নাবালিকাকে অশ্লীল মেসেজ, আটক বেসরকারি স্কুলের অধ্যক্ষ

ক্যানিং: একের পর এক শিক্ষাঙ্গনে নারীদের উপর নিগ্রহের ঘটনা সামনে আসছে রাজ্যে। কসবা ল’ কলেজে ছাত্রী নিগ্রহের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার দক্ষিণ ২৪…

Recover deleted messages

ক্যানিং: একের পর এক শিক্ষাঙ্গনে নারীদের উপর নিগ্রহের ঘটনা সামনে আসছে রাজ্যে। কসবা ল’ কলেজে ছাত্রী নিগ্রহের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে ফের চাঞ্চল্য। অভিযোগ, ক্যানিংয়ের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের অধ্যক্ষ (Principal) এক নাবালিকা ছাত্রীকে দিনের পর দিন অশ্লীল বার্তা পাঠাতেন। এমনকী, মেয়েটিকে হুমকিও দেন—এই ঘটনা যদি কাউকে বলা হয়, তাহলে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়া হবে।

ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায় ক্যানিং থানা এলাকায়। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত অধ্যক্ষকে (Principal)  আটক করেছে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। স্কুল চত্বরেও উত্তেজনা ছড়িয়েছে বলে খবর।

   

নাবালিকার পরিবারের অভিযোগ, প্রায় এক বছর ধরে অধ্যক্ষ (Principal) এই ধরনের কার্যকলাপ চালিয়ে আসছেন। ছাত্রী মাধ্যমিক পাশ করার পর সাহস সঞ্চয় করে পরিবারের কাছে পুরো বিষয়টি খুলে বলে। তার পরেই মা-বাবা ওই বার্তাগুলো পরীক্ষা করে দেখেন এবং সঙ্গে সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের দ্বারস্থ হন। ছাত্রী ও পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, দিনের পর দিন অধ্যক্ষ ছাত্রীকে ‘অশ্লীল’, ‘নোংরা’ ভাষায় বার্তা পাঠাতেন। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে দাঁড়ায় যে, মেয়েটিকে মানসিক চাপে থাকতে হতো প্রতিনিয়ত।

শনিবার সকালে পরিবারের তরফে স্কুলে গিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়। পরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে ঘটনাস্থলে আসে ক্যানিং থানার পুলিশ। অভিযুক্ত অধ্যক্ষকে (Principal) স্কুল চত্বর থেকেই আটক করা হয়। তাঁকে থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুখ খুলেছেন ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক পরেশরাম দাসও। তিনি বলেন, “এটা একটি সিবিএসসি অনুমোদিত স্কুল। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। এভাবে একজন শিক্ষক ছাত্রীদের সঙ্গে এমন নোংরা আচরণ করতে পারেন না। আমরা চাই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।”

Advertisements

ঘটনার পর সংবাদমাধ্যমের তরফে অধ্যক্ষের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনও সদুত্তর না দিয়ে শুধু বলতেই থাকেন, “সরি…সরি।” তাঁর এই প্রতিক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। অনেকে মনে করছেন, এই স্বীকারোক্তিই তাঁর দোষ প্রমাণে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

অপরদিকে, নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবার বক্তব্য, “আমার মেয়ে প্রথম থেকেই ভয় পেয়ে কিছু বলেনি। ও পরীক্ষা দেবে বলে আমরা ওকে মানসিকভাবে শক্ত রাখার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু এখন আর চুপ করে থাকা সম্ভব নয়। আমরা আইনের সাহায্যে এগোব এবং অপরাধীর উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করব।”

বর্তমানে অভিযুক্ত অধ্যক্ষকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ছাত্রী ও পরিবারের তরফে দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ধর্ষণ ও পকসো আইনে মামলা রুজু করেছে। পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ক্যানিং থানার একটি বিশেষ দল।

এই ঘটনার পর স্থানীয় মানুষজনের দাবি, স্কুলে সিসিটিভি, কাউন্সেলিং এবং অভিযোগ জানানোয় সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা থাকা উচিত। ন্যায্য বিচার না পাওয়া পর্যন্ত ছাত্রীর পরিবার লড়াই চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে।