ব্রাসিলিয়া: বিশ্বজুড়ে তাঁর নেতৃত্বগুণ ও কূটনৈতিক তৎপরতা প্রশংসিত। এবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে আরও এক বিরল সম্মান পেলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভারত-ব্রাজিল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়ার অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ মোদীকে ব্রাজিলের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ‘গ্র্যান্ড কলার অব দ্য ন্যাশনাল অর্ডার অব দ্য সাউদার্ন ক্রস’ প্রদান করলেন ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি লুইজ ইনাকিও লুলা দ্য সিলভা।
মঙ্গলবার ব্রাসিলিয়ায় রাষ্ট্রপতি লুলার হাতে এই সম্মান গ্রহণ করেন মোদী। রাষ্ট্রপতি নিজে তাঁর গলায় এই সম্মানজড়ানো মেডেল পরিয়ে দেন। এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ছিল মিলিটারি গার্ড অফ অনার এবং ১১৪টি ঘোড়ার অংশগ্রহণে বিশেষ অভ্যর্থনা — যা ব্রাজিল সরকারের তরফে এক অনন্য কূটনৈতিক সম্মান বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
‘১৪০ কোটি ভারতবাসীর জন্য গর্বের মুহূর্ত’
সম্মান পাওয়ার পর এক যৌথ বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “ব্রাজিলের সর্বোচ্চ জাতীয় সম্মানে ভূষিত হওয়া শুধু আমার ব্যক্তিগত সম্মান নয়, এটি ১৪০ কোটি ভারতীয়র গর্ব ও আবেগের মুহূর্ত। প্রেসিডেন্ট লুলা, ব্রাজিলের সরকার এবং সাধারণ মানুষকে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই।”
তিনি আরও জানান, এই সম্মানের মাধ্যমে দুই দেশের দীর্ঘস্থায়ী বন্ধনের প্রতিফলন ঘটেছে এবং আগামী দিনে ভারত-ব্রাজিল সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলেই তিনি আশাবাদী। পরে সামাজিক মাধ্যমে মোদী লেখেন, “এই সম্মান দুই দেশের মানুষের হৃদয়ের সংযোগকে তুলে ধরে।”
৫৭ বছরের বিরতি ভেঙে ব্রাজিল সফরে narendra modi brazil award
ব্রিকস সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পর ব্রাজিল সফরে যান মোদী। উল্লেখযোগ্যভাবে, ৫৭ বছর পর কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী এই দেশে পা রাখলেন। এই সফরকেই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় বলে মনে করছেন কূটনৈতিক মহল।
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির তালিকায় আরও একটি পালক
২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পর থেকে এপর্যন্ত মোদী বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে পেয়েছেন মোট ২৬টি আন্তর্জাতিক সম্মান। মাত্র কিছুদিন আগেই, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো সরকার তাঁকে তাঁদের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান প্রদান করে। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই প্রথম কোনও বিদেশি রাষ্ট্রনেতাকে সে দেশের এই সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে।
কূটনৈতিক সম্পর্কের মজবুত ভিত্তি
বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্রাজিলের এই সম্মান শুধুই আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং দুই দেশের মধ্যে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক স্তরে যৌথ সহযোগিতার নতুন দিগন্তের ইঙ্গিত। রাষ্ট্রপতি লুলাও নিজেই বলেন, “আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে ভারত ও ব্রাজিলের সহযোগিতা বাড়াতে মোদীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।” এই সম্মান ভারত-ব্রাজিল কূটনৈতিক ইতিহাসে এক উল্লেখযোগ্য অধ্যায় হিসেবেই চিহ্নিত হবে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক কূটনীতি বিশেষজ্ঞরা।