অধ্যাপকের বিরুদ্ধে হেনস্তার অভিযোগ, সুবিচার না পেয়ে গায়ে আগুন, প্রয়াত বালেশ্বরের ছাত্রী

ভূবনেশ্বর: বালেশ্বরের ফকির মোহন অটোনোমাস কলেজে যৌন হেনস্থার শিকার হয়ে আত্মাহুতি দেওয়া কলেজ ছাত্রী অবশেষে হার মানলেন জীবনযুদ্ধে। ভুবনেশ্বর AIIMS–এ চারদিনের লড়াইয়ের পর সোমবার রাত…

Balasore Student Dies

ভূবনেশ্বর: বালেশ্বরের ফকির মোহন অটোনোমাস কলেজে যৌন হেনস্থার শিকার হয়ে আত্মাহুতি দেওয়া কলেজ ছাত্রী অবশেষে হার মানলেন জীবনযুদ্ধে। ভুবনেশ্বর AIIMS–এ চারদিনের লড়াইয়ের পর সোমবার রাত ১১:৪৬-এ মৃত্যু হয় তাঁর (Balasore Student Dies)। ২০ বছর বয়সী ওই ছাত্রী কলেজ ক্যাম্পাসেই নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন, অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই তিনি হেনস্থার শিকার হচ্ছিলেন কলেজেরই এক অধ্যাপকের হাতে।

চুপ ছিল কলেজ, নীরব প্রশাসন

ইন্টিগ্রেটেড বি.এড. বিভাগের ছাত্রীটি বারবার অভিযোগ জানিয়েও কোনও প্রতিকার পাননি। অভিযোগের মূল কেন্দ্রে বিভাগের প্রধান সমীর কুমার সাহু, যিনি নানাভাবে মানসিক চাপে রাখতেন ছাত্রীটিকে। সহপাঠীদের অভিযোগ, সাহুর বিরুদ্ধে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ জানানো হলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে চেপে রাখে। প্রিন্সিপালের ভূমিকা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।

   

৯০ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় ভরতি, লড়াই থেমে গেল চতুর্থ রাতে

ছাত্রীটিকে প্রথমে বালেশ্বর জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে ভুবনেশ্বর AIIMS-এ রেফার করা হয়। হাসপাতালে তাঁকে ভেন্টিলেশন, অ্যান্টিবায়োটিক, আইভি সাপোর্ট ও ডায়ালাইসিস সহ সবরকম আইসিইউ সাপোর্ট দেওয়া হলেও শেষরক্ষা হয়নি।

প্রতিক্রিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী, ‘দোষীরা রেহাই পাবে না’

ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মজিহি টুইট করে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, “চিকিৎসকরা চেষ্টা করলেও মেয়েটিকে বাঁচানো যায়নি। দোষীদের কঠোরতম শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।”
তিনি আরও জানিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে এবং তদন্তে কোনও গাফিলতি হবে না।

গ্রেপ্তার অধ্যক্ষ, তদন্তের মুখে হোড

আত্মাহুতির ঘটনার পর কলেজের অধ্যক্ষ দিলীপ কুমার ঘোষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। হেনস্থার অভিযোগে অভিযুক্ত সমীর কুমার সাহুর ভূমিকাও তদন্তের আওতায় এসেছে। কলেজে গঠিত অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির নিষ্ক্রিয়তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।

Advertisements
পরিবারের ক্ষোভ, ছাত্রীর মায়ের দাবি: “ফাঁসি চাই”

ছাত্রীর মা সংবাদমাধ্যমে বলেন, “আমার মেয়ের জীবন যারা শেষ করল, তাদের ফাঁসি চাই। আমার মেয়ে ন্যায় না পেলে আর কারোর মেয়ে নিরাপদ নয়।”

বিরোধীদের তীব্র আক্রমণ, রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ

ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপ বাড়ছে রাজ্যের উপর। বিরোধী দল কংগ্রেস ও বিজেডি ইতিমধ্যেই ভুবনেশ্বর ও বালেশ্বরে প্রতিবাদ মিছিল করেছে। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্যে নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে সরকারের দায়বদ্ধতা প্রশ্নের মুখে।

প্রশ্ন তুলছে গোটা রাজ্য: ন্যায় কি মিলবে?

এক তরুণীর আত্মাহুতির ঘটনা গোটা রাজ্যকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। কলেজ ক্যাম্পাসে যেখানে নিরাপদ থাকার কথা, সেখানেই হেনস্থার শিকার হয়ে প্রাণ দিতে হল এক শিক্ষার্থীকে — এই ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে ছাত্রসমাজ থেকে সাধারণ মানুষ।