কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকে দেশে চলা সাধারণ ধর্মঘটের প্রভাব (Bharat Bandh Today) পড়ে বাঁকুড়ার পরিবহণ ক্ষেত্রে। বুধবার সকাল থেকে গোবিন্দনগর বাসস্ট্যান্ডে দেখা যায় এক অস্বাভাবিক দৃশ্য। দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে একের পর এক বাস, কিন্তু কোনো বেসরকারি বাস এদিন রাস্তায় বের হয়নি। পরিবহণ ব্যবস্থা একেবারে অচল হয়ে পড়ে, যার ফলে যাত্রীদের জন্য সৃষ্টি হয় চরম দুর্ভোগ। বিশেষ করে সকালে যখন বৃষ্টি শুরু হয়, তখন বাস না চলায় যাত্রীদের ভোগান্তি আরও বেড়ে যায়। বাসের অভাবে সাধারণ মানুষদের ছুটির দিনে দৈনন্দিন কর্মে যাওয়ার মধ্যে বিপদ সৃষ্টি হয়।(Bharat Bandh Today)
এদিকে, ভারতের বন্ধের দাবিতে বাঙুর অ্যাভিনিউ থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। এই মিছিলটি চলতে চলতে দমদম যশোর রোড অবরোধ করে ফেলে। বামপন্থী কর্মী সমর্থকরা দেশব্যাপী বন্ধ সমর্থনে স্লোগান দিতে থাকে এবং সেখানে আটকে যায় যান চলাচল। যদিও পরে বিক্ষোভকারীরা বাধ্য হয়ে অবরোধ তুলে নেয়, কিন্তু এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকাটিতে উত্তেজনা বিরাজ করতে থাকে।(Bharat Bandh Today)
লেকটাউন যশোর রোডেও বন্ধ সমর্থকদের(Bharat Bandh Today) বিরোধিতা শানাতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি এবং বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের তীব্র বাকবিতণ্ডা শুরু হলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশের হস্তক্ষেপের পর অবরোধ তুলে নেওয়া হলেও ওই এলাকায় যান চলাচল অত্যন্ত সীমিত ছিল। ফলে, একদিকে যেখানে রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি হচ্ছে, সেখানে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগও বাড়ছে।(Bharat Bandh Today)
আরও একটি ঘটনা ঘটে যাদবপুর ৮বি বাসস্ট্যান্ডে, যেখানে বন্ধ সমর্থকরা টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। বিক্ষোভকারীরা তাদের ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানানোর জন্য রাস্তার ওপর আগুন জ্বালিয়ে দেন। এই ঘটনায় পুরো এলাকা স্তব্ধ হয়ে পড়ে, যার ফলে সড়ক যোগাযোগে ব্যাঘাত ঘটে। তবে, পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিভিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তারপরও এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল এবং সাধারণ মানুষ ছিলেন আতঙ্কিত।(Bharat Bandh Today)
এই ঘটনার ফলে রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যে তীব্র অস্থিরতা ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকে সাধারণ ধর্মঘট সমর্থনকারী দলগুলো একদিকে রাজনৈতিক বিরোধিতা এবং আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে সাধারণ জনগণ এই পরিস্থিতির কারণে প্রচণ্ড সমস্যায় পড়েছে। বিশেষত, যাতায়াত ব্যবস্থার বাধা এবং কর্মস্থলে যেতে না পারা বহু মানুষের জন্য বড় বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাঁকুড়া সহ পুরো পশ্চিমবঙ্গে বনধের প্রভাব ছিল ব্যাপক। বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ, অবরোধ এবং গাড়ি চলাচলে বাধা দেওয়া হয়েছে। এই বনধের কারণে রাজ্যের প্রশাসনিক ব্যবস্থা এবং পুলিশের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়েছে, কারণ বনধকে কেন্দ্র করে কিছু জায়গায় পুলিশের সঙ্গে সাধারণ জনগণের তর্কবিতর্কও হয়।
এমনকি, ধর্মঘটের দিনে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়ে পড়েছে। সরকারি অফিস, ব্যাংক, ডাকঘরগুলোতে উপস্থিতি ছিল কম। বিভিন্ন শাখার কর্মীরা বনধের সমর্থনে কাজে যোগ দেননি, যার ফলে প্রতিদিনের কাজকর্মে সমস্যা দেখা দেয়।
এমন পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের সরকার এবং বিরোধী দলগুলো একে অপরকে দোষারোপ করতে থাকে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, জনগণের জন্য সকল পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তবে বিরোধী দল দাবি করেছে, “এটি গণতন্ত্রের সুরক্ষা এবং জনস্বার্থের জন্য প্রয়োজনীয়”।
বাঁকুড়ার মতো জায়গায়, যেখানে বনধের বিরুদ্ধে মানুষের মতবিরোধ ছিল, সেখানে শাসক দল এবং বিরোধী দল একে অপরকে দোষারোপ করেছে। সরকারের উচিত ছিল এই ধরনের পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য আগে থেকেই ব্যবস্থা নেওয়া, যাতে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবন ও কাজের সুষ্ঠু চলাচল নিশ্চিত করা যায়।
অবশেষে, বলতেই হয় যে, ভারত বনধের দিন পশ্চিমবঙ্গের অনেক জায়গায় উত্তেজনা ও অশান্তির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যা রাজ্যের প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।