প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর আসন্ন সফরে পশ্চিমবঙ্গবাসীর জন্য একগুচ্ছ উন্নয়ন প্রকল্পের উপহার নিয়ে আসছেন। প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পগুলির মাধ্যমে রাজ্যের একাধিক জেলা যেমন বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, হুগলি, বর্ধমান, নদিয়া ও দুর্গাপুর উল্লেখযোগ্যভাবে উপকৃত হবে।
বিশেষত পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস খাতে মোদী সরকারের পক্ষ থেকে এবার উল্লেখযোগ্য বরাদ্দ হতে চলেছে। প্রায় ১,৯৫০ কোটি টাকার বেশি মূল্যের প্রকল্পে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেড (BPCL)-এর সিটি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন (CGD) প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রকল্পটি মূলত বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার সাধারণ মানুষের জন্য স্বল্পমূল্যে রান্নার গ্যাস ও পরিবহণ ব্যবস্থায় জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করবে।
এছাড়াও, প্রধানমন্ত্রী উর্জা যোজনার আওতায় দুর্গাপুর থেকে কলকাতা পর্যন্ত ১৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রাকৃতিক গ্যাসের পাইপলাইন প্রকল্পেরও উদ্বোধন করবেন মোদী। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই গ্যাস পাইপলাইন পূর্ব বর্ধমান, হুগলি ও নদিয়া জেলার মধ্য দিয়ে গিয়েছে। এই প্রকল্পের জন্য ব্যয় হয়েছে অতিরিক্ত ১,১৯০ কোটি টাকা। ফলে এই জেলাগুলিতে গ্যাসভিত্তিক শিল্প ও ঘরোয়া জ্বালানির সহজলভ্যতা অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শুধু জ্বালানি নয়, পরিবেশবান্ধব শক্তি উৎপাদনের দিকে নজর দিচ্ছে কেন্দ্র। এই উদ্দেশ্যে দুর্গাপুর এবং রঘুনাথপুরের দুটি থার্মাল পাওয়ার স্টেশনে বিশেষ পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি সংযোজনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের জন্য ১,৪৫৭ কোটি টাকার বাজেট ধরা হয়েছে। এর ফলে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের সময় কার্বন নির্গমন অনেকটাই কমে আসবে এবং পরিবেশে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
শিল্পাঞ্চল ও শহরের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে রেলখাতে একাধিক প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরেই শিলান্যাস হতে চলেছে পুরুলিয়া-কোটশিলা ৩৬ কিলোমিটার দীর্ঘ রেললাইন প্রকল্পের, যার মোট ব্যয় ৩৯০ কোটি টাকা। এই নতুন রেল সংযোগ রাঁচি ও কলকাতাকে সরাসরি যুক্ত করবে জামশেদপুর, বোকারো ও ধানবাদের মতো গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে। এই রুটের ফলে পণ্য পরিবহণ যেমন সহজ হবে, তেমনই যাত্রীদের যাতায়াতও অনেক দ্রুত ও সুবিধাজনক হয়ে উঠবে।
প্রধানমন্ত্রীর এই সফর পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন যাত্রায় এক নতুন দিক উন্মোচন করবে বলে আশা করছে কেন্দ্র। শিল্প ও পরিকাঠামোর জোরদার উন্নয়ন একদিকে যেমন কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করবে, তেমনই জ্বালানি ও পরিবেশ খাতে টেকসই উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে।
