২১ জুলাই উত্তরকন্যা অভিযানে নিষেধাজ্ঞা, হাইকোর্টে বিজেপি যুব মোর্চা

২১ জুলাই শহিদ দিবস। প্রতি বছরের মতো এবারও কলকাতায় তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মসূচিকে ঘিরে রাজ্যজুড়ে চলছে রাজনৈতিক উত্তেজনা। ঠিক সেই দিনেই পালটা কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন বিরোধী…

Budge Budge case suvendu pointed out the syndicate

২১ জুলাই শহিদ দিবস। প্রতি বছরের মতো এবারও কলকাতায় তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মসূচিকে ঘিরে রাজ্যজুড়ে চলছে রাজনৈতিক উত্তেজনা। ঠিক সেই দিনেই পালটা কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যে নারী সুরক্ষা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিজেপির পক্ষ থেকে শিলিগুড়িতে ‘উত্তরকন্যা চলো’ (Uttarkanya March) অভিযানের ঘোষণা করা হয়। কিন্তু সেই কর্মসূচির অনুমতি দিল না পুলিশ প্রশাসন।

মঙ্গলবার শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর জানান, বিজেপিকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে এই কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। পুলিশের মতে, ওই কর্মসূচির কারণে আইনশৃঙ্খলার সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

   

বিষয়টি নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষ। তিনি বলেন, “২১ জুলাই উত্তরকন্যা অভিযান নিয়ে বিজেপি যুব মোর্চা যে কর্মসূচি নিয়েছে, তা বন্ধ করে দিল পুলিশ। পুলিশ যে সরকারের মেরুদণ্ডহীন যন্ত্র হয়ে উঠেছে, তা এই ঘটনাই প্রমাণ করে। রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস যা খুশি করছে, কিন্তু বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “এটা পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্রের পক্ষে কালো দিন। যতবারই বিজেপি রাজ্যে কোনও প্রতিবাদ কর্মসূচি নিতে চায়, প্রশাসন বাধা দেয়। অথচ তৃণমূলের জন্য কোনও বিধিনিষেধ থাকে না। তাই এবার আমরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছি।” শংকর ঘোষ জানান, বিজেপি যুব মোর্চা আইনি অনুমতির জন্য জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে মামলা দায়ের করতে চলেছে।

সম্প্রতি কসবার এক সরকারি আইন কলেজে ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ সামনে আসার পর থেকেই রাজ্যজুড়ে নারী সুরক্ষা নিয়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘কন্যা সুরক্ষা’ কর্মসূচির ঘোষণা করেন। এর অংশ হিসেবে শিলিগুড়ি-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মিছিলের পরিকল্পনা করে বিজেপি।

Advertisements

২১ জুলাই, যখন কলকাতায় তৃণমূল কর্মীরা শহিদ দিবস পালন করবেন, তখনই বিজেপি রাজ্যের অপর প্রান্তে নারী সুরক্ষার দাবিতে উত্তরকন্যা অভিযানের ডাক দিয়েছিল। তাতে বাধা দিল রাজ্য প্রশাসন।

তৃণমূল নেতা ও শিলিগুড়ি পুরনিগমের চেয়ারম্যান গৌতম দেব বলেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যদি অবনতির আশঙ্কা থাকে, তাহলে পুলিশ তার দায়িত্ব পালন করতেই পারে। পুলিশ সঠিক মনে করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে রাজনৈতিক রঙ খোঁজা উচিত নয়।”

তিনি আরও বলেন, “নারী সুরক্ষা নিয়ে যদি কেউ আন্দোলন করতে চান, সেটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে না হয়ে আন্তরিকভাবে হলে তাতে কারও আপত্তি থাকার কথা নয়। তবে শহিদ দিবসের দিনে উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা হলে প্রশাসন অবশ্যই বাধা দেবে।”

২১ জুলাইয়ের তৃণমূলের শহিদ দিবস কর্মসূচির পালটা বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযান আপাতত প্রশাসনের অনুমোদন পায়নি। তবে বিষয়টি আদালতে গড়িয়েছে। বিজেপি যুব মোর্চা জানিয়েছে, তারা রাজ্যের নারী সুরক্ষা নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাবে এবং সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার জন্য প্রয়োজনে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবে। এখন দেখার, জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ থেকে এই বিষয়ে কী নির্দেশ আসে।