পাহাড় থেকে নামার পথে হু হু করে কমে যাচ্ছে চা উৎপাদন! এই তথ্য উঠে এসেছে টি (Tea) রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে। এতে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যে চা শিল্পে দুটি ভিন্ন ছবি। একদিকে পাহাড়ের চা বাগানগুলিতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য। পাহাড়ে কাঁচা চা পাতার উৎপাদন বেড়েছে চোখে পড়ার মতো। (Tea production has increased in the Darjeeling hills) আর ডুয়ার্স ও তরাইয়ে উৎপাদন হু হু করে উৎপাদন কমছে।
তরাই ডুয়ার্সে চা উৎপাদনের ঘাটতি চা অর্থনীতিকে প্রভাব ফেলবে। কারণ ডুয়ার্স-তরাই অঞ্চলে চা উৎপাদনের উপর বহু মানুষের জীবিকা নির্ভরশীল।
টি রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আবহাওয়ার তারতম্যে পাহাড়ি এলাকা ও তরাই-ডুয়ার্সের চা বাগানে উৎপাদনের বিপরীত পরিসংখ্যান ধরা পড়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জুন মাসে ডুয়ার্সে চা বাগানে উৎপাদন কমেছে প্রায় ৬ লক্ষ ৬৫ হাজার কেজি। তরাইয়ে কমেছে ১ লক্ষ কেজির বেশি। গতবছরের তুলনায় এই বছর ডুয়ার্সে চা উৎপাদন ৬৪ লক্ষ ৮৪ হাজার কেজি থেকে নেমেছে ৫৮ লক্ষ কেজির ঘরে। তরাই অঞ্চনে ১৬ লক্ষ ২৬ হাজার কেজির জায়গায় উৎপাদন কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ লক্ষ ২০ হাজার কেজি।
পাহাড়ি এলাকার ছবি আলাদা। দৃশ্যপট একেবারেই আলাদা। গত বছর জুন মাসে চা উৎপাদন ছিল ৩ লক্ষ ৭৭হাজার ৭৮৬ কেজি। এবারে বেড়ে হয়েছে ৪ লক্ষ ৮৫ হাজার ২৪১ কেজি। অর্থাৎ, উৎপাদন বেড়েছে ১ লক্ষ ৭হাজার কেজির বেশি। কালিম্পং বাদে দার্জিলিং জেলার পাহাড়ের প্রায় সব এলাকায় দেখা গেছে এই বৃদ্ধি।
জুন মাসে ডুয়ার্সে বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ৫০৫ মিলিমিটার। গত বছর হয়েছিল ১২১৪ মিলিমিটার। বৃষ্টির দিন কমে দাঁড়িয়েছে ২৫ থেকে ১৮ দিনে। তাপমাত্রা বেড়েছে ৩৪.৭ ডিগ্রি থেকে ৩৬.৯ ডিগ্রিতে। তরাইয়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ। জুনে বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ৩২৯ মিলিমিটার, যা আগের বছরের তুলনায় অর্ধেকেরও কম। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। এই কারণে চা উৎপাদনে ঘাটতি।
পাহাড়ের ক্ষেত্রে একই রকম আবহাওয়া সত্ত্বেও চা উৎপাদন বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাহাড়ি চা বাগানগুলিতে উন্নত চাষ পদ্ধতি এবং মাটির স্বাভাবিক আর্দ্রতা বেশি। যার ফলে তুলনামূলক কম বৃষ্টিপাতের মধ্যেও উৎপাদনে প্রভাব পড়েনি।