Nimisha Priya: ফাঁসির মঞ্চে জঙ্গি জহ্লাদের হাসি, নিমিষাকে বাঁচাতে কূটনৈতিক যুদ্ধে ভারত

ইয়েমেনে হুথি জঙ্গিদের সরকারের জগ্লাদ তৈরি আছে। নির্দেশ এলেই সে হাসতে হাসতে ভারতীয় নার্স নিমিষার গলায় ফঁসির দড়ি পরিয়ে দেবে। খুনের অভিযোগে দোষী প্রমাণিত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত…

India on Nimisha Priya case

ইয়েমেনে হুথি জঙ্গিদের সরকারের জগ্লাদ তৈরি আছে। নির্দেশ এলেই সে হাসতে হাসতে ভারতীয় নার্স নিমিষার গলায় ফঁসির দড়ি পরিয়ে দেবে। খুনের অভিযোগে দোষী প্রমাণিত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নার্স নিমিশা প্রিয়া। তাকে বাঁচাতে আরব দুনিয়ার একাধিক বন্ধুসুলভ দেশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে ভারত সরকার।

বিদেশ মন্ত্রক মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, সরকার প্রিয়ার পরিবারকে কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় আইনি সহায়তা দিয়েছে। তিনি বলেন, “এটি একটি সংবেদনশীল বিষয় এবং ভারত সরকার এই মামলায় সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা প্রদান করে আসছে। আমরা আইনি সহায়তা দিয়েছি এবং একটি আইনজীবী নিয়োগ করেছি, যিনি পরিবারের পাশে রয়েছেন। নিয়মিত কনসুলার পরিদর্শনের ব্যবস্থাও করেছি এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।”

   

তিনি আরও জানান,“সাম্প্রতিক দিনে বিশেষভাবে চেষ্টা করা হয়েছে যাতে পরিবারের সদস্যরা নিহতের পরিবারের সঙ্গে একটি পারস্পরিক গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছাতে পারেন। ইয়েমেনের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ১৬ জুলাই হওয়ার কথা থাকা মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত করেছে। আমরা বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়ে চলেছি। কয়েকটি বন্ধুরাষ্ট্রের সঙ্গেও আমাদের যোগাযোগ রয়েছে।”

নিমিশা প্রিয়া কেরলের পালক্কাড জেলার বাসিন্দা। তিনি এক ইয়েমেনি নাগরিক তালাল আব্দো মেহদিকে মাদক দিয়ে হত্যা করার অভিযোগে ২০১৭ সালে অভিযুক্ত হন।
তিনি আরেকজন নার্সের সাহায্যে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। তবে তিনি এই অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং আত্মরক্ষায় কাজটি করেছেন বলে দাবি করেন। তাঁর দাবি অনুযায়ী, মেহদি তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন, তার পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেন

নিমিষা জানান, পাসপোর্ট ফেরত পাওয়ার উদ্দেশ্যে তিনি মেহদিকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ান, কিন্তু তাতে তিনি অতিরিক্ত মাত্রায় ওষুধ সেবনে মারা যান।

Advertisements

নিমিষা প্রিয়া ইয়েমেনে ২০০৮ সাল থেকে নার্স হিসেবে কাজ করছেন। ২০১১ সালে তিনি তাঁর স্বামী টমি থমাসের সঙ্গে সেখানে যান। ২০১৪ সালে ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধ শুরু হলে তাঁর স্বামী ও কন্যা সন্তান ভারত্ ফিরে আসেন, কিন্তু প্রিয়া সেখানে থেকে যান।

পরে নিমিষা প্রিয়া এক ইয়েমেনি মেহদির সঙ্গে যৌথভাবে একটি নার্সিং হোম চালু করেন। এরপর তাদের মধ্যে ব্যবসায়িক বিষয়ে বিতর্ক হয়। তার জেরে মেহেদির অস্বাভাবিক মৃত্যু। তদন্তে নিমিষা দোষী প্রমাণিত হন।২০২০ সালে ইয়েমেনের একটি স্থানীয় আদালত তাঁকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে। এরপর তাঁর সব ধরনের আইনি আপিল খারিজ হয়ে যায়। ২০২৩ সালে ইয়েমেনের সুপ্রিম কোর্টও তাঁর আপিল বাতিল করে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে হুতি গোষ্ঠীর শাসক মাহদি আল-মাশাত মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের অনুমোদন দেন।

তিনি বর্তমানে ইয়েমেনের রাজধানী সানা শহরের সেন্ট্রাল জেলে বন্দি আছেন। তাঁর মৃত্যুদণ্ড ১৬ জুলাই কার্যকর হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ভারতের কূটনৈতিক তৎপরতার ফলে তা আপাতত স্থগিত হয়েছে।

ইয়েমেনে ইসলামি আইন চলে। এই নিয়মে রক্তের মূল্য অর্থাৎ নিহতের পরিবার আর্থিক ক্ষতিপূরণ নিলে ফাঁসি রদ হতে পারে। তবে নিহত তালাল মেহদির পরিবার পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে তারা ক্ষমা বা আর্থিক ক্ষতিপূরণ কিছুই গ্রহণ করবে না এবং নিমিশা প্রিয়াকে অবশ্যই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া উচিত।