দিল্লি সফর ঘিরে জল্পনা, দলবদলের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেন দিলীপ ঘোষ

দলীয় রাজ্য সভাপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, তার পরেই রাতারাতি দিল্লি যাওয়ার খবর— রাজনীতির উত্তাপে তেতে ওঠে বঙ্গ বিজেপি অন্দরমহল। তৃণমূলে যোগদানের জল্পনা ফের ঘনীভূত হয়…

Dilip Ghosh Asked to Remain Active, Says BJP Top Brass

দলীয় রাজ্য সভাপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, তার পরেই রাতারাতি দিল্লি যাওয়ার খবর— রাজনীতির উত্তাপে তেতে ওঠে বঙ্গ বিজেপি অন্দরমহল। তৃণমূলে যোগদানের জল্পনা ফের ঘনীভূত হয় দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghosh) ঘিরে। তবে বুধবার সকালে প্রাতঃভ্রমণের পথে সেই সব জল্পনায় কার্যত জল ঢেলে দেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। জানিয়ে দেন, দিল্লি সফর “অফিসিয়াল নয়”, এবং তৃণমূলে যোগদানের কোনও প্রশ্নই নেই।

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আসা দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) কিছুদিন ধরেই দলের মূল মঞ্চ থেকে দূরে। দুর্গাপুর-বর্ধমান কেন্দ্র থেকে লোকসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকেই দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁর প্রতি মনোযোগ কমিয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এমনকি সম্প্রতি বঙ্গ বিজেপির একাধিক বড় কর্মসূচিতে তাঁকে দেখা যায়নি— যার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরও ছিল।

   

এই প্রেক্ষাপটে হঠাৎ দিল্লি যাওয়ার সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে জল্পনার আগুন ছড়িয়ে পড়ে— তবে কি এবার ‘একুশে জুলাই’-এর মঞ্চেই তৃণমূলে যোগ দেবেন বঙ্গ বিজেপির একসময়ের ‘পোস্টার বয়’?

মঙ্গলবার রাতেই যদিও রাজ্য বিজেপির নবনিযুক্ত সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের আমন্ত্রণে সল্টলেকের দলীয় কার্যালয়ে হাজির হন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। সেখানে দুই নেতার মধ্যে হয় দীর্ঘ আলোচনা। দলীয় ঐক্যের বার্তা দিয়ে দিলীপ বলেন, “যখন দলে এসেছিলাম, তখন শমীকদা আমার সিনিয়র ছিলেন। পুরনো-নতুন সবাই মিলে দল গড়েছি। লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। শমীকদার নেতৃত্বেই বাংলায় পরিবর্তন হবে।”

সেই সাক্ষাতের কিছুক্ষণের মধ্যেই শোনা যায় দিল্লি যাচ্ছেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। রাত পোহাতেই প্রশ্ন উঠে— তবে কি দলীয় ‘দিল্লি নেতৃত্বর’ সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক? দিলীপ অবশ্য এই দাবি একেবারেই উড়িয়ে দিয়েছেন। বুধবার সকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “আমি প্রায়ই দিল্লি যাই। ওখানে বহু বছর কাটিয়েছি। এবার অফিসিয়াল কোনও কাজে যাচ্ছি না। কাল কার সঙ্গে বৈঠক করেছি, এসব নিয়ে অনেকে নানা কথা বলছে— তার সবই ভিত্তিহীন।”

Advertisements

নিজের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জল্পনা নিয়ে দিলীপ (Dilip Ghosh) বলেন, “এতদিন ধরে নানা রকম কথা হাওয়ায় ভাসানো হচ্ছে। এখন আবার নতুন করে ভাবছে, কী বলা যায়। কে কী বলছে, তাতে কিছু যায় আসে না। আমি আমার রাজনৈতিক অবস্থানে অনড়।”

উল্লেখযোগ্যভাবে, সম্প্রতি দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনের দিনে পার্টি লাইন অমান্য করেই নিজের বিবাহ পর্বে হাজির হয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর খোশগল্পের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়— যা দলের কর্মীদের একাংশের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করে। অনেকে মনে করেন, দিলীপ বিজেপির সাংগঠনিক চাপে ‘সাইডলাইনড’ হয়ে পড়েছেন।

সব মিলিয়ে, দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) দিল্লি সফর ও তাঁর দলবদল সংক্রান্ত জল্পনা এখনই থেমে যাচ্ছে না। যদিও তিনি নিজে সমস্ত আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন, রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে— দিলীপ কি ভবিষ্যতের কোনও বড় রাজনৈতিক চালের প্রস্তুতি নিচ্ছেন? নাকি দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্বের আবহেই নিজের অবস্থান বজায় রাখছেন তিনি?

এই প্রশ্নের উত্তর ভবিষ্যৎই দেবে। তবে আপাতত দিলীপ ঘোষ জানিয়ে দিলেন— “যে যা পারে বলুক, কী এসে যায়?”