২১ জুলাইয়ের আগে নতুন সুর? দিলীপ ঘোষ কি এবার ঘাসফুলের পথে!

কলকাতা: রাজ্য রাজনীতিতে এখন জোর জল্পনা— বিজেপির সর্বাধিক সফল রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) কি পদ্ম ছেড়ে ঘাসফুলে যোগ দেবেন? একুশে জুলাইয়ের আগে রাজনীতির…

Dilip Ghosh Slams Abhishek Banerjee, Defends BJP’s Rath Yatra in West Bengal Politics

কলকাতা: রাজ্য রাজনীতিতে এখন জোর জল্পনা— বিজেপির সর্বাধিক সফল রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) কি পদ্ম ছেড়ে ঘাসফুলে যোগ দেবেন? একুশে জুলাইয়ের আগে রাজনীতির উত্তাপ বাড়াচ্ছে এই প্রশ্ন। সরাসরি কিছু না বললেও, দিলীপ ঘোষের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড সেই জল্পনাকে আরও উসকে দিচ্ছে।

শুভেন্দু অধিকারী একুশে জুলাইয়ের দিন উত্তরবঙ্গে ‘উত্তরকন্যা অভিযান’-এর ডাক দিয়েছেন। আর ঠিক সেই দিনেই পূর্ব মেদিনীপুরে কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকবেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। বিজেপির অন্দরের খবর, খড়গপুর শহরে একটি বড় প্রতিবাদ কর্মসূচির প্রস্তুতি নিচ্ছেন দিলীপ। অর্থাৎ, স্পষ্ট যে তিনি শুভেন্দুর কর্মসূচির সঙ্গে কোনওভাবেই যুক্ত নন।

   

এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়— দীর্ঘ প্রায় এক বছর পর বিজেপির সল্টলেক দফতরে যাচ্ছেন দিলীপ ঘোষ। রাজ্য সভাপতি পদে শমীক ভট্টাচার্যের অভিষেক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না পেলেও, বর্তমানে শমীকের আমন্ত্রণে তিনি দফতরে যাচ্ছেন বলে সূত্রের খবর। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, দিলীপ (Dilip Ghosh)-শমীক বৈঠকেই হয়তো বিজেপির ‘আদি’ বনাম ‘নব্য’ দ্বন্দ্বে নতুন সমীকরণ তৈরি হতে পারে।

শুভেন্দু অধিকারী ও সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghosh) যে প্রায় কোণঠাসা করা হয়েছিল, তা অজানা নয়। দলের বহু কর্মী এখনও মনে করেন, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির উত্থানের অন্যতম কারিগর ছিলেন দিলীপ ঘোষ। তবুও গত কয়েকবছর ধরে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সভায় ব্রাত্য থেকে গিয়েছেন তিনি। মোদী-শাহের রাজ্য সফরে থাকলেও, তাঁর কোনও উপস্থিতি দেখা যায়নি। এমনকি সাম্প্রতিক শমীক ভট্টাচার্যের রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠানেও তিনি আমন্ত্রিত ছিলেন না।

এসবের প্রেক্ষিতে দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে একাধিক জল্পনা শুরু হয়। কখনও বলা হয়, তিনি বিজেপি ছেড়ে নতুন দল গড়বেন। আবার কারও মতে, দিঘার জগন্নাথধাম দর্শনের পর থেকেই ঘাসফুলে যোগদানের সম্ভাবনা উঁকি দিতে শুরু করেছে।

Advertisements

তবে একাংশের মতে, শমীক ভট্টাচার্য দায়িত্ব নেওয়ার পরেই বিজেপির পুরনো, সংগঠনঘেঁষা নেতাদের গুরুত্ব বাড়ছে। সেক্ষেত্রে দিলীপ ঘোষকেও (Dilip Ghosh) দলের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। এই সম্ভাবনাকেই সামনে রেখে অনেকেই মনে করছেন, একুশে জুলাই খড়গপুরে দিলীপ ঘোষ কোনও বড় রাজনৈতিক বার্তা দিতে পারেন।

অবশ্য তিনি নিজে এখনও কোনও চূড়ান্ত মন্তব্য করেননি। তবে তাঁর সল্টলেক অফিসে ফেরা, শুভেন্দুর কর্মসূচি থেকে দূরে থাকা, খড়গপুরে পৃথক কর্মসূচি— সব মিলিয়ে বঙ্গ রাজনীতিতে এক নতুন মোড় আসতে চলেছে বলেই ইঙ্গিত দিচ্ছে রাজনৈতিক মহল।

দলবদলের জল্পনা, অভ্যন্তরীণ কোন্দল, এবং রাজনীতির কূটচালে একুশে জুলাই যে শুধু শহীদ দিবস নয়, বরং একাধিক রাজনৈতিক নাটকের মঞ্চ হয়ে উঠতে চলেছে, তা বলাই যায়। এখন নজর থাকবে দিলীপ ঘোষের ঘোষণার দিকেই— ঘাসফুল না পদ্ম, কোন পথ বেছে নেন তিনি?