কলকাতা: পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর যখন গোটা জম্মু ও কাশ্মীর আতঙ্কের মধ্যে ছিল, তখন সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মানবিকতায় মুগ্ধ হয়ে এবার খোদ কৃতজ্ঞতা জানাতে পশ্চিমবঙ্গে এলেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা (Omar Abdullah)। শুধু ধন্যবাদই নয়, মমতাকে তিনি কাশ্মীর সফরের আমন্ত্রণও জানালেন।
রাজনৈতিক সৌজন্য বজায় রেখেই নয়, এক গভীর কৃতজ্ঞতা ও আন্তরিকতার সুরে ওমর আবদুল্লা বলেন, “দিদিকে বলেছি, সুযোগ পেলে একবার ভূস্বর্গ কাশ্মীরে আসুন। আমি তো বহুবার অতিথি হয়ে এসেছি বাংলায়। এবার চাই বাংলার মানুষজনও আরও বেশি করে আসুন কাশ্মীরে।”
এই মন্তব্যে ধরা পড়েছে দুই রাজ্যের মধ্যে আন্তরিক সম্পর্কের বার্তা এবং কাশ্মীরের পর্যটন শিল্পকে আরও চাঙ্গা করার প্রয়াস। পহেলগাঁওয়ে হামলার পর হোটেলগুলো প্রায় শুন্য হয়ে গিয়েছিল, বিমান পরিষেবা কমে গিয়েছিল উল্লেখযোগ্যভাবে।
ওমর জানান, “দিনে যেখানে ৫০টা বিমান যেত, তা নেমে আসে ১৫-তে। তবে এখন আবার পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। বিমান সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২০–২৫। কলকাতা থেকেও ফের সরাসরি ফ্লাইট চালু হয়েছে।” এই তথ্যের মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চাইলেন যে, কাশ্মীর আবার পর্যটকদের কাছে নিরাপদ ও আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠছে।
ওমর আবদুল্লার মতে, “পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী যে মানবিক সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তা কাশ্মীরের মানুষ কোনওদিন ভুলবে না। এটি শুধুই রাজনৈতিক সৌজন্য নয়, এটি আন্তরিক সহানুভূতির প্রতিফলন।” এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। জানান, অমরনাথ যাত্রায় লক্ষাধিক মানুষ আসছেন, এবং কেউই বলেননি তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। নিরাপত্তা বাহিনী সর্বোচ্চ তৎপরতায় কাজ করছে।”
ওমর স্পষ্ট বলেন, “আমি ফাঁকা কাশ্মীরকে প্রোমোট করতে আসিনি, এসেছি সম্ভাবনাময় কাশ্মীরকে ফের জাগিয়ে তুলতে।” তাঁর বার্তা পরিষ্কার— কাশ্মীর শুধু অতীতের স্মৃতি নয়, ভবিষ্যতের সম্ভাবনাও।
তিনি বলেন, “বাংলা ও কাশ্মীর— দুই সংস্কৃতি, দুই আবেগের বন্ধন আরও মজবুত হোক। আমি চাই, বাংলা থেকে আরও বেশি পর্যটক আসুন কাশ্মীরে। তাতে কেবল অর্থনীতিই নয়, হৃদয়ের সম্পর্কও গভীর হবে।”
ওমর আবদুল্লার এই সফর কেবল রাজনৈতিক সফর নয়, এটি দুই রাজ্যের মধ্যে সুসম্পর্ক, কৃতজ্ঞতা ও পর্যটন শিল্পের পুনরুজ্জীবনের বার্তা। কাশ্মীরের বিপদের সময়ে বাংলার পাশে থাকার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করে ওমর যেভাবে আমন্ত্রণ জানালেন, তা নিঃসন্দেহে এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। এখন দেখার, ‘দিদি’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমন্ত্রণ গ্রহণ করে কাশ্মীর সফরে যান কিনা।