নিমিশার জীবন রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী মোদীকে চিঠি কেরল মুখ্যমন্ত্রীর

কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (Modi) একটি চিঠি লিখে ইয়েমেনে মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি কেরলের নার্স নিমিশা প্রিয়ার জীবন রক্ষার জন্য জরুরি হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছেন।…

bijayan writes letter to Modi

কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (Modi) একটি চিঠি লিখে ইয়েমেনে মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি কেরলের নার্স নিমিশা প্রিয়ার জীবন রক্ষার জন্য জরুরি হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছেন। ৩৭ বছর বয়সী নিমিশা প্রিয়া, যিনি ২০১৭ সালে একজন ইয়েমেনি নাগরিকের হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, তাঁর মৃত্যুদণ্ড ১৬ জুলাই, ২০২৫-এ কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।

এই ঘটনা কেরলের রাজনীতি এবং জনমানসে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিজয়ন তাঁর চিঠিতে এই মামলাকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করে নিমিশার জীবন বাঁচানোর জন্য ভারত সরকারের উচ্চস্তরের কূটনৈতিক হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন।

   

নিমিশা প্রিয়া, (Modi) কেরলের পালাক্কাড জেলার বাসিন্দা, ২০১৭ সালে ইয়েমেনে একটি হাসপাতালে নার্স হিসেবে কাজ করার সময় একজন ইয়েমেনি নাগরিক তালাল আবদো মাহদির হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তাঁর ব্যবসায়িক অংশীদার মাহদিকে হত্যা করেছেন এবং মৃতদেহ বিকৃত করার চেষ্টা করেছেন।

২০১৮ সালে ইয়েমেনের (Modi) একটি বিচারিক আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং ২০২৩ সালের নভেম্বরে ইয়েমেনের সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল এই রায় বহাল রাখে। এই রায়ের পর থেকে নিমিশার পরিবার এবং কেরল সরকার তাঁর মৃত্যুদণ্ড রদ করার জন্য নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।পিনারাই বিজয়ন তাঁর চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, “আমি এর আগে ২৪ মার্চ, ২০২৫ তারিখে বিদেশমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলাম।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, নিমিশা প্রিয়া টমি থমাসের মৃত্যুদণ্ড ১৬ জুলাই, ২০২৫-এ কার্যকর হতে চলেছে। এটি একটি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনাযোগ্য মামলা। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে (Modi)অনুরোধ করছি, এই বিষয়ে জরুরি হস্তক্ষেপ করে ইয়েমেনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নিমিশা প্রিয়ার জীবন রক্ষার ব্যবস্থা করুন।” তিনি আরও বলেন, কেরল সরকার নিমিশার মুক্তি এবং নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের জন্য কাজ করা সকলের পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়েছে।

কেরল সরকারের পাশাপাশি নিমিশার পরিবার এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনও তাঁর জীবন বাঁচানোর জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। নিমিশার মা, প্রেমা কুমারী, ইয়েমেনে গিয়ে তাঁর মেয়ের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং ‘ব্লাড মানি’ (ইয়েমেনের আইনে ক্ষতিপূরণ হিসেবে অর্থ প্রদানের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড থেকে মুক্তি) দেওয়ার জন্য আর্থিক সংগ্রহের চেষ্টা করছেন।

তবে, ইয়েমেনের জটিল রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতির কারণে এই প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল হয়ে উঠেছে।ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে ইতিমধ্যে সক্রিয় পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানা গেছে। ৮ জুলাই, ২০২৫-এ মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, তারা নিমিশার মামলাটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং সব ধরনের সহায়তা প্রদানের চেষ্টা করছে।

Advertisements

বিদেশ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, (Modi)“আমরা নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে অবগত। তাঁর পরিবার বিভিন্ন বিকল্প খতিয়ে দেখছে, এবং সরকার তাঁদের সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে।” তবে, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে যে, ইয়েমেনের পরিস্থিতি বিবেচনায় তারা এই বিষয়ে খুব বেশি কিছু করতে পারছে না, যা কেরল সরকার এবং নিমিশার পরিবারের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে।

সামাজিক মাধ্যমে পিনারাই বিজয়ন (Modi)তাঁর চিঠির কথা উল্লেখ করে লিখেছেন, “নিমিশা প্রিয়ার মুক্তির জন্য আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করছি। তাঁর নিরাপদ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে কেরল সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” এই ঘটনা ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের প্রশ্নে নতুন আলোচনার সূত্রপাত করেছে।

বিশেষ করে, ইয়েমেনের মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপত্তা এবং আইনি সহায়তার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।রাজনৈতিক মহলের কেউ কেউ এই ঘটনাকে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব হিসেবে দেখছেন। কেরলের বিরোধী দলগুলো অভিযোগ করেছে, কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়ে যথেষ্ট তৎপরতা দেখাচ্ছে না।

অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইয়েমেনের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি এই মামলার সমাধানকে জটিল করে তুলেছে। নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা কেরলের জনমানসে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

গার্ডরেল সরিয়ে এগোতেই মারমুখী পুলিশ,ধস্তাধস্তিতে আহত বহু শিক্ষক

তাঁর পরিবার এবং (Modi) সমর্থকরা আশা করছেন, ভারত সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এবং আন্তর্জাতিক চাপের মাধ্যমে নিমিশার জীবন রক্ষা করা সম্ভব হবে। এই ঘটনা ভারতীয় নাগরিকদের বিদেশে আইনি সুরক্ষা এবং মানবাধিকারের প্রশ্নে একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে।