বর্ষাকালে মশাবাহিত রোগে অতিষ্ট সকলেই। বাড়ছে ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়া রোগে আক্রমণের সংখ্যা। এবার এই মশাবাহিত রোগের বিরুদ্ধে এক অভিনব উদ্যোগ অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের। অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার অত্যাধুনিক এক প্রযুক্তির মাধ্যমে লড়তে চাইছে এই রোগের বিরুদ্ধে। খুব শ্রীঘ্রই অন্ধ্রপ্রদেশে চালু হতে চলেছে ‘স্মার্ট মশা নজরদারি ব্যবস্থা’ (Smart Mosquito Surveillance System – SMoSS)। এই এআই (AI)-চালিত এবং আইওটি (IoT) প্রযুক্তি-নির্ভর প্রোগ্রামটি প্রচলিত “স্প্রেয়িং” পদ্ধতির পরিবর্তে ডেটা-ভিত্তিক, সুনির্দিষ্ট সমাধানের পথ দেখাবে বলেই আশা করা হচ্ছে।
জানা যাচ্ছে, পৌর প্রশাসন ও নগর উন্নয়ন বিভাগ কর্তৃক পরিচালিত এই উদ্ভাবনী প্রকল্পটি প্রাথমিকভাবে রাজ্যের ছয়টি প্রধান পৌর কর্পোরেশনের ৬৬টি স্থানে ‘পাইলট প্রোজেক্ট’ হিসেবে চালু হবে। উন্নত AI-চালিত এই সিস্টেমের প্রধান লক্ষ্য হল, মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি পৌর কর্মীদের উপর চাপ কমানো এবং স্থানীয় সংস্থাগুলির খরচ বাঁচানো। এই সিস্টেমে স্মার্ট সেন্সর, ড্রোন, হিট ম্যাপ-এর মতো অত্যাধুনিক ইন্টারনেট-অফ-থিংস (IoT) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে ‘রিয়েল-টাইম’ পর্যবেক্ষণের জন্য।
উল্লেখ্য, এই সিস্টেমটির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল মশা-প্রবণ অঞ্চলে AI-চালিত স্মার্ট মশা সেন্সর স্থাপন। এর মাধ্যমে খুব সহজেই মশার প্রজাতি, লিঙ্গ, ঘনত্ব এবং তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার মতো পরিবেশগত ডেটা সনাক্ত করা যাবে। আবার যদি কোনও নির্দিষ্ট এলাকায় মশার ঘনত্ব একটি পূর্বনির্ধারিত সীমা অতিক্রম করে, তাহলে সিস্টেমটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সতর্কবার্তা পাঠাবে। এই সেন্সরগুলি থেকে প্রাপ্ত ডেটা একটি কেন্দ্রীয় সার্ভারে ক্রমাগত স্ট্রিম করা হবে এবং একটি রিয়েল-টাইম ড্যাশবোর্ডে ওই ডেটা গুলি দেখা যাবে। পাশাপাশি, এই কর্মসূচিতে ড্রোন ব্যবহার করা হবে লার্ভিসাইড স্প্রে করার জন্য। এর কর্মসূচির ফলে আশা করা হচ্ছে, দ্রুত বড় এলাকা কভার করা, রাসায়নিক ব্যবহার কমানো, সময় বাঁচানো সহ খরচ কমানোর মাধ্যমে প্রজেক্টের কার্যকারিতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। এই সিস্টেমে সারারাজ্যের হাসপাতালগুলি থেকে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু সহ অন্যান্য মশাবাহিত রোগির দৈনিক রিপোর্টও পাওয়া যাবে। এই গুরুত্বপূর্ণ ডেটা মশার “হটস্পট” সনাক্ত করতে ব্যবহৃত হবে, যা উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় নির্ধারিত ফগিং এবং লার্ভাল চিকিৎসার জন্য বিশেষ কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে সহায়তা করবে।