লর্ডসের (Lords Test) ঐতিহাসিক মাঠে জমে উঠেছে ইংল্যান্ড (England) ভারতের (Indian Cricket Team) মধ্যে তৃতীয়ব টেস্ট ম্যাচ। ঠিক তখনই ম্যাচের আড়ালে এক অন্য বিতর্ক যেন ক্রমশ চড়া সুরে সামনে আসছে। তার নাম বল বিতর্ক। আর এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে ডিউকস বল (Dukes Ball)। কারণ একের পর এক বল বদলে দিতে হচ্ছে, ৮০ ওভার তো দূরের কথা, ৫০ ওভারও টিকছে না।
দ্বিতীয় দিনের খেলা ছিল একেবারে নজরকাড়া। ভারতের হয়ে বল হাতে দাপট দেখিয়েছেন জশপ্রীত বুমরাহ (Jasprit Bumrah), তুলে নিয়েছেন পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। কিন্তু ম্যাচ শেষে সংবাদমাধ্যমের সামনে দাঁড়িয়ে যখন তাঁকে বল নিয়ে প্রশ্ন করা হয়, তিনি খানিক রসিকতার সুরেই বলেন, “আমি এসব নিয়ে কিছু বলতে চাই না। কিছু বললেই ম্যাচ ফি কেটে নেবে। বড্ড কষ্ট করে টাকা রোজগার করি।”
বুমরাহর এই বক্তব্যে যতটা রসিকতা, ততটাই লুকিয়ে রয়েছে হতাশা এবং কৌশলী প্রতিক্রিয়া। কারণ, দিনের শেষে এই বল বিতর্ক যে ক্রিকেটের ন্যায্যতা এবং গুণগত মানের প্রশ্ন তোলে, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। শুভমন গিলকে বারবার আম্পায়ারের সঙ্গে বল নিয়ে কথা বলতে দেখা গিয়েছে। মাঠে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মহম্মদ সিরাজ। আগেই ঋষভ পন্থ প্রকাশ্যে বলেছিলেন, ডিউক বল আগের মতো মানসম্পন্ন থাকছে না।
টেস্ট ক্রিকেটে সাধারণত ৮০ ওভার পর একটি নতুন বল নেওয়ার নিয়ম। কিন্তু লর্ডস টেস্টে সেই নিয়ম যেন কার্যত হাস্যকর হয়ে উঠেছে। শুক্রবার একবার মাত্র ৬৪টি বল করার পরই বদলাতে হয় বল, আর তারপর দেওয়া নতুন বলটি টিকল মাত্র ৪৮ ডেলিভারি। এত দ্রুত বল নরম হয়ে যাওয়া শুধু বোলারদের জন্যই নয়, পুরো ম্যাচের ভারসাম্যের পক্ষেই ক্ষতিকর।
বুমরাহর কথায়, “এবার বলটা আলাদা। আগের সফরগুলিতে এভাবে বারবার বল বদলাতে হয়নি। আগের বলটা দীর্ঘক্ষণ শক্ত থাকত। কিন্তু এখন শক্ত পিচ, গরম আবহাওয়া হয়ত এসবের জন্য বল বারবার নরম হয়ে যাচ্ছে।” তাঁর মতে, “বল যদি শক্ত থাকে, তাহলে সেটি নড়াচড়া করে। কিন্তু নরম বল সেভাবে কিছু করে না। এটা একটা বড় পার্থক্য তৈরি করছে।”
এই বিতর্ক নিছকই বলের মানের প্রশ্ন নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে টেস্ট ক্রিকেটের মূল সৌন্দর্য—ব্যাট ও বলের ন্যায্য লড়াই। যখন বারবার বল বদলাতে হচ্ছে, তখন বোলাররা ছন্দ হারাচ্ছেন, ফিল্ডিং সেটআপ বদলাতে হচ্ছে, এমনকি ব্যাটসম্যানরাও নতুন বলের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সময় পাচ্ছেন। বোলারদের কাজ যে কঠিন হয়ে যাচ্ছে, তা তো বুমরাহর মতো সিনিয়র পেসারের গলায় স্পষ্ট।
ভারত অধিনায়কও দ্বিতীয় দিন আম্পায়ারদের সঙ্গে বারবার আলোচনা করেন বলের পরিস্থিতি নিয়ে। গিল, সিরাজ, পন্থ প্রত্যেকেই জানিয়েছেন, বল খুব দ্রুত আকার হারাচ্ছে এবং সিম নরম হয়ে যাচ্ছে। আর এত দ্রুত বল বদলাতে হলে তো তার প্রস্তুতিও থাকতে হয় ম্যাচ রেফারিদের কাছে।
Indian Cricket Team star Jasprit Bumrah refrains from commenting on Dukes Ball