তৃণমূলের মহিলা কাউন্সিলরকে হেনস্তার অভিযোগ দলের কর্মীর বিরুদ্ধে

খড়দহ: উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহ পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডে শাসকদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ফের প্রকাশ্যে। অভিযোগ, দলীয় এক কর্মীর হাতে হেনস্তা হতে হল তৃণমূলের মহিলা কাউন্সিলর…

Congress Expels Shankar Malakar from All Posts Amid TMC Defection Buzz

খড়দহ: উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহ পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডে শাসকদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ফের প্রকাশ্যে। অভিযোগ, দলীয় এক কর্মীর হাতে হেনস্তা হতে হল তৃণমূলের মহিলা কাউন্সিলর (TMC Councillor) মধুরীতা গোস্বামী মুখোপাধ্যায়কে। শুধু হেনস্তা নয়, মারধর ও খুনের হুমকির অভিযোগ এনেছেন তিনি। এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে স্থানীয় মহলে।

ঘটনার মূল অভিযুক্ত সমীর বোস, যিনি তৃণমূল ট্রেড ইউনিয়নের দীর্ঘদিনের সংগঠক বলেই পরিচিত। কাউন্সিলরের অভিযোগ, তিনি তাঁকে মারধর করেন, ফোন কেড়ে নেন এবং খুনের হুমকি দেন। এই ঘটনার পর তিনি খড়দহ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সমীর বোসকে গ্রেফতার করলেও পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর থেকেই আতঙ্কে রয়েছেন মধুরীতা (TMC Councillor)।

   

কাউন্সিলর জানান, “আমি নিরাপদ বোধ করছি না। ভাবতেও পারছি না একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়েও এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। বিষয়টি আমি দলের নেতৃত্বকে জানাব।” তাঁর এই বক্তব্য ঘিরে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও—“যদি একজন কাউন্সিলরই নিজের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত থাকেন, তবে সাধারণ মানুষের কী হবে?”

এই ঘটনার পরেও অবশ্য মুখ খোলেননি খড়দহ পুরসভার চেয়ারম্যান নিলু সরকার। তিনি বলেছেন, “কাউন্সিলরের উচিত ছিল বিষয়টি আগে দলীয় নেতৃত্ব বা আমার কাছে জানানো। তবে অভিযুক্ত সমীর বোস দীর্ঘদিনের সংগঠক, তাই ঘটনা খতিয়ে দেখা দরকার।”

অন্যদিকে, অভিযুক্ত সমীর বোস সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর পাল্টা দাবি, তিনি মধুরীতার দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন, সেই কারণেই তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। তাঁর কথায়, “কাউন্সিলর একজন তোলাবাজ। এলাকায় কী হচ্ছে, তা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুললেই তাকে দমন করা হচ্ছে।”

Advertisements

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিং কটাক্ষ করে বলেন, “খড়দহে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এখন ওপেন সিক্রেট। তোলাবাজিকে ঘিরে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ও পার্থ ভৌমিকের টানাপোড়েন বহুদিনের। এখন সেটা নিচের স্তরেও পৌঁছে গিয়েছে। এই হামলা তারই অংশ।”

তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব যদিও এখনও বিষয়টি নিয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি, তবে স্থানীয় স্তরের এই সংঘাত যে দলের ভাবমূর্তিকে বড়সড় ধাক্কা দিতে পারে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে, সামনে বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতির প্রেক্ষিতে, এমন ঘটনা দলের পক্ষে অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত এবং দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে তৃণমূলের একাংশও। এখন দেখার, দলীয় নেতৃত্ব কী অবস্থান নেয় এবং খড়দহের অভ্যন্তরীণ কোন্দল কতটা দ্রুত মেটাতে সক্ষম হয়।