বীরভূম: বীরভূমের প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে বিতর্কিত অডিও ক্লিপ-কাণ্ডে দিল্লিতে জাতীয় মহিলা কমিশনের (NCW) তলব এড়িয়ে এবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন জেলার পুলিশ সুপার (SP) আমনদীপ। আগামীকাল, বুধবার এই বিষয়ে মামলার শুনানি হতে পারে বলে আদালত সূত্রে খবর।
কমিশনের নির্দেশ ছিল, ১ জুলাই বেলা ১২টার মধ্যে দিল্লিতে হাজিরা দিতে হবে বীরভূমের এসপিকে। অনুপস্থিত থাকলে বোলপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বা এসডিপিওকে প্রয়োজনীয় নথিপত্র সহ হাজির থাকতে বলা হয়েছিল। কিন্তু নির্দেশ না মেনে এসপি এবার আইনি আশ্রয় নিয়েছেন, যার রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক তাৎপর্য বেশ গভীর।
ঘটনার প্রেক্ষাপট
মে মাসের শেষদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়, যেখানে একটি পুরুষ কণ্ঠস্বর বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করছে। অভিযোগ, এই কণ্ঠ অনুব্রত মণ্ডলের। কেবল ওই অফিসার নন, ফোনালাপের সময় তাঁর মা ও স্ত্রী সম্পর্কেও কুরুচিকর মন্তব্য শোনা যায়,যা নেটিজেনদের মধ্যে প্রবল ক্ষোভ তৈরি করে।
জানা গিয়েছে, আইসি লিটন হালদার নিজের নামে অভিযোগ দাখিল করেন। এরপর বীরভূম জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অনুব্রতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির (BNS) ২২৪, ১৩২, ৩৫১ ও ৭৫ ধারায় জামিন অযোগ্য মামলা রুজু হয়। তাঁকে তলবও করা হয়। কিন্তু এর পরেও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনও পুলিশি পদক্ষেপ না নেওয়ায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
জাতীয় মহিলা কমিশনের হস্তক্ষেপ Birbhum SP NCW summons
২৫ জুন জাতীয় মহিলা কমিশন সরাসরি বীরভূমের এসপিকে চিঠি দিয়ে জিজ্ঞাসা করে, কেন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তীব্র ভাষায় জানানো হয়, কমিশনের নির্দেশ অমান্য করলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এই পরিস্থিতিতে, প্রশাসনিক চাপ এবং কমিশনের কড়া অবস্থানের সম্ভাবনা মাথায় রেখেই এসপি এবার হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়েছেন বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর।
এখন নজর আদালতের দিকেই
বুধবার মামলার শুনানির সম্ভাবনা থাকলেও, আদালতের তরফে কী সিদ্ধান্ত আসে, তা নির্ধারণ করবে আগামী দিনের প্রশাসনিক গতিপথ। শুধু বীরভূম নয়, গোটা রাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনও এই মামলার দিকেই তাকিয়ে।
এখন দেখার, আইন ও প্রশাসনের জটিলতার মাঝে এই মামলার পরবর্তী মোড় কোন দিকে ঘোরে—বিচারব্যবস্থা কী বার্তা দেয় পুলিশ প্রশাসন এবং রাজনৈতিক মহলকে।