ফের জল-যন্ত্রণায় ঘাটাল! দু’দিনে বন্যার জলে মৃত্যু ৩ জনের

শান্তনু পান, ঘাটাল: আবারও জলের তলায় ঘাটাল (Floods Ravage Ghatal )। গত মাসের বন্যার ক্ষত শুকোতে না শুকোতেই ফের নতুন করে প্লাবিত হল ঘাটাল মহকুমার…

ফের জল-যন্ত্রণায় ঘাটাল! দু’দিনে বন্যার জলে মৃত্যু ৩ জনের

শান্তনু পান, ঘাটাল: আবারও জলের তলায় ঘাটাল (Floods Ravage Ghatal )। গত মাসের বন্যার ক্ষত শুকোতে না শুকোতেই ফের নতুন করে প্লাবিত হল ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা। একটানা বর্ষণ ও ডিভিসি (দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন)-র বিভিন্ন জলাধার থেকে ছাড়া জল মিলে ঘাটাল পুরসভা সহ মোট ৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টির সঙ্গে বেড়ে চলেছে মানুষের উদ্বেগ। ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে তিনজনের— যার মধ্যে এক নাবালিকাও রয়েছে।

ঘাটালের দেওয়ানচক-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের কিশমত কোতুলপুর গ্রামের বাসিন্দা ৬ বছরের সুলতানা খাতুন শনিবার সকালে স্কুলে যাওয়ার আগে বন্যার জলে স্নান করতে নেমে তলিয়ে যায়। পরে তাঁর দেহ উদ্ধার করে স্থানীয় প্রশাসন। বিকেলে মৃত্যু হয় অজবনগর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা ৪০ বছরের নিমাই ডগরার। অন্যদিকে, রবিবার সকালে দাসপুর থানার রাজনগর পশ্চিমপাড়া এলাকার ৫৯ বছরের ঝড়ু জানা বাজারে বেরিয়ে বন্যার জলে ডুবে যান। বিকেলে উদ্ধার হয় তাঁর নিথর দেহ।

   

এই পরিস্থিতিতে ঘাটালের মানুষ কার্যত ঘরবন্দি। রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় বন্ধ হয়েছে যান চলাচল। প্লাবিত হয়েছে ঘাটাল পুরসভার অন্তর্গত ১২টি ওয়ার্ড। মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস জানান, “বর্তমানে পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। নতুন করে আবারও বৃষ্টি শুরু হওয়ায় পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা নেই। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক তৎপরতা চলছে। দুর্গতদের উদ্ধার ও ত্রাণ সরবরাহে নৌকা ও জলযান ব্যবহার করা হচ্ছে।”

ফের জল-যন্ত্রণায় ঘাটাল! দু’দিনে বন্যার জলে মৃত্যু ৩ জনের

এদিকে প্রশ্ন উঠছে, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কবে বাস্তবায়িত হবে? স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, “বছর বছর একই ছবি, অথচ মাস্টার প্ল্যান আজও কার্যকর নয়। দুর্ভোগে মরতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।” উল্লেখ্য, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানটি বহু বছর ধরে ঝুলে রয়েছে। বন্যা প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকলেও তার বাস্তবায়ন হয়নি বলেই অভিযোগ।

Advertisements

প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, বন্যা দুর্গত এলাকায় চাল, ডাল, জল ও ওষুধ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিক স্কুল ও পঞ্চায়েত অফিসে খোলা হয়েছে ত্রাণ শিবির। সেখানে নিরাপদে আশ্রয় নিচ্ছেন বহু মানুষ। মোতায়েন করা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও।

আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দক্ষিণবঙ্গের আরও বেশ কয়েকটি জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে আশঙ্কা।

ঘাটালের মানুষ ফের একবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাইছেন, এবার আর প্রতিশ্রুতি নয়, বাস্তবায়ন চাই মাস্টার প্ল্যানের। নচেত, বর্ষা এলেই ঘাটাল হবে জলের শহর, আর প্রাণ হারাবে নিরীহ মানুষ।