অবৈধ কল সেন্টারের হদিশ, গ্রেফতার ১০

কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ আবারও বড়সড় সাফল্য পেল। শহরের কড়েয়া থানার অন্তর্গত একটি আবাসনে অবৈধ কল সেন্টার চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার (Arrested) করা হল ১০ জনকে।…

অবৈধ কল সেন্টারের হদিশ, গ্রেফতার ১০

কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ আবারও বড়সড় সাফল্য পেল। শহরের কড়েয়া থানার অন্তর্গত একটি আবাসনে অবৈধ কল সেন্টার চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার (Arrested) করা হল ১০ জনকে। বৃহস্পতিবার ভোররাতে কড়েয়া থানার সহায়তায় গোয়েন্দা বিভাগের অফিসারেরা অভিযান চালান ৩বি, চামরু খানসামা লেনের একটি চারতলা আবাসনের ফ্ল্যাটে। সেখান থেকেই গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তদের।

পুলিশ সূত্রে খবর, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গোয়েন্দা বিভাগ দীর্ঘদিন ধরেই নজরদারি চালাচ্ছিল। অবশেষে বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়ে ওই চক্রের ১০ জনকে হাতেনাতে পাকড়াও করা হয়। উদ্ধার হয়েছে ৬টি ল্যাপটপ, ১৮টি মোবাইল ফোন, ২টি রাউটার এবং একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র। এইসব উপাদান থেকে অনুমান করা হচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরেই ওই অবৈধ কল সেন্টারটি চলছে।

   

গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্তদের নাম—

আরবাজ আলি খান (২৭), বাড়ি কড়েয়া থানার চামরু খানসামা লেনে।

মহম্মদ আয়ান (২৫),

মহম্মদ জাফর খান (৩২) — উভয়ের বাড়ি ব্রাইট স্ট্রিটে, কড়েয়া থানার অন্তর্গত।

রহমত হোসেন (২৪), বাড়ি তিলজলা মসজিদ বাড়ি লেনে, তপসিয়া থানার অন্তর্গত।

মহম্মদ সরফরাজ (৩০), বাড়ি এন্টালি থানার কনভেন্ট লেনে।

মহম্মদ শাহনওয়াজ (২৮), চামরু খানসামা লেনের ২০ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা।

Advertisements

আসিফ আলি (২৯) 

মহম্মদ জুবায়ের (২৯), উভয়ের বাড়ি ব্রাইট স্ট্রিটে, কড়েয়া থানার এলাকায়।

আরশাদ আলি (২৮), ঘোড়া চাঁদ লেন, বেনিয়াপুকুর থানার অন্তর্গত।

শেখ শামীর (২৫), সামসুল হুদা রোড, কড়েয়া থানার অন্তর্গত।

এই মুহূর্তে ধৃতদের লালবাজারের সেন্ট্রাল লকআপে রাখা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে, যাতে বোঝা যায় এই চক্রের পরিধি কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত।

প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছে, বিদেশে বসবাসকারী নাগরিকদের ভুয়ো প্রযুক্তিগত সহায়তার নামে ফাঁদে ফেলে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হতো। মূলত ভয়ভীতি দেখিয়ে আর্থিক প্রতারণা চালানো হত। অভিযুক্তদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও লেনদেনও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে কয়েকজন আগে থেকেই এই ধরনের প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত ছিল। তাদের কল রেকর্ড, চ্যাট হিস্ট্রি, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখে এই চক্রে আর কেউ জড়িত কি না, তা জানার চেষ্টা চলছে। সেই কারণেই চামরু খানসামা লেনের ওই ফ্ল্যাটটি সিল করে দেওয়া হয়েছে।

এই ঘটনার পর এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন, তারা বুঝতেই পারেননি, ওই ফ্ল্যাটে এমন বেআইনি কার্যকলাপ চলত। তদন্তে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ।

সাইবার অপরাধ ও আন্তর্জাতিক প্রতারণার বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশের এই তৎপরতা প্রশংসিত হয়েছে বিভিন্ন মহলে। গোয়েন্দা বিভাগ জানিয়েছে, এই ধরনের চক্রগুলি চিহ্নিত করতে ভবিষ্যতেও আরও কঠোর অভিযান চালানো হবে।