অমিত শাহর অবসর! বিজেপির চাণক্য রাজনীতি ছেড়ে কী করবেন?

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) তাঁর অবসরোত্তর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। তিনি বেদ, উপনিষদ ও প্রাকৃতিক কৃষিকাজে মনোনিবেশ করতে চান। রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে স্বাস্থ্যের…

Union Home Minister Amit Shah

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) তাঁর অবসরোত্তর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। তিনি বেদ, উপনিষদ ও প্রাকৃতিক কৃষিকাজে মনোনিবেশ করতে চান। রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে স্বাস্থ্যের ওপর পড়া নেতিবাচক প্রভাবের কথা উল্লেখ করে শাহ জৈব কৃষির প্রসারের পক্ষে সওয়াল করেছেন।

তিনি বলেন, “যখন আমি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হলাম, সবাই বলেছিল আমি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দফতর পেয়েছি। কিন্তু যেদিন আমি সহকারিতা মন্ত্রক পেলাম, সেদিন আমার মনে হয়েছিল আমাকে আরও বড় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একটি দায়িত্ব যা দেশের কৃষক, দরিদ্র মানুষ, গ্রাম ও পশুদের সেবা করার সুযোগ দেয়।”

   

রাজনীতিবিদরা নাকি কখনও অবসর নেন না” তবে অমিত শাহ দিলেন ব্যতিক্রমী ইঙ্গিত। রাজনীতিতে জীবনের পুরোটা কাটিয়ে দেওয়ার পর অনেক প্রভাবশালী নেতাই কখনও না কখনও একটু ধীর গতির জীবনের কথা ভাবেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপির অন্যতম প্রধান মুখ অমিত শাহ বুধবার, এক বিরল আবেগঘন মুহূর্তে, নিজের অবসরোত্তর পরিকল্পনার কথা জানালেন।

রাজস্থান, গুজরাট ও মধ্যপ্রদেশ থেকে আগত মহিলা ও সমাজকর্মীদের সঙ্গে এক আন্তরিক আলোচনায় শাহ বলেন: “আমি ঠিক করেছি, অবসরের পর আমার বাকি জীবনটা আমি বেদ, উপনিষদ ও প্রাকৃতিক কৃষিকাজে নিবেদন করব।” হিন্দু ধর্মগ্রন্থ অধ্যয়নের প্রসঙ্গে খুব বেশি খোলসা না করলেও কৃষিকাজ নিয়ে তাঁর চিন্তা-ভাবনা বেশ খোলামেলা ও স্পষ্ট ছিল।

Advertisements

শাহ জোর দিয়ে বলেন, রাসায়নিক সারে উৎপাদিত গম মানুষের শরীরে ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও থাইরয়েডের মতো গুরুতর অসুখ ডেকে আনছে। আহমেদাবাদে ‘সহকার সংবাদ’ অনুষ্ঠানে শাহ বলেন, “রাসায়নিক সারে উৎপন্ন গম খেলে ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, থাইরয়েডের মতো রোগ হচ্ছে। আগে আমরা এইসব জানতাম না। রাসায়নিক সারমুক্ত খাবার খেলেই ওষুধের প্রয়োজনই হবে না”।

তিনি বলেন, প্রাকৃতিক কৃষিকাজ শুধু রোগ-ব্যাধি কমায় না, ফসলের উৎপাদনও বাড়িয়ে দেয়। তিনি জানান “আমি নিজের জমিতে প্রাকৃতিক কৃষি করছি, এবং ফসলের পরিমাণ প্রায় দেড় গুণ বেশি হয়েছে”। এই পদ্ধতির পরিবেশগত উপকারিতার কথাও উল্লেখ করে তিনি বলেন “যখন ভারি বৃষ্টি হয়, তখন সাধারণত জল জমি থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু জৈব কৃষিতে একটা ফোঁটাও বেরোয় না সব মাটির নিচে চলে যায়। কারণ প্রাকৃতিক কৃষি মাটিতে ‘ক্যাচওয়ে’ তৈরি করে দেয়। রাসায়নিক সার সেই ক্যাচওয়ে নষ্ট করে দিয়েছে”। তিনি আরও বলেন, “পৃথিবীর কেঁচো প্রাকৃতিক সার তৈরি করে। কিন্তু রাসায়নিক সার কেঁচো মেরে ফেলেছে। এই কেঁচোই প্রকৃতির নিজস্ব ইউরিয়া, ডিএপি, এমপিকে-র কারখানা ছিল।”

অনুষ্ঠানে তিনি মন্ত্রী হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতার কথাও বলেন এবং বিশেষভাবে সহকারিতা মন্ত্রকের সঙ্গে তাঁর আত্মিক সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বহু মহিলা সমবায় কর্মী, যাঁদের অভিজ্ঞতা ও মতামতও গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরা হয়।