ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের মনোনয়ন নেতানিয়াহুর

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর (Netanyahu) এই সপ্তাহে ওয়াশিংটন সফর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছেন। এই মনোনয়ন তিনি দীর্ঘদিন ধরে চেয়ে…

Netanyahu and trump meeting at white hose

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর (Netanyahu) এই সপ্তাহে ওয়াশিংটন সফর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছেন। এই মনোনয়ন তিনি দীর্ঘদিন ধরে চেয়ে আসছেন। তবে, গাজায় ২১ মাস ধরে চলা যুদ্ধে যুদ্ধবিরতির জন্য ট্রাম্পের প্রচেষ্টা এখনও সফল হয়নি।

নেতানিয়াহু (Netanyahu) সোমবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে একটি নৈশভোজে মিলিত হন এবং তাঁকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়নপত্র প্রদান করেন। এই সফর ছিল ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে নেতানিয়াহুর তৃতীয় হোয়াইট হাউস সফর, যা গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে আলোচনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

   

নেতানিয়াহু (Netanyahu) ট্রাম্পকে মনোনয়নপত্র প্রদান করে বলেন, “আপনি একের পর এক দেশ ও অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করছেন।” তিনি ট্রাম্পের নেতৃত্বে ২০২০ সালে স্বাক্ষরিত আব্রাহাম চুক্তি এবং মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রচেষ্টার জন্য তাঁর প্রশংসা করেন। ট্রাম্প, যিনি এই পুরস্কারের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আগ্রহী, এই মনোনয়নকে “খুবই অর্থবহ” বলে বর্ণনা করেন। এটি ট্রাম্পের দ্বিতীয় উচ্চ-প্রোফাইল মনোনয়ন, এর আগে পাকিস্তান গত মাসে তাঁকে ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মনোনয়ন দিয়েছিল।

নেতানিয়াহুর (Netanyahu) এই সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব করেছে, যার মাধ্যমে হামাস ১০ জন জীবিত এবং ১৮ জন মৃত জিম্মির মুক্তি দেবে, এবং ইসরায়েল গাজার কিছু অংশ থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে। কাতারে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা চলছে, যেখানে মার্কিন প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ এই সপ্তাহে যোগ দেবেন।

তবে, প্যালেস্টাইনীয় সূত্র জানিয়েছে, এই আলোচনায় কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। হামাস যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তি এবং ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের দাবি করছে, যেখানে নেতানিয়াহু হামাসের নির্মূল ও নির্বাসনের শর্ত জুড়ে দিয়েছেন।

ট্রাম্প গাজায় যুদ্ধবিরতিকে তাঁর মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার বৃহত্তর লক্ষ্যের অংশ হিসেবে দেখছেন, যার মধ্যে সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করা অন্তর্ভুক্ত। তবে, সৌদি নেতৃত্ব জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধ চলাকালীন এই স্বাভাবিকীকরণ সম্ভব নয়। নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি এই অঞ্চলে ব্যাপক শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা দেখছেন, তবে ইসরায়েল গাজার উপর নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে।

নেতানিয়াহুর (Netanyahu) নোবেল মনোনয়নকে অনেকে কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। বিশ্লেষকরা মনে করেন, তিনি ট্রাম্পের প্রশংসা করে তাঁর সমর্থন নিশ্চিত করতে চাইছেন, যাতে গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া এবং ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপে মার্কিন সমর্থন অব্যাহত থাকে। গত মাসে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে ১২ দিনের যুদ্ধের পর ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়, যা নেতানিয়াহুর মনোনয়নের একটি কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

Advertisements

গাজায় (Netanyahu) যুদ্ধের মানবিক বিপর্যয় ক্রমশ ভয়াবহ হচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৬০,০০০ ফিলিস্তিনী নিহত হয়েছেন। খাদ্য বিতরণে কঠোর বিধিনিষেধ এবং সামরিক অভিযানের ফলে বাস্তুচ্যুতি ও ক্ষুধার সমস্যা তীব্র হয়েছে। জাতিসংঘ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলি গাজার বাসিন্দাদের জোরপূর্বক স্থানান্তরের প্রস্তাবকে ‘জাতিগত নির্মূল’ হিসেবে অভিহিত করে নিন্দা করেছে।

নেতানিয়াহুর (Netanyahu) এই সফর ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ককে আরও জোরদার করেছে, তবে গাজায় যুদ্ধবিরতি অধরাই রয়ে গেছে। প্যালেস্টাইনীয় কর্মকর্তারা আলোচনায় ইসরায়েলের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, এবং হামাসের দাবি ও ইসরায়েলের শর্তের মধ্যে দূরত্ব কমেনি। ট্রাম্প আশাবাদী হলেও, আলোচনার ফলাফল এখনও অনিশ্চিত।

আপনার আদেশ মানব বলে দিলীপের আত্মসমর্পণ, বিজেপির অভ্যন্তরে কী ঘটছে?

এই সফর এবং নোবেল মনোনয়ন মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে নতুন গতিশীলতা তৈরি করেছে। তবে, গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, এবং ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর সম্মিলিত প্রচেষ্টা এই সংকটের সমাধান করতে পারে কিনা, তা সময়ই বলবে।