৩০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। এই প্রক্রিয়া না করলে আপনার ITR অকার্যকর হিসেবে বিবেচিত হবে এবং ভবিষ্যতে আইনি জটিলতা বা জরিমানা হতে পারে।
তাই সময় থাকতে নিজে বা আপনার প্রতিনিধির মাধ্যমে ই-ভেরিফিকেশন করুন এবং নিশ্চিত করুন যে আপনার কর সংক্রান্ত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করা হয়েছে।