রোহিঙ্গা-বাংলাদেশী ইস্যুতে ঢাকছে পহেলগাঁওয়ের ব্যার্থতা, মত ওয়াইসির

এআইএমআইএম (অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন) সভাপতি আসাদুদ্দিন ওয়াইসি(Owaisi) পহেলগাঁওয়ে ঘটে যাওয়া জঙ্গি হামলার ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যর্থতা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন,…

Owaisi asks question about pahalgam attack

এআইএমআইএম (অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন) সভাপতি আসাদুদ্দিন ওয়াইসি(Owaisi) পহেলগাঁওয়ে ঘটে যাওয়া জঙ্গি হামলার ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যর্থতা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, পাকিস্তান থেকে আগত চারজন জঙ্গি জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ২৬ জন নিরীহ হিন্দু নাগরিকের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।

এই ঘটনার পর তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রশ্ন তুলেছেন, যদি আপনারা (কেন্দ্রীয় সরকার) বিহারে রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশীদের উপস্থিতি সম্পর্কে জানেন, তাহলে চারজন জঙ্গি কীভাবে পহেলগাঁওয়ে ঢুকল?” তিনি আরও দাবি করেছেন, বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের সময় রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশীদের ইস্যু উত্থাপন করে সরকার জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে সরাচ্ছে।

   

ওয়াইসি সরকারকে ‘অপারেশন সিন্দুর’ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “পহেলগাঁও হামলার প্রতিশোধ নিতে হবে। যতক্ষণ না চারজন জঙ্গি ধরা পড়ছে, ততক্ষণ অপারেশন সিঁদুর চালিয়ে যান।”

বিহারে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশী ইস্যু

ওয়াইসি বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের (এসআইআর) প্রক্রিয়ার সময় রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশীদের উপস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “যখন আপনারা পহেলগাঁও হামলার প্রতিশোধের কথা বলছেন, তখন বিহারে রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশীদের ইস্যু তুলে জনগণের মনোযোগ সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

যদি আপনারা এতটাই সতর্ক, তাহলে চারজন জঙ্গি কীভাবে পহেলগাঁওয়ে পৌঁছল?” তিনি সরকারের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতার উপর আঙুল তুলে বলেন, এই ধরনের ঘটনা দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যর্থতার প্রমাণ।

‘অপারেশন সিন্দুর’ নিয়ে আহ্বান

ওয়াইসি পহেলগাঁও হামলার দায়ীদের ধরতে ‘অপারেশন সিঁদুর ’ অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “যতক্ষণ না এই চারজন সন্ত্রাসী ধরা পড়ছে, ততক্ষণ এই অপারেশন চালিয়ে যেতে হবে। পাকিস্তান যতক্ষণ ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের জন্য তাদের ভূমি ব্যবহার করবে, ততক্ষণ শান্তি সম্ভব নয়।” তিনি পাকিস্তানকে ‘লস্কর-ই-তৈয়বার জন্মদাতা’ বলে অভিহিত করে দাবি করেছেন, পাকিস্তান সরকার দীর্ঘদিন ধরে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে।

Advertisements

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

ওয়াইসির এই বক্তব্য পাকিস্তান এবং ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। তিনি সরকার এবং সশস্ত্র বাহিনীর পাশে থাকার কথা বললেও, কেন্দ্রীয় সরকারের নিরাপত্তা ব্যবস্থার সমালোচনা করে রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। বিজেপি নেতা সম্রাট চৌধরী জবাবে বলেন, “ওয়াইসি রাজনৈতিক সুবিধার জন্য এই ইস্যুকে ব্যবহার করছেন।

কেন্দ্রীয় সরকার পহেলগাঁও হামলার দায়ীদের ধরতে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে।” তিনি আরও দাবি করেন, বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধন অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করার জন্য জরুরি, যা জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে।

উপাচার্য নিয়োগে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের মাঝে মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে রায় শীর্ষ আদালতের

জনমনে প্রভাব

ওয়াইসির এই বক্তব্য বিহার এবং জম্মু ও কাশ্মীরে জনমনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে চলমান বিতর্কের মধ্যে তাঁর এই মন্তব্য রাজনৈতিক উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়ায় কারচুপির অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনকে ‘বিজেপির শাগরেদ’ বলে কটাক্ষ করেছেন, যা ওয়াইসির বক্তব্যের সঙ্গে মিলে যায়।
.
পহেলগাঁওয়ে হামলার ঘটনা ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। আসাদুদ্দিন ওয়াইসির কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা এবং ‘অপারেশন সিঁদুর’ অব্যাহত রাখার আহ্বান রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

বিহারে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশীদের ইস্যুকে হামলার সঙ্গে জুড়ে দেওয়ায় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক তরজা তীব্র হয়েছে। আগামী দিনে সরকারের পদক্ষেপ এবং এই হামলার তদন্ত কী ফল দেয়, তা দেশের নিরাপত্তা এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর গভীর প্রভাব ফেলবে।