নয়াদিল্লি: বিহারে ভোটার তালিকা বিশেষভাবে আপডেট (Special Intensive Revision – SIR) করার উদ্যোগে আধার কার্ডকে গ্রহণযোগ্য পরিচয়পত্রের তালিকা থেকে বাদ দেওয়াকে ঘিরে শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। এর মাঝেই ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (UIDAI)-এর সিইও ভূবনেশ কুমার স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন – “আধার কখনওই প্রথম পরিচয় ছিল না।”
একান্ত সাক্ষাৎকারে ইন্ডিয়া টুডে-কে কুমার বলেন, অনেকেই আধার কার্ডকে একমাত্র পরিচয়পত্র ধরে নিচ্ছেন, কিন্তু এটি মূলত একটি ডিজিটাল আইডেন্টিটি টুল, যা অন্য নথির সঙ্গে মিলিয়ে কাজ করে।
জাল আধারের বিরুদ্ধে UIDAI-র কড়া নজরদারি
কুমার জানান, আধার কার্ডে থাকা QR কোড-এর মাধ্যমে কার্ডটি আসল কি না, তা সহজেই যাচাই করা সম্ভব। UIDAI নিজস্ব একটি QR স্ক্যানার অ্যাপ তৈরি করেছে, যা দিয়ে তাৎক্ষণিক যাচাই করা যায়।
“অনেকে ফটোশপ বা ছাপার মাধ্যমে দেখতে আধার মতো কার্ড তৈরি করছে, কিন্তু সেগুলো কখনওই বৈধ আধার নয়,” তিনি জোর দিয়ে বলেন।
আসছে আধারের নতুন অ্যাপ, থাকবে ‘মাস্কড শেয়ারিং’ সুবিধা UIDAI Aadhaar Digital Identity
UIDAI প্রধান আরও জানান, একটি নতুন আধার অ্যাপ তৈরির কাজ প্রায় শেষের দিকে। অ্যাপটির ডেমো ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে আধারধারী নিজের পরিচয় ডিজিটালি শেয়ার করতে পারবেন- সম্পূর্ণ বা আংশিক (masked) ভাবে নিজের সম্মতিক্রমেই। “এর ফলে আর কারো সঙ্গে আধারের ফিজিক্যাল কপি ভাগ করে নেওয়ার প্রয়োজন হবে না,” বলেন কুমার।
বিরোধীদের প্রশ্ন: তাহলে আধারকে বাদ দেওয়া হচ্ছে কেন?
বিহারে SIR কার্যক্রম ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্কও তীব্র হয়েছে। আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন, “বায়োমেট্রিক ভিত্তিক আধার, যেটি ভোটার কার্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করা হচ্ছে, সেটিই যদি ভোটার প্রমাণের জন্য যথেষ্ট না হয়, তবে গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।”
তিনি SIR কার্যক্রম ভোটের আগে স্থগিত রাখার দাবি জানিয়েছেন এবং অভিযোগ করেছেন, ভোটারদের কাছ থেকে তথ্য নেওয়ার সময় বুথ লেভেল অফিসারদের (BLOs) রোষের মুখে পড়তে হচ্ছে।
কী কী নথি গ্রহণযোগ্য, আর কী বাদ?
নির্বাচন কমিশনের মতে, বর্তমানে যে ১১টি নথিকে পরিচয়পত্র হিসেবে গ্রহণ করা হচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে — জন্ম সনদ, শিক্ষা সনদ, জাতি ও বাসস্থান সনদ, সরকারি চাকরিজীবীদের পরিচয়পত্র বা পেনশন কার্ড, এনআরসি নথি, বন অধিকার সনদ, পারিবারিক নিবন্ধন ও জমির বরাদ্দের কাগজ।
কিন্তু তালিকায় আধার কার্ড, প্যান কার্ড এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স, যেগুলি দেশের সর্বাধিক ব্যবহৃত পরিচয়পত্র- অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
নির্বাচন কমিশনের অবস্থান
EC জানিয়েছে, ২৪ জুনের নির্দেশ অনুযায়ী ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে প্রায় ৮ কোটি ভোটারের তথ্য হালনাগাদ করার কাজ চলছে। কমিশনের দাবি, মাঠপর্যায়ে কাজ “স্মুথলি” চলছে এবং নির্দেশনায় কোনো পরিবর্তন হয়নি।