স্বামী-স্ত্রীর ভয়ঙ্কর খুন, প্রেমিকের মাথা কেটে ছিন্নভিন্ন দেহ

উত্তরপ্রদেশের ফতেহপুর জেলায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এক ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ড রীতিমতো গা শিউরে ওঠার মতো। রিন্ড নদীর পাড় থেকে উদ্ধার হওয়া একটি মাথাবিহীন কঙ্কালের সূত্র ধরে…

স্বামী-স্ত্রীর ভয়ঙ্কর খুন, প্রেমিকের মাথা কেটে ছিন্নভিন্ন দেহ

উত্তরপ্রদেশের ফতেহপুর জেলায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এক ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ড রীতিমতো গা শিউরে ওঠার মতো। রিন্ড নদীর পাড় থেকে উদ্ধার হওয়া একটি মাথাবিহীন কঙ্কালের সূত্র ধরে চাঞ্চল্যকর তথ্যের হদিস পেয়েছে পুলিশ। ধাপে ধাপে তদন্তে উঠে আসে – এক বিবাহিত মহিলা স্বামীর (UP Couple) সঙ্গে মিলে নিজের প্রেমিককে খুন করে দেহ টুকরো টুকরো করে নদীর ধারে পুঁতে রাখেন। অভিযুক্ত দম্পতি বর্তমানে পুলিশের জালে।

ঘটনার সূত্রপাত ২ জুলাই, যখন রিন্ড নদীর ধারে একটি অজ্ঞাতনামা মাথাবিহীন কঙ্কাল উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ। ফরেনসিক তদন্ত ও প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে পুলিশ শনাক্ত করে, মৃত ওই যুবকের নাম রাহুল প্যাটেল, বয়স ৩২। সোশ্যাল মিডিয়া ও স্থানীয় সূত্র মারফত জানা যায়, রাহুলের সঙ্গে সরিতা নামের এক বিবাহিতা মহিলার প্রেমের সম্পর্ক ছিল।

   

ফতেহপুর জেলার পুলিশ সুপার অনুপ সিং সংবাদমাধ্যমকে জানান, রাহুলের পরিচয় মেলার পর তাঁর গতিবিধি ও সম্পর্কের খোঁজ শুরু করে তদন্তকারী দল। সেখান থেকেই উঠে আসে সরিতার নাম। সরিতাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি স্বীকার করেন যে, স্বামী রামভবনের সঙ্গে মিলে রাহুলকে খুন করেন তিনি। সরিতা আরও জানান, স্বামীর সন্দেহ ও সামাজিক চাপে পড়েই সম্পর্ক ছেদ করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু রাহুল তা মানতে চাননি। এই কারণেই প্রেমিককে সরিয়ে দেওয়ার ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত নেন ওই দম্পতি।

২ জুলাইয়ের দিন সরিতা রাহুলকে নিজের বাড়িতে ডেকে আনেন। ঘরে ঢুকেই যখন রাহুল তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন, ঠিক সেই সময় লুকিয়ে থাকা রামভবন গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে রাহুলকে খুন করে। এরপর কাস্তে ও করাত ব্যবহার করে তাঁর দেহ থেকে মাথা আলাদা করেন অভিযুক্তরা। শরীরের বিভিন্ন অংশ টুকরো করে নদীর পাড়ে পুঁতে দেওয়া হয়। কিছু অংশ পুড়িয়ে ফেলা হয় প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্যে। মাথা আলাদা করে অন্যত্র ফেলে দেওয়া হয়, যাতে শনাক্ত করা না যায়।

Advertisements

তবে পুলিশের তৎপরতায় খুনের রহস্য বেশিদিন চাপা থাকেনি। ঘটনাস্থল অর্থাৎ নদীর ধারে এবং সরিতার বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় – খুনের অস্ত্র, রাহুলের ভাঙা মোবাইল ফোন, মোটরসাইকেলের কিছু অংশ, একটি বেল্ট, চশমা ও কিছু চুলের গোড়া। এই প্রমাণ সংগ্রহের পরই পুলিশ দম্পতিকে গ্রেফতার করে।

জিজ্ঞাসাবাদে সরিতা ও রামভবন দুজনেই খুনের কথা স্বীকার করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, এখন তাঁরা বিচারিক হেফাজতে রয়েছেন এবং এই নারকীয় অপরাধের পূর্ণাঙ্গ চার্জশিট প্রস্তুত করা হচ্ছে।

এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড উত্তরপ্রদেশে মহিলাদের বিরুদ্ধে সংগঠিত অপরাধের ভয়াবহ রূপ ফের সামনে নিয়ে এসেছে। পাশাপাশি এটি সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করছে যে, সম্পর্কের জটিলতা কতটা ভয়ঙ্কর পরিণতির দিকে ঠেলে দিতে পারে—যদি তা সহিংসতায় পরিণত হয়।