কোথায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?
কলকাতার যেসব অঞ্চল বর্ষায় বারবার জলমগ্ন হয়ে পড়ে, যেমন— আমহার্স্ট স্ট্রিট, আলিপুর, টালিগঞ্জ, গড়িয়া, বেহালা, কালীঘাট, কাঁকুড়গাছি, বাদামতলা, শ্যামবাজার, সিআইটি রোড এবং খিদিরপুর— সেখানে অতিরিক্ত পোর্টেবল পাম্প বসানো হয়েছে। পুরসভার মতে, দ্রুত পাম্পিং-এর জন্য সমস্ত ওয়ার্ডে অস্থায়ী জল নিষ্কাশন কেন্দ্র তৈরি রাখা হয়েছে।
জোয়ার-ভাটার সময় জল ঠেকাতে লকগেটগুলি খোলা ও বন্ধের কাজেও থাকছে ২৪ ঘণ্টার কর্মী বাহিনী। শহরের ৭৭টি পাম্পিং স্টেশনকে চিহ্নিত করে সেখানে রাউন্ড দ্য ক্লক নজরদারি চালু হয়েছে। প্রতিটি পাম্পিং স্টেশনে মোতায়েন থাকবেন ইঞ্জিনিয়ার ও টেকনিশিয়ান।
এক পুর আধিকারিক বলেন, “লকগেট খোলা ও বন্ধের কাজ জোয়ার-ভাটার সময়ে সঠিক না হলে নদীর জল শহরে ঢুকে পড়ে। তাই সঠিক সময়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমাদের দল ২৪x৭ কাজ করবে।”
আগামী অক্টোবর পর্যন্ত কর্মীদের ছুটি বাতিলের পেছনে আরও একটি বড় কারণ হল দুর্গাপুজো। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব চলাকালীন যেন শহরবাসীকে জল জমার ভোগান্তি পোহাতে না হয়, সেদিকে নজর রেখেই এই সিদ্ধান্ত। গত কয়েক বছর পুজোর সময় বৃষ্টির কারণে শহরের বিভিন্ন অংশে জল জমে ব্যাপক সমস্যা দেখা দিয়েছিল।
পুরসভা সূত্রে খবর, প্রতিটি ওয়ার্ডে নাগরিকদের জন্য হেল্পলাইন চালু করা হয়েছে। কেউ যদি জল জমা, ড্রেন বন্ধ বা জল বের না হওয়ার সমস্যায় পড়েন, তাহলে ওই নম্বরে ফোন করলেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি, পুরসভা নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মেও জল জমা সংক্রান্ত অভিযোগ নিচ্ছে।
বর্ষা এবং দুর্গাপুজোর আগে এইরকম নজিরবিহীন প্রস্তুতি কলকাতা পুরসভার একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন শহরবাসী। তবে সব কিছুই নির্ভর করবে মাঠে কর্মরত কর্মীদের দক্ষতা, প্রযুক্তি ব্যবহারের সঠিকতা এবং প্রশাসনের তৎপরতার ওপর। এবার দেখা যাক, কলকাতা সত্যিই জল জমার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পায় কি না।