ইজরায়েল থেকে কাশ্মীর, খান স্যারের বিস্ফোরক মন্তব্যে বিতর্ক

সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে জনপ্রিয় শিক্ষক ও ইউটিউবার খান স্যারের (Khan Sir) বিস্ফোরক মন্তব্য ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন দ্বন্দ্ব এবং কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।…

Khan Sir controversial interview

সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে জনপ্রিয় শিক্ষক ও ইউটিউবার খান স্যারের (Khan Sir) বিস্ফোরক মন্তব্য ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন দ্বন্দ্ব এবং কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। হামাসকে ভারতের তরফে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ঘোষণা করা উচিত কিনা, এই প্রশ্নে খান স্যার বলেন, “কেন? কেন? ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ১৫ বছর ধরে মুম্বই হামলার অপরাধী আজমল কাসাবকে জঙ্গি বলেননি।

তাহলে ভারত কেন তড়িঘড়ি হামাসকে সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করবে?” এছাড়া, কাশ্মীর সমস্যার জন্য কে দায়ী, এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “মহারাজা হরি সিং বোকামি করেছিলেন।

   

সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল দক্ষিণ ভারতের দিকে বেশি মনোযোগ দিয়েছিলেন এবং (Khan Sir) উত্তর ভারতকে অবহেলা করেছিলেন। কাশ্মীর তাঁর অগ্রাধিকার ছিল না।” তবে সংবাদ মাধ্যম তৎক্ষণাৎ পাল্টা জবাব দিয়ে বলেন, “কী বলছেন? সেই সময় কাশ্মীরের দায়িত্বে ছিলেন জওহরলাল নেহরু, সর্দার প্যাটেল নন।”

হামাস নিয়ে খান স্যারের মন্তব্য (Khan Sir)

সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে খান স্যার (Khan Sir) হামাসকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ঘোষণার বিষয়ে ভারতের তাড়াহুড়ো করার প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু কখনও আজমল কাসাবকে জঙ্গি বলে উল্লেখ করেননি, যিনি ২০০৮ সালের মুম্বই হামলায় জড়িত ছিলেন।

তিনি (Khan Sir) সবিস্তারে বলেন মুম্বই হামলার পরে নেতানিয়াহু ভারতে এসে চ্যাপেল হাউস, লিওপোল্ড এ গিয়েছিলেন যেখানে ইজরায়েলি দের পন বন্দি করে রেখেছিল জঙ্গিরা। তার পরেও নেতানিয়াহু কখনোই কাসাবকে কে জঙ্গি বলে চিহ্নিত করেননি। ভারত ও ১৫ বছর পর বলবে।

তিনি আরও বলেন, হামাসের (Khan Sir) কার্যকলাপ ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন দ্বন্দ্বের প্রেক্ষাপটে দেখা উচিত, এবং ভারতের উচিত নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখা। এই মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। একদল ব্যবহারকারী খান স্যারের এই মন্তব্যকে ‘নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি’ বলে সমর্থন করলেও, অনেকে তাঁকে ‘হামাসের প্রতি নরম মনোভাব’ দেখানোর জন্য সমালোচনা করেছেন।

কাশ্মীর ইস্যুতে বিতর্ক

কাশ্মীর সমস্যার জন্য কে দায়ী, এই প্রশ্নে খান স্যারের (Khan Sir) মন্তব্য ঐতিহাসিক ঘটনার ব্যাখ্যায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তিনি বলেন, “মহারাজা হরি সিংয়ের ভুল সিদ্ধান্ত এবং সর্দার প্যাটেলের উত্তর ভারতের প্রতি অবহেলা কাশ্মীর সমস্যার মূল কারণ।” তবে প্রশ্নকারী তৎক্ষণাৎ এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে বলেন, “১৯৪৭ সালে কাশ্মীরের দায়িত্বে ছিলেন জওহরলাল নেহরু।

সর্দার প্যাটেলের দায়িত্ব ছিল দেশীয় রাজ্যগুলির একীকরণ, এবং তিনি এই কাজে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছিলেন।” এই বিতর্ক সামাজিক মাধ্যমে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

Advertisements

কাশ্মীর ইস্যুর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

কাশ্মীর সমস্যা ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান বিভাজনের সময় থেকে শুরু হয়, যখন মহারাজা হরি সিং ভারত বা পাকিস্তানের সঙ্গে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব করেন। পাকিস্তান-সমর্থিত কবিলায়ি আক্রমণের পর তিনি ভারতের সঙ্গে যোগদানের জন্য ‘ইনস্ট্রুমেন্ট অফ অ্যাকসেশন’ স্বাক্ষর করেন।

জওহরলাল নেহরু (Khan Sir) তখন কাশ্মীর ইস্যুতে সরাসরি জড়িত ছিলেন, এবং সর্দার প্যাটেল প্রধানত দেশীয় রাজ্যগুলির একীকরণে মনোযোগ দিয়েছিলেন। খান স্যারের মন্তব্য এই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের ভুল ব্যাখ্যা হিসেবে সমালোচিত হয়েছে।

বিদেশ ভ্রমণকারীদের জন্য সুখবর, রূপে-জেবিসি কার্ডে ২৫% পর্যন্ত ক্যাশব্যাক

হামাস নিয়ে ভারতের অবস্থান

ভারত সরকার এখনও হামাসকে আনুষ্ঠানিকভাবে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ঘোষণা করেনি, তবে ইজরায়েলের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক শক্তিশালী। ভারত ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন দ্বন্দ্বে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে এবং প্যালেস্টাইনের জনগণের প্রতি সমর্থন বজায় রেখেছে। খান স্যারের মন্তব্য ভারতের এই নিরপেক্ষ অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করা হচ্ছে।

খান স্যারের (Khan Sir) মন্তব্য হামাস এবং কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তাঁর বক্তব্য ঐতিহাসিক তথ্য এবং ভারতের কূটনৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এই মন্তব্য রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে তীব্র আলোচনার সৃষ্টি করেছে, এবং আগামী দিনে এটি কীভাবে প্রভাব ফেলে, তা নিয়ে সকলের নজর রয়েছে।