পহেলগাঁও-এ হামলার পর প্রথমবার মুখোমুখি মমতা-ওমর, নবান্নে বৈঠক

কাশ্মীরের পহেলগাঁও-এ (Pahalgam) জঙ্গি হামলার রেশ কাটেনি এখনও। সেই ঘটনার কয়েকদিনের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার…

পহেলগাঁও-এ হামলার পর প্রথমবার মুখোমুখি মমতা-ওমর, নবান্নে বৈঠক

কাশ্মীরের পহেলগাঁও-এ (Pahalgam) জঙ্গি হামলার রেশ কাটেনি এখনও। সেই ঘটনার কয়েকদিনের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার (Omar Abdullah) মধ্যে বৈঠক হতে চলেছে কলকাতায়, নবান্নে। রাজনীতির উত্তাল আবহে দুই মুখ্যমন্ত্রীর এই সাক্ষাৎ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

সূত্রের খবর অনুযায়ী, ১০ জুলাই বিকেল ৪টা থেকে ৪টে ৪৫-এর মধ্যে মুখোমুখি বসবেন দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। নবান্নে নির্ধারিত এই বৈঠকে কোনও প্রশাসনিক প্রতিনিধি থাকবেন না। অর্থাৎ, পুরো বৈঠকটি হবে একান্তে—দুই মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে সরাসরি কথোপকথন।

   

যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতার দফতর এই বৈঠককে ‘সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ’ বলেই উল্লেখ করেছে, তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, জম্মু ও কাশ্মীরে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসবাদী হামলা, এনআইএ অভিযান, জাতীয় রাজনীতির সমীকরণ এবং সীমান্ত নিরাপত্তা—এইসব প্রসঙ্গ আলোচনায় আসা অত্যন্ত স্বাভাবিক।

উল্লেখযোগ্যভাবে, পহেলগাঁও হামলার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে তীব্র নিন্দা করেন এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। ওমর আবদুল্লার সঙ্গেও তাঁর সুসম্পর্ক বহুদিনের। ফলে এই সময় তাঁর কলকাতা সফর ও মমতার সঙ্গে সাক্ষাৎ ঘিরে অনেক রাজনৈতিক ব্যাখ্যা উঠে আসছে।

এ মাসের শুরুতে পহেলগাঁও-এ একটি তীর্থযাত্রী বহরে জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েকজনের। গোটা দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই প্রেক্ষিতে জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রীর হঠাৎ কলকাতা সফর এবং নবান্নে বৈঠক ঘিরে আলোচনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

Advertisements

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ভারতীয় রাজনীতির বর্তমান অস্থির পরিস্থিতি এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে ভবিষ্যৎ জোটের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা হতে পারে এই সাক্ষাতে। পাশাপাশি এনআইএ-র সাম্প্রতিক অভিযান, বিজেপি-বিরোধী রাজনৈতিক ঐক্য, এবং আসন্ন নির্বাচনের সম্ভাব্য কৌশল নিয়েও প্রাথমিক আলোচনা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এই সাক্ষাৎ শুধুমাত্র সৌজন্যমূলক নয়, বরং একটি কৌশলগত বার্তাও বহন করছে। তৃণমূল কংগ্রেস এবং ন্যাশনাল কনফারেন্স—দুই দলই বিজেপির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী জোট নিয়ে ততটা সরব না হলেও, ওমর আবদুল্লার সঙ্গে এই সাক্ষাৎ সেই সম্পর্ক নতুন করে মূল্যায়নের দিকেই ইঙ্গিত করছে।

১০ জুলাই নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও ওমর আবদুল্লার মধ্যে এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক জাতীয় রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত দিতে পারে। যদিও এই সাক্ষাৎকে ‘সৌজন্য’ বলে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে, তবু এর পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে ভবিষ্যতের বৃহত্তর রাজনৈতিক সমীকরণ। পহেলগামের রক্তাক্ত ঘটনার আবহে দুই মুখ্যমন্ত্রীর এই মুখোমুখি বসা আগামী দিনে রাজনীতিতে নতুন দিশা দেখাতে পারে—এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।