নবান্ন বৈঠকের পরও সমাধান নেই, রাস্তাতেই লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি

সোমবার দুপুরে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে নবান্নে (Nabanna) চলল উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক। কিন্তু ফলাফল— শুন্য। আন্দোলনকারী চাকরিহারাদের স্পষ্ট বক্তব্য, তাঁরা এখন আর ধৈর্য্য ধরতে…

নবান্ন বৈঠকের পরও সমাধান নেই, রাস্তাতেই লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি

সোমবার দুপুরে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে নবান্নে (Nabanna) চলল উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক। কিন্তু ফলাফল— শুন্য। আন্দোলনকারী চাকরিহারাদের স্পষ্ট বক্তব্য, তাঁরা এখন আর ধৈর্য্য ধরতে রাজি নন। তাঁদের প্রধান দাবি— যোগ্য ও অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা আজই প্রকাশ করতে হবে। সেই দাবিতে তাঁরা রাত ১২টা পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন প্রশাসনকে।

এদিন নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল যোগ্য চাকরিপ্রার্থী ঐক্য মঞ্চ। তবে আন্দোলনকারীদের মূল জমায়েত নবান্নে পৌঁছনোর আগেই হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় আটকে দেওয়া হয়। প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয় এলাকায়। অবশেষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মুখ্যসচিব আলোচনায় বসতে চান। সেইমতো ১৮ জন প্রতিনিধিকে বৈঠকে ডাকা হয়।

   

বৈঠকে চাকরিহারারা যে তিনটি মূল দাবি রাখেন তা হল—

যোগ্য-অযোগ্যদের সার্টিফায়েড তালিকা অবিলম্বে প্রকাশ করতে হবে।

ওএমআর শিট প্রকাশ করতে হবে, যাতে প্রমাণ হয় পরীক্ষায় কে কীভাবে নম্বর পেয়েছে।

হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী রিভিউ করে যোগ্য প্রার্থীদের পুনর্বহাল করতে হবে।

তবে বৈঠক শেষে আন্দোলনকারীরা হতাশ। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসনের পক্ষ থেকে তালিকা প্রকাশে সময় চাওয়া হয়েছে, তবে নির্দিষ্ট কিছু বলা হয়নি। সেই কারণেই আন্দোলনকারীরা আজ রাত ১২টা পর্যন্ত সময় দিয়েছেন সরকারকে। এর পর তারা যে আরও কঠোর পথে হাঁটবেন, তা একপ্রকার স্পষ্ট করে দিয়েছেন।

Advertisements

আন্দোলনকারীদের একজন বলেন, “আমরা তো রাস্তাতেই আছি, এবার থেকে রাস্তাতেই থাকব। আজকের পর কোনও ইনডোর মিটিং নয়। আমরা সরকারকে সময় দিয়েছি রাত ১২টা পর্যন্ত। যদি তার মধ্যে দাবি না মানা হয়, তাহলে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে যাব।”

এদিকে হাওড়া পুলিশ প্রশাসন চিন্তায় রয়েছে— আন্দোলনকারীরা যদি সারারাত রাস্তায় অবস্থান করেন, তাহলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন থাকবে তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে।

সূত্রের খবর, আন্দোলনকারীদের সংখ্যাও দ্রুত বেড়ে চলেছে। অনেকেই রাতে হাওড়া মোড়ে থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তীব্র গরম উপেক্ষা করে অসংখ্য পুরুষ ও মহিলা চাকরিপ্রার্থী পিচরাস্তায় বসে রয়েছেন। কেউ কেউ রাস্তাতেই খাবার ও জল সংগ্রহ করে চলেছেন।

এ যেন ফের একবার “রাস্তায় রাস্তায় ন্যায্যতার লড়াইয়ের ইতিহাস” ফিরে আসছে— এমনটাই বলছেন অনেকে। তাঁদের মতে, এই আন্দোলন শুধু চাকরির জন্য নয়, ন্যায়বিচারের জন্যও।

তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো লিখিত প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের। এখন প্রশ্ন, রাত ১২টার পর কী হবে? সরকার কী সত্যিই তালিকা প্রকাশ করবে? নাকি শুরু হবে আর এক অধ্যায়ের লড়াই?