আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ ও খুনের (Vineet Goyal) মামলায় নির্যাতিত তরুণী চিকিৎসকের নাম প্রকাশ্যে বলার জন্য প্রাক্তন কলকাতা(Vineet Goyal) পুলিশ কমিশনার (নগরপাল) বিনীত গোয়েলের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করা হয়েছিল। তবে সেই মামলায় কলকাতা হাই কোর্ট তাঁকে ক্লিনচিট দিয়েছে। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ও বিচারপতি অজয় গুপ্তার ডিভিশন বেঞ্চ মামলার নিষ্পত্তি করে জানিয়েছে, গোয়েল উত্তেজনার বশে নাম বলেছিলেন, কিন্তু তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়।(Vineet Goyal)
আদালত জানায়, এমন ঘটনা অবশ্যই অনভিপ্রেত এবং (Vineet Goyal) ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ভুল আর না ঘটে, সে জন্য রাজ্য পুলিশের ডিজিকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে পুলিশ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তাদের সংবেদনশীলতার বিষয়ে আরও প্রশিক্ষণ এবং ওয়ার্কশপ আয়োজন করার পরামর্শ দিয়েছে আদালত।(Vineet Goyal)
এদিকে, মামলার শুনানির আগে বিনীত গোয়েল নিজে হাই কোর্টে চিঠি লিখে তাঁর ভুল স্বীকার করেছিলেন। তিনি জানান, আবেগপ্রবণ মুহূর্তে তিনি ওই তরুণীর নাম বলে ফেলেন, তবে তা কোনওভাবে ইচ্ছাকৃত বা আইন ভাঙার উদ্দেশ্যে ছিল না। তাঁর সেই আত্মপক্ষ সমর্থনের পরে আদালত সবদিক খতিয়ে দেখে রায় দেয়।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে, বুধবার শিয়ালদহ আদালতে ষষ্ঠ স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সেই রিপোর্টে জানানো হয়, আর জি কর হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে, একাধিক ব্যক্তির জবানবন্দি গ্রহণের পরে, প্রাক্তন নগরপাল বিনীত গোয়েলের বিরুদ্ধে কোনও তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। সিবিআইয়ের এই রিপোর্টকে কেন্দ্র করে ফের বিতর্ক ছড়ায়।
নির্যাতিতার পরিবারের পক্ষের আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “বিনীত গোয়েল এবং তদন্তকারী অফিসার সিবিআইয়ের সম্পত মীনা ব্যাচমেট। সেক্ষেত্রে সঠিক তদন্ত কীভাবে আশা করা যায়?” তবে এই অভিযোগ তীব্রভাবে খণ্ডন করেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। তিনি বলেন, “ব্যাচমেট হওয়া কোনও অপরাধ নয়। তদন্ত পদ্ধতি ও রিপোর্ট সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ। যে কেউ ব্যাচমেট হতেই পারেন। আইন অনুযায়ী সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখা হয়েছে। বিনীত গোয়েলের বিরুদ্ধে অপরাধে যুক্ত থাকার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।”
হাই কোর্টও এই প্রসঙ্গে বলে, “সাধারণ নাগরিক, এমনকি সরকারি আধিকারিকদের ক্ষেত্রেও সংবেদনশীলতার পরিচয় দেওয়া জরুরি। যে কোনও ধর্ষণ বা নারীর বিরুদ্ধে হওয়া অপরাধে ভুক্তভোগীর পরিচয় রক্ষা করা নৈতিক ও আইনি দায়িত্ব। এই ধরনের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে পুলিশ বাহিনীকে আরও সংবেদনশীল ও সতর্ক করে তোলার প্রয়োজন আছে।”
এই রায়ে নির্যাতিতার পরিবার এবং সমর্থকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ বলছেন, সঠিক তদন্ত না হলে অপরাধীরা ছাড় পেয়ে যাবে। অন্যদিকে, বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, আদালতের পর্যবেক্ষণ যথাযথ ও যুক্তিপূর্ণ।
এই ঘটনার মাধ্যমে ফের একবার সামনে এল যে, প্রশাসনের শীর্ষস্থানে থাকা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে যখন বিষয়টি স্পর্শকাতর এবং জনসাধারণের আবেগের সঙ্গে জড়িত, তখন আরও সতর্কতা কাম্য।