কেরলে বাম-কংগ্রেসকে দুর্নীতিবাজ বলে কটাক্ষ শাহের

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ শনিবার কেরলের (kerala) শাসক দল লেফট ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এলডিএফ) এবং বিরোধী কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউডিএফ)-এর বিরুদ্ধে দুর্নীতির গুরুতর…

kerala spech ogg amit shah

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ শনিবার কেরলের (kerala) শাসক দল লেফট ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এলডিএফ) এবং বিরোধী কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউডিএফ)-এর বিরুদ্ধে দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ তুলে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে ঝড় তুলেছেন। তিরুবনন্তপুরমে বিজেপি আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “এলডিএফ এবং ইউডিএফ-এর ট্র্যাক রেকর্ড দুর্নীতিপূর্ণ।

এলডিএফ বিস্ফোরক কেলেঙ্কারি, কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক কেলেঙ্কারি, এআই ক্যামেরা (kerala)কেলেঙ্কারি, লাইফ মিশন কেলেঙ্কারি, পিপিই কিট কেলেঙ্কারি এবং ভারতের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি—রাষ্ট্র-পৃষ্ঠপোষকতায় সোনা চোরাচালানের কেলেঙ্কারিতে জড়িত।”

   

তিনি কেন্দ্রের তরফে কেরলের (kerala) প্রতি সৎমাতৃতুল্য আচরণের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন সরকার পূর্ববর্তী ইউপিএ সরকারের তুলনায় কেরলের জন্য অনেক বেশি তহবিল বরাদ্দ করেছে।

অমিত শাহ জানিয়েছেন, তিনি শনিবারই কেরলের জন্য কেন্দ্রীয় তহবিল বরাদ্দের সম্পূর্ণ বিবরণ প্রকাশ করবেন। (kerala)তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকার কংগ্রেস সরকারের তুলনায় কেরলের জন্য কয়েকগুণ বেশি অর্থ বরাদ্দ করেছে।

আমি আজ বিজেপি প্রধান কার্যালয়ের মাধ্যমে এর প্রতিটি বিবরণ প্রকাশ্যে আনব।” তিনি আরও জানান, ১০ জুলাই কেন্দ্রীয় সরকার বন্যা ও ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলির জন্য ১,০৬৬.৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে, যার মধ্যে কেরলের জন্য ১৫৩.২০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “মোদী সরকার সব পরিস্থিতিতে রাজ্যগুলির পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়েছে।”

শাহ জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কেরলের (kerala) উন্নয়নের জন্য তিনটি মূল দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে—দুর্নীতিমুক্ত শাসন, সরকারি প্রকল্পে কোনও বৈষম্য না করা এবং রাজনৈতিক সুবিধার ঊর্ধ্বে কেরলের উন্নয়ন। তিনি বলেন, “বিজেপি এবং সিপিআই(এম) উভয়ই ক্যাডার-ভিত্তিক দল, কিন্তু তাদের মধ্যে একটি বড় পার্থক্য রয়েছে। কেরলে ক্যাডারের কল্যাণ রাজ্যের উন্নয়নের চেয়ে বড়, কিন্তু বিজেপির জন্য ‘বিকশিত কেরলম’ ক্যাডারের ঊর্ধ্বে।” তিনি দাবি করেন, বিজেপি সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থের চেয়ে জনগণের কল্যাণকে প্রাধান্য দেয়।

নকশালবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানঅমিত শাহ দাবি করেছেন, “৩১ মার্চ, ২০২৬-এর মধ্যে ভারত নকশালবাদমুক্ত হবে। সন্ত্রাসবাদের জবাব শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং বিজেপি দিতে পারে।” তিনি উরি হামলার জবাবে সার্জিকাল স্ট্রাইক, পুলওয়ামাতে বিমান হামলা এবং ‘অপারেশন সিঁদুর’ উল্লেখ করে বলেন, “আমরা ঘরে ঢুকে মেরেছি।”

তিনি কেরলের (kerala) শাসক এলডিএফ সরকারকে অভিযুক্ত করে বলেন, “বামপন্থী দুষ্কৃতীরা আমাদের কর্মীদের হত্যা করেছে।” তিনি আরও দাবি করেন, এলডিএফ এবং ইউডিএফ সরকার কেরলকে সন্ত্রাসবাদী ও জাতীয়তাবিরোধী শক্তির আড্ডায় পরিণত করেছে।

মালয়ালমে কথা না বলতে পারার জন্য ক্ষমাবক্তৃতার শুরুতে অমিত শাহ কেরলের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, “কেরল (kerala) হল আদি শঙ্করের ভূমি, যিনি বেদ, ব্রহ্মসূত্র এবং অন্যান্য দার্শনিক গ্রন্থের ব্যাখ্যা করেছিলেন। আমি তাঁর পবিত্র আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।” তিনি মালয়ালমে কথা বলতে না পারার জন্য ক্ষমা চেয়ে বলেন, “আমি সুন্দর মালয়ালম ভাষায় কথা বলতে পারছি না, তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।”

Advertisements

দিনের শুরুতে শাহ তিরুঅনন্তপুরমে বিজেপির (kerala) নতুন অত্যাধুনিক রাজ্য কার্যালয় উদ্বোধন করেন। ৬০,০০০ বর্গফুটের এই সাততলা ভবন পুরনো মারারজি ভবনের স্থলে নিয়ে এসেছে। ২০১৭ সালের ৩ জুন তিনি এই ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। উদ্বোধনের পর তিনি পুথারিকান্দম ময়দানে ‘বিকশিত কেরলম সম্মেলনে’ ভাষণ দেন। এই অনুষ্ঠানটি বিজেপির রাজ্যে প্রভাব বিস্তারের কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বিকেলে শাহ (kerala) কান্নুরে যাবেন এবং তালিপারাম্বার বিখ্যাত শ্রী রাজরাজেশ্বর মন্দিরে প্রার্থনা করবেন। এই মন্দির সফরকে বিজেপির কেরলের সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। রাজ্য বিজেপি সভাপতি রাজীব চন্দ্রশেখর বলেন, “এই সফর কেরলের জনগণের পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষাকে তুলে ধরবে।”

কেরলে (kerala) ২০২৬ সালের মে মাসে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ১৪০ জন বিধায়ক নির্বাচিত হবেন। বর্তমান সরকারের মেয়াদ ২০২১ সালের ২৪ মে থেকে ২০২৬ সালের ২৩ মে পর্যন্ত। শাহের সফর এই নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, “কেরলে পরিবর্তনের জন্য এলডিএফ বা ইউডিএফ নয়, এনডিএ এবং বিজেপিকে ভোট দিন।”

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়াএলডিএফ এবং ইউডিএফ নেতারা শাহের অভিযোগের তীব্র নিন্দা করেছেন। সিপিআই(এম) নেতা জন ব্রিটাস বলেন, “শাহের মন্তব্য ভারতীয় সংবিধান এবং ফেডারেল কাঠামোর প্রতি অজ্ঞতার প্রমাণ।” তৃণমূল কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, “বিজেপি কেরলে তাদের ব্যর্থতা ঢাকতে এই ধরনের মিথ্যা অভিযোগ করছে।”

অমিত শাহের কেরল (kerala) সফর এবং তাঁর বক্তব্য রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করেছে। এলডিএফ এবং ইউডিএফ-এর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এবং কেন্দ্রীয় তহবিল বরাদ্দের দাবি ২০২৬-এর নির্বাচনের আগে বিজেপির কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

পাকিস্তানের ঘাতক মিসাইলেরর সমাধান খুঁজে পেয়েছে ভারত, বায়ুসেনার এই কৌশলই বলে দেবে কে শক্তিশালী

তাঁর সাংস্কৃতিক সংযোগ এবং নকশালবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান বিজেপির ‘বিকশিত কেরলম’ প্রচারকে জোরদার করেছে। আগামী দিনে এই ইস্যু রাজনৈতিকভাবে কীভাবে প্রভাব ফেলে, তা নিয়ে সকলের নজর রয়েছে।