দিলীপ ঘোষের প্রত্যাবর্তন? মোদির দুর্গাপুর সভায় আমন্ত্রণে জল্পনায় ইতি

অবশেষে সব জল্পনার অবসান। আগামী ১৮ জুলাই দুর্গাপুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভায় আমন্ত্রণ পেলেন একসময়ের দাপুটে বিজেপি নেতা ও রাজ্যসভার সদস্য দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।…

dilip-ghosh praises modi

অবশেষে সব জল্পনার অবসান। আগামী ১৮ জুলাই দুর্গাপুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভায় আমন্ত্রণ পেলেন একসময়ের দাপুটে বিজেপি নেতা ও রাজ্যসভার সদস্য দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। রাজ্য বিজেপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে তাঁকে ঘিরে যে দূরত্ব ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল, তা এখন অনেকটাই কাটতে শুরু করেছে বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। এই আমন্ত্রণকে কেন্দ্র করেই নতুন করে বঙ্গ রাজনীতিতে দিলীপ ঘোষের ‘পুনরাবির্ভাব’ কি হতে চলেছে, উঠছে সেই প্রশ্নও।

দুর্গাপুরের সভায় দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) উপস্থিতি নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। কারণ, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির নির্দেশে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হলেও পরাজিত হয়েছিলেন দিলীপ। এরপর থেকেই তাঁকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দলীয় কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। বিশেষ করে রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক রদবদলের সময় ও শমীক ভট্টাচার্যের সভাপতি নির্বাচনের সময় তিনি গরহাজির ছিলেন। এমনকি সভাপতি নির্বাচনের পর দিলীপ ঘোষকে সংবর্ধনা সভাতেও ডাকা হয়নি।

   

এরপর থেকেই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা দানা বাঁধতে শুরু করে—দল থেকে দূরত্ব তৈরি করছেন দিলীপ (Dilip Ghosh)? তৃণমূল যোগদানের সম্ভাবনা কি রয়েছে? একাধিকবার সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলেও দিলীপ সোজাসুজি উত্তর দেননি। বরং ‘জলও নেই, পোনাও নেই’-র মতো বক্তব্য দিয়ে সেই জল্পনায় রীতিমতো ঘি ঢেলেছিলেন তিনি।

তবে হঠাৎ করেই সেই চিত্রপট বদলাতে শুরু করে। নতুন সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন দিলীপ। এরপর স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে দিল্লিতে দলীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, সেটাই ছিল ‘পুনর্মিলনের’ প্রথম ধাপ। এরপরেই মোদির সভায় তাঁর আমন্ত্রণ পাওয়া নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।

জানা গিয়েছে, সভার আগের দিন অর্থাৎ ১৭ জুলাই রাতেই দিলীপ দুর্গাপুরে পৌঁছে যাবেন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একই মঞ্চে দাঁড়ানো মানে শুধুই সৌজন্য নয়, রাজনৈতিকভাবে তা বড় বার্তা বহন করে। তাতে রাজ্য বিজেপির পুরনো অভিজ্ঞ নেতৃত্বকে গুরুত্ব দেওয়া এবং সংগঠনকে একত্রিত করার প্রচেষ্টারই প্রতিফলন ঘটছে।

Advertisements

প্রসঙ্গত, এর আগে দিঘায় রাজ্য সরকারের আমন্ত্রণে জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। সস্ত্রীক সেই সফর নিয়েও দলে অস্বস্তি তৈরি হয়েছিল। কিছু নেতৃত্বের চক্ষুশূলও হয়েছিলেন তিনি। সেই প্রেক্ষাপটেই মোদির সভায় দিলীপের উপস্থিতি যেন সেই ‘রাজনৈতিক আইসোলেশন’-এর অবসান ঘটাতে চলেছে।

তবে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—এই সভার পরে কি আবার আগের মতো সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরবেন দিলীপ ঘোষ? ২০২৬-র বিধানসভা নির্বাচনে কি কোনও বড় দায়িত্বে দেখা যাবে তাঁকে? নাকি এটা নিছকই সৌজন্য-রাজনীতির অংশ?

সব প্রশ্নের উত্তর আপাতত সময়ই দেবে। তবে এই মুহূর্তে একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়—রাজ্য বিজেপির নতুন অধ্যায়ে আবারও জায়গা করে নিচ্ছেন একসময়ের ‘দাবাং’ নেতা দিলীপ ঘোষ।