শেয়ারের মতো সোনায় বিনিয়োগ? জেনে নিন Gold BeES-এর সুবিধা

গত কয়েক মাসে সোনার দাম যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে ২৪ ক্যারেট সোনার দাম প্রতি ১০ গ্রামে ৯৮,৮৪০ টাকা, যা অনেক বিনিয়োগকারীর জন্য এক আকর্ষণীয় সুযোগ…

Sovereign Gold Bonds 2017-18 Series XIV, 2018-19 Series IV: RBI Sets Premature Redemption Price at ₹9,628

গত কয়েক মাসে সোনার দাম যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে ২৪ ক্যারেট সোনার দাম প্রতি ১০ গ্রামে ৯৮,৮৪০ টাকা, যা অনেক বিনিয়োগকারীর জন্য এক আকর্ষণীয় সুযোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা এই দাম বৃদ্ধির সুযোগ নিয়ে তাদের পোর্টফোলিওকে আরও বৈচিত্র্যময় করতে পারেন এবং সোনার মূল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে লাভ অর্জন করতে পারেন।

পূর্বে সোনায় বিনিয়োগ বলতে শারীরিকভাবে সোনার গহনা, বার বা কয়েন কেনাকে বোঝানো হতো। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে বিনিয়োগের ধরণে এসেছে পরিবর্তন। এখন ডিজিটাল মাধ্যমে সোনায় বিনিয়োগ করা যায়, যা সুরক্ষিত ও সহজ। এ ক্ষেত্রে Gold BeES একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি হিসেবে উঠে এসেছে।

   

Gold BeES অর্থাৎ Gold Benchmark Exchange Traded Schemes হলো ওপেন-এন্ডেড এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ড (ETF), যা শারীরিক সোনার মূল্যের ওঠানামার উপর ভিত্তি করে চলে। অর্থাৎ শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এই ফান্ডটি শারীরিক সোনার দামের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত। ফলে বিনিয়োগকারীরা বাজারদরের ভিত্তিতে সরাসরি সোনায় বিনিয়োগের সুযোগ পান।

Gold BeES ETF গুলো জাতীয় স্টক এক্সচেঞ্জ (NSE) এবং বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ (BSE)-এ লেনদেনযোগ্য। শেয়ারের মতো এগুলোও বাজার সময়ে কেনা-বেচা করা যায়।

Gold BeES-এর একটি ইউনিট মানে ০.০১ গ্রাম ৯৯.৫% বিশুদ্ধ সোনা। এই ইউনিটগুলো ডিম্যাট অ্যাকাউন্টে সংরক্ষিত থাকে। ফলে শারীরিকভাবে সোনা সংরক্ষণের ঝুঁকি বা ঝামেলা থাকে না। বিনিয়োগকারীরা সহজেই বাজারদর অনুযায়ী ইউনিট বিক্রি বা কিনতে পারেন।

Gold BeES ETFs-এর মূল বৈশিষ্ট্য:
Gold BeES ETFs সম্পূর্ণভাবে শেয়ারের মতো লেনদেনযোগ্য। এক ইউনিট কেনার অর্থ হলো ০.০১ গ্রাম সোনায় বিনিয়োগ। বিনিয়োগের পর, ইউনিটগুলো আপনার ডিম্যাট অ্যাকাউন্টে জমা হয়।

বাজারের চলতি দর অনুযায়ী এই ETF-এর দাম ওঠানামা করে। সুতরাং বিনিয়োগকারীরা দিনের যেকোনো সময় এই ফান্ড কিনতে বা বিক্রি করতে পারেন। এটি লিকুইডিটির দিক থেকে অত্যন্ত সুবিধাজনক।

Advertisements

শারীরিক সোনার ক্ষেত্রে যেমন অতিরিক্ত খরচ (যেমন, মেকিং চার্জ, সেফটি লকার ভাড়া ইত্যাদি) থাকে, সেখানে Gold BeES ETF-এ এই ধরনের কোনো খরচ নেই। এছাড়াও, কোনো এন্ট্রি বা এক্সিট লোড নেই, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য আরও লাভজনক।

Gold BeES ETFs-এর সুবিধা:
উচ্চ লিকুইডিটি:
যখনই প্রয়োজন, তখনই ইউনিট বিক্রি করা যায়। ফলে আর্থিক জরুরী প্রয়োজনে সোনার বিনিয়োগ সহজেই নগদ করা যায়। শারীরিক সোনার তুলনায় এটি অনেক দ্রুত এবং ঝুঁকিমুক্ত।
খরচের সাশ্রয়:
শারীরিক সোনার ক্ষেত্রে যেমন সুরক্ষার জন্য ব্যাংক লকারের খরচ এবং অন্যান্য চার্জ থাকে, Gold BeES-এ তা নেই। শুধুমাত্র নামমাত্র ব্রোকারেজ ফি দিতে হয়, যা শেয়ার লেনদেনের মতোই কম।
নমনীয় বিনিয়োগ:
শারীরিক সোনার ক্ষেত্রে একসাথে বড় অঙ্কের টাকা খরচ করতে হয়। কিন্তু Gold BeES-এ বিনিয়োগ শুরু করা যায় মাত্র ০.০১ গ্রাম সোনা দিয়ে। ফলে ছোট বা বড়, যেকোনো বিনিয়োগকারী তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী ধাপে ধাপে বিনিয়োগ বাড়াতে পারেন।
স্বচ্ছ লেনদেন প্রক্রিয়া:
Gold BeES ETF কেনা-বেচার পুরো প্রক্রিয়া অত্যন্ত স্বচ্ছ। বাজারদরে নির্ধারিত দামে ইউনিট লেনদেন হয় এবং কোনো গোপন চার্জ থাকে না। তাছাড়া, শারীরিক সোনার মতো প্রমাণপত্র, বিশুদ্ধতা যাচাই, বা চুরি-ছিনতাইয়ের ঝুঁকি নেই।

কেন এই সময় সোনায় বিনিয়োগ করবেন?
বর্তমানে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা, মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি, এবং ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সোনার দাম ঊর্ধ্বমুখী। সাধারণত সোনাকে ‘সেফ হ্যাভেন’ বা সুরক্ষিত সম্পদ হিসেবে ধরা হয়। ফলে বাজারে অস্থিরতার সময় সোনার দিকে বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকতে থাকেন।

যদি আপনার পোর্টফোলিওতে সোনার মতো নিরাপদ সম্পদ অন্তর্ভুক্ত থাকে, তবে তা সামগ্রিক ঝুঁকি হ্রাসে সাহায্য করে। এই দিক থেকে Gold BeES ETF একটি আধুনিক ও স্মার্ট বিকল্প।

সোনার দামের ঊর্ধ্বগতি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে। Gold BeES ETF-এর মাধ্যমে সোনা কেনা এখন আগের চেয়ে অনেক সহজ, সাশ্রয়ী এবং নিরাপদ।

ডিজিটাল মাধ্যমে সোনায় বিনিয়োগের সুবিধা গ্রহণ করতে চাইলে এখনই উপযুক্ত সময়। একটি ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খুলে খুব সহজে শুরু করতে পারেন আপনার সোনার ডিজিটাল যাত্রা। বাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে এ ধরনের বিনিয়োগ আর্থিক সুরক্ষা ও ভবিষ্যতের জন্য স্থিতিশীল আয় নিশ্চিত করতে সহায়ক হতে পারে।