আরজি কর কাণ্ডের বছর ফেরে রাত জাগবেন জুনিয়র ডাক্তাররা

২০২৪ সালের আগস্টে রাজ্য রাজনীতি এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছিল কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ (RG Kar incident)। জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশের বিরুদ্ধে…

আরজি কর কাণ্ডের বছর ফেরে রাত জাগবেন জুনিয়র ডাক্তাররা

২০২৪ সালের আগস্টে রাজ্য রাজনীতি এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছিল কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ (RG Kar incident)। জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশের বিরুদ্ধে উঠেছিল বিভিন্ন ধরনের গুরুতর অভিযোগ, যার সূত্র ধরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল গোটা রাজ্য। এবার সেই ঘটনার এক বছর পূর্তি উপলক্ষে ফের প্রতিবাদে নামছে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট’।

৮ আগস্ট রাতে মশাল মিছিলের ডাক দিয়েছেন সংগঠনের মুখ কিঞ্জল, অনিকেত ও দেবাশিসরা। তবে তাঁরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, পরদিন অর্থাৎ ৯ আগস্ট বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ডাকা বৈঠকে তাঁরা যোগ দিচ্ছেন না।

   

এক সাংবাদিক সম্মেলনে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট’-এর তরফে জানানো হয়, “আমরা চিকিৎসক। আমাদের প্রতিবাদ সংবিধান অনুযায়ী শান্তিপূর্ণভাবে হবে। ৮ আগস্ট রাতে আমরা আর জি কর কাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে মশাল মিছিল করব। কিন্তু ৯ আগস্ট শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আমরা থাকব না।”

তাঁরা আরও জানান, চিকিৎসা ব্যবস্থার সমস্যার সমাধান রাজনৈতিক রাস্তায় নয়, বরং স্বচ্ছ প্রশাসনিক এবং নীতিগত হস্তক্ষেপেই সম্ভব।

২০২৪ সালের ৯ আগস্ট আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে এক জুনিয়র চিকিৎসককে ঘিরে মারধরের অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনার জেরে আন্দোলনে নেমেছিলেন চিকিৎসকেরা। ছাত্র রাজনীতি, পুলিশি হস্তক্ষেপ, হাসপাতালের নিরাপত্তা—সব মিলিয়ে সেই সময় রাজ্যে তৈরি হয়েছিল চরম উত্তেজনা। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি সেই ঘটনাকে হাতিয়ার করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানায়।

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৯ আগস্ট একটি বৃহৎ প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন, যেখানে আর জি কর কাণ্ড-সহ একাধিক ইস্যু তুলে ধরা হবে বলে বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে। কিন্তু সেই মঞ্চ থেকে নিজেদের আলাদা রেখেছে জুনিয়র চিকিৎসকদের সংগঠন। তাঁদের বক্তব্য,

Advertisements

“আমরা কোনও রাজনৈতিক দলের মঞ্চে আমাদের বক্তব্য রাখতে চাই না। আমাদের প্রতিবাদ স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতির জন্য, দলীয় প্রচার নয়।”

এই সিদ্ধান্তে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি। রাজ্য বিজেপির এক সূত্রে জানানো হয়েছে, “আমরা আশা করেছিলাম যে চিকিৎসকরা এই কর্মসূচিতে থাকবেন। তবে তাঁদের সিদ্ধান্তকে সম্মান করি।”

অন্যদিকে তৃণমূলের তরফে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, “চিকিৎসকেরা বুঝতে পেরেছেন কোনটা প্রকৃত আন্দোলন আর কোনটা রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা।”

আর জি কর কাণ্ডের এক বছর পূর্তিতে ফের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এলেন রাজ্যের জুনিয়র চিকিৎসকেরা। রাজনৈতিক দলের মঞ্চ থেকে নিজেদের দূরে রেখে তাঁরা সমাজ ও চিকিৎসা ব্যবস্থার সামনে এক আলাদা বার্তা তুলে ধরলেন। তাঁদের শান্তিপূর্ণ মশাল মিছিল শুধুই প্রতিবাদ নয়, বরং চিকিৎসা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা এবং নিরাপত্তার দাবিতে এক নতুন পথের সূচনা বলেই মনে করছেন অনেকেই।

৮ আগস্টের রাত আবারও জানিয়ে দেবে—ব্লিচিং এর গন্ধে নয়, আলোর মিছিলে এগিয়ে যেতে চায় বাংলার চিকিৎসকসমাজ।