ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের জেরে ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা শব্দটি বাঙালির কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছে। (Kolkata) এই বিশেষ ধরনের বোমা মাটির গভীরে থাকা শত্রুপক্ষের বাঙ্কার, অস্ত্রভাণ্ডার বা কমান্ড সেন্টার ভেদ করে বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম। এই বাঙ্কার বাস্টারের সঙ্গে এবার কলকাতার নামও যুক্ত হতে চলেছে।
নয়াদিল্লির সূত্রে জানা গেছে, উত্তর ২৪ পরগনার ইছাপুরে (Kolkata)অবস্থিত মেটাল অ্যান্ড স্টিল ফ্যাক্টরি (এমএসএফ) এই বোমার শক্তিশালী খোল তৈরির কাজে নিযুক্ত হয়েছে। এই উদ্যোগে ইজরায়েলের সঙ্গে সহযোগিতার সম্ভাবনা বাংলার শিল্পক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত খুলছে।
সংবাদ সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ জুন আমেরিকা ইরানের ফরদো পারমাণবিক স্থাপনায় ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা জিবিইউ-৫৭ দিয়ে হামলা চালায়, যার ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এছাড়া, ইজরায়েলও এই বোমা ব্যবহার করে হেজবোল্লার প্রধান হাসান নাসরাল্লাহকে হত্যা করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ভারতের (Kolkata)প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও নিজস্ব বাঙ্কার বাস্টার তৈরির পরিকল্পনা করছে। এরই মধ্যে কলকাতার ইছাপুরের এমএসএফ-এর নাম উঠে এসেছে এই অত্যাধুনিক অস্ত্রের খোল তৈরির জন্য।
দিল্লির একটি উচ্চপদস্থ সূত্র জানিয়েছে, ইছাপুরে(Kolkata) ইতিমধ্যে ১০০ কিলোগ্রাম ওজনের বোমার জন্য বেশ কয়েকটি শক্তিশালী খোল তৈরি করা হয়েছে। এই খোলগুলির প্রাথমিক পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। গত বছর ১৭ সেপ্টেম্বর ইজরায়েলের চার সেনা অফিসার—জোহার ল্যাচম্যান, ইয়োরাম মুসাফি-সহ—কলকাতায় এসে এমএসএফ-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
তাঁরা বাঙ্কার ভেদ করতে সক্ষম বোমার শক্তিশালী খোল তৈরির জন্য প্রাথমিক বরাত দিয়ে যান। সূত্রের দাবি, আগামী দু’মাসের মধ্যে ইজরায়েল থেকে বিশেষজ্ঞরা এসে এই খোলের চূড়ান্ত পরীক্ষা করবেন(Kolkata)। যদি খোলগুলি তাঁদের মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হয়, তবে তা ফিনিশিংয়ের জন্য মধ্যপ্রদেশের জবলপুরে অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিতে পাঠানো হবে।প্রশ্ন উঠছে, প্রযুক্তির দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষে থাকা ইজরায়েল কেন কলকাতার দ্বারস্থ হলো?
সূত্র জানায়, পশ্চিম এশিয়ায় চলতে থাকা যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে গাজা, লেবানন, ইরানের মতো অঞ্চলে বাঙ্কার-ভিত্তিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। এই বাঙ্কার ভেদ করতে শক্তিশালী খোলের প্রয়োজন, যা ইজরায়েলের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি করা সম্ভব হয়নি। তাই নেতানিয়াহু সরকার ব্রাজিল, যুক্তরাজ্য এবং ভারতের দিকে তাকায়।
ইজরায়েলের সেনা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে, ইছাপুরের এমএসএফ (Kolkata)এই ধরনের শক্তিশালী খোল তৈরিতে অত্যন্ত পারদর্শী। ১৮৭২ সাল থেকে এমএসএফ গোলাবারুদ, কামান, বন্দুকের খোল তৈরিতে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে আসছে। ১৯২০ সাল থেকে এটি সরাসরি অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের অধীনে কাজ করছে।
ইছাপুরে (Kolkata)তৈরি খোলগুলি ইজরায়েলের নির্দিষ্ট স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী তৈরি হয়েছে, যা মাটির গভীরে প্রবেশ করে কংক্রিট ভেদ করতে সক্ষম। এই প্রকল্প ভারতের প্রতিরক্ষা শিল্পের ক্ষেত্রে একটি বড় পদক্ষেপ। তবে, এই খোলগুলি ভারতীয় সেনাবাহিনী ব্যবহার করবে নাকি ইজরায়েলে রপ্তানি করা হবে, তা নিয়ে স্পষ্ট তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি।
লঞ্চ হয়েই ₹15,000 ছাড়! Vivo X200 FE 5G-তে মিলছে অসাধারণ ক্যামেরা ও 90W চার্জিং
এই ঘটনা কলকাতার শিল্প ঐতিহ্য ও প্রযুক্তিগত দক্ষতাকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরেছে। রাজনৈতিক মহলে এই সহযোগিতা ভারত-ইজরায়েল সম্পর্কের নতুন মাত্রা হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে, এই অস্ত্র তৈরির প্রক্রিয়া পশ্চিম এশিয়ার সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে আলোচনা চলছে।