নয়াদিল্লি: ভারতের অতীতের এক অন্ধকার অধ্যায় ১৯৭৫ সালের জরুরি অবস্থার কঠোর সমালোচনা করলেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর। আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম Project Syndicate-এ প্রকাশিত একটি জোরালো মতামত প্রবন্ধে তিনি লেখেন, ইন্দিরা গান্ধীর একনায়কতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত কেবলমাত্র ভারতীয় গণতন্ত্রকে বিপন্ন করেনি, বরং গোটা দেশজুড়ে ভয়, দমন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের এক ‘ভয়াবহ তালিকা’ তৈরি করেছিল- যার অনেকটাই বিশ্ব অজানাই থেকেছে।
জরুরি অবস্থাই একমাত্র পথ
থারুর লিখেছেন, “ইন্দিরা গান্ধী দাবি করেছিলেন এই কঠোর পদক্ষেপগুলি দেশের ‘অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা’ ও ‘বাইরের হুমকি’ মোকাবেলায় জরুরি ছিল। তাঁর মতে, জরুরি অবস্থাই একমাত্র পথ ছিল যা ভারতকে ‘শৃঙ্খলাবদ্ধ’ ও ‘দক্ষ’ করতে পারত। কিন্তু বাস্তবে এই সিদ্ধান্ত দেশজুড়ে ভয় আর অবদমনের পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল।”
এই মন্তব্য এমন সময়ে এল, যখন কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে শশী থারুরের দূরত্ব আরও প্রকাশ্য হয়ে উঠছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক নীতির প্রশংসা করে দলীয় অবস্থান থেকে বিচ্যুত হওয়ায় থারুরকে নিয়ে দলের অন্দরেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
মানবাধিকার লঙ্ঘন Shashi Tharoor Emergency Critique
প্রবন্ধে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “জরুরি অবস্থার সময়কালে দেশজুড়ে যে ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন, রাজনৈতিক বিরোধীদের গ্রেফতার, সংবাদপত্রে সেন্সরশিপ এবং সাধারণ মানুষের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছিল, তার যথাযথ নথিভুক্তি হয়নি। অথচ, ওই সময়ের বাস্তবতা ছিল ভয়াবহ।”
রাজনৈতিক তাৎপর্য
থারুরের এই বক্তব্য শুধুমাত্র অতীত পর্যালোচনায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং কংগ্রেসের ইতিহাস, আত্মসমালোচনা এবং বর্তমান নেতৃত্বের প্রতি পরোক্ষ বার্তা হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই লেখার মাধ্যমে থারুর আবারও দেখিয়ে দিলেন, তিনি দলীয় লাইন অনুসরণ না করে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে বলতে পিছপা নন।