রায়দিঘি: মঙ্গলবার সকাল ১০টা পেরোতেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘির কুমড়োপাড়া গ্রামে নামল হুলস্থুল। হালকা বৃষ্টি তখনও পড়ছিল। আচমকা হাওয়ার গতি বাড়ে। চোখের পলকে শুরু হয় প্রবল ঝড়-দমকা নয়, একেবারে ধ্বংসাত্মক (storm in raidighi)।
মাত্র তিন মিনিট। অথচ এতেই তছনছ গোটা গ্রাম। উড়ে গেল অ্যাসবেস্টাসের চাল, ভেঙে পড়ল বড় বড় গাছ। সেই গাছে জড়িয়ে ছিঁড়ে গেল বিদ্যুতের তার। চারদিকে শুধু হাহাকার আর ছিন্নভিন্ন ঘরবাড়ির ছবি।
বাড়ির চাল উড়ল, মাথার উপর ছাদ নেই
“এক মুহূর্তেই সব শেষ। বুঝতেই পারিনি এমন কিছু হতে চলেছে,” কথাগুলো বলতে বলতে এখনও কাঁপছেন বছর পঁইত্রিশের এক গৃহবধূ। ঘরের অ্যাসবেস্টাসের চাল উড়ে গিয়েছে। মাটির বাড়ির অর্ধেকটা ধসে পড়েছে। মাথার উপর আর ছাদ নেই। গ্রামে অন্তত ১৫-২০টি বাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত।
রাস্তায় গাছ, বিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবা
ঝড় থেমেছে বটে, কিন্তু রেখে গেছে বিপর্যয়ের চিহ্ন। রাস্তার উপর হেলে পড়ে আছে গাছ। কোথাও বিদ্যুতের তার জড়িয়ে রয়েছে গাছের ডালে, কোথাও পড়ে আছে ছেঁড়া অবস্থায়। গোটা এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ। যোগাযোগ ব্যবস্থাও কার্যত স্তব্ধ।
সরকারি সাহায্য নয়, ভরসা নিজে
এখনও পর্যন্ত প্রশাসনের কোনও তৎপরতা চোখে পড়েনি। কোনও বিপর্যয় মোকাবিলা দল, বিদ্যুৎ দফতরের কর্মী—কেউ হাজির নন। তাই নিজেরাই কুড়ুল, দড়ি, করাত হাতে তুলে নিয়েছেন গ্রামবাসীরা। রাস্তা পরিষ্কার করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে নিজেদের উদ্যোগে।
“এমন ঝড় আগে দেখিনি”- আতঙ্কে গ্রামের মানুষ
স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, এমন হঠাৎ ঝড় এর আগে কখনও দেখেননি। কোনও পূর্বাভাসও মেলেনি। অনেকে বলছেন, এটা যেন ঘূর্ণিঝড়ের ছোট সংস্করণ! বসতির উপরে আঘাত, তার সঙ্গে অব্যবস্থার ছায়া মিলেমিশে গ্রামে এখন আতঙ্ক আর অসহায়তা দুই-ই।