‘মোদী দেবতাকে রাজনীতির নাটকে প্রপস করেছেন,’ বিস্ফোরক ব্রাত্য

কলকাতায় মা কালির ছবির পাশে মোদীর ছবি ঘিরে আগেই সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছিল (Bratya Basu)। এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাম্প্রতিক একটি পোস্টে সনাতন ধর্ম নিয়ে…

Bratya Basu slams modi

কলকাতায় মা কালির ছবির পাশে মোদীর ছবি ঘিরে আগেই সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছিল (Bratya Basu)। এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাম্প্রতিক একটি পোস্টে সনাতন ধর্ম নিয়ে তাঁর নিয়মিত ভাষণের প্রেক্ষাপটে তীব্র সমালোচনা উঠেছে এবং যা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।

ব্রাত্য (Bratya Basu) তার এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে দাবি করেছেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, যিনি সনাতন ধর্ম নিয়ে জাতিকে উপদেশ দিতে কখনো সুযোগ হাতছাড়া করেন না, তিনি পবিত্র দেবতাদের রাজনৈতিক নাটকের প্রপসে পরিণত করার অনুমতি দিয়েছেন।

   

এটি ভক্তি নয়, এটি আমাদের ধর্ম এবং ঐতিহ্যের প্রতি স্পষ্ট অসম্মান!” এই অভিযোগ রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে, যেখানে ধর্মীয় সংবেদনশীলতা রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

অভিযোগের পটভূমি

এক্স-এ ব্রাত্য প্রধানমন্ত্রী (Bratya Basu) মোদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ কইছেন যে তিনি সনাতন ধর্মের প্রতি তাঁর ভক্তির কথা বারবার বললেও, তাঁর দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ধর্মীয় প্রতীক ও দেবতাদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে। এই অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছে বিজেপির প্রচারণা কৌশল, যেখানে ধর্মীয় প্রতীক, মন্দির এবং দেবতাদের ছবি বা মূর্তি রাজনৈতিক প্রচারে ব্যবহৃত হচ্ছে ।

রাজনৈতিক মহলে এই ধরনের কাজকে “ধর্মের অপব্যবহার” হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।পশ্চিমবঙ্গে, যেখানে দুর্গাপূজা, কালীপূজা, এবং অন্যান্য হিন্দু উৎসবগুলি সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় পরিচয়ের অংশ, এই অভিযোগ বিশেষভাবে সংবেদনশীল।

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, (Bratya Basu) বিজেপি রাজ্যে হিন্দু ভোটারদের আকর্ষণ করতে ধর্মীয় ইস্যুকে কেন্দ্র করে প্রচার চালিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, রাম নবমী শোভাযাত্রা এবং হনুমান জয়ন্তী উৎসবগুলি বিজেপির নেতৃত্বে ব্যাপকভাবে পালিত হয়েছে, যা বিরোধী দলগুলি রাজনৈতিক প্রচারণার অংশ হিসেবে সমালোচনা করেছে।

তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া

পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস (Bratya Basu) এই অভিযোগের সমর্থনে সরব হয়েছে। তারা বলেছেন, “বিজেপি ধর্মকে রাজনীতির হাতিয়ার করেছে। তারা সনাতন ধর্মের নামে ভোটের রাজনীতি করছে, যা হিন্দু ধর্মের প্রতি অসম্মান।” তৃণমূলের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকল ধর্মের প্রতি সমান সম্মান প্রদর্শন করেন এবং ধর্মীয় উৎসবগুলিকে রাজনীতি থেকে পৃথক রাখেন।

তারা বিজেপির (Bratya Basu) বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে যে, রাজনৈতিক সভায় দেবতাদের ছবি বা মূর্তি ব্যবহার করে তারা ধর্মীয় ভাবাবেগকে উস্কে দিচ্ছে।বিজেপির পাল্টা যুক্তিবিজেপি এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং দাবি করেছে যে তারা সনাতন ধর্মের প্রচার ও সংরক্ষণে কাজ করছে। রাজ্য বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদী সনাতন ধর্মের মর্যাদা বাড়িয়েছেন।

অযোধ্যায় রাম মন্দির (Bratya Basu) নির্মাণ এবং কাশী বিশ্বনাথ করিডোরের মতো প্রকল্প তাঁর নেতৃত্বে সম্পন্ন হয়েছে। বিরোধীরা ধর্মীয় বিষয়ে রাজনীতি করছে।” বিজেপির সমর্থকরা বলেছেন, মোদীর নেতৃত্বে হিন্দু ধর্মের গৌরব পুনরুদ্ধার করা হয়েছে, এবং এই অভিযোগগুলি তাঁর জনপ্রিয়তাকে ক্ষুণ্ন করার প্রয়াস মাত্র।

Advertisements

ধর্মীয় প্রতীকের রাজনৈতিক ব্যবহার

ধর্মীয় প্রতীকের (Bratya Basu) রাজনৈতিক ব্যবহার ভারতের রাজনীতিতে নতুন নয়। তবে, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এই প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিজেপির প্রচারণায় রাম মন্দির, হনুমান জয়ন্তী, এবং অন্যান্য ধর্মীয় উৎসবের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে, রাম নবমী শোভাযাত্রায় বিজেপির সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং কিছু ক্ষেত্রে হিংসার ঘটনা বিরোধীদের সমালোচনার কারণ হয়েছে।

একইভাবে, (Bratya Basu) দুর্গাপূজার সময় রাজনৈতিক দলের প্যান্ডেল পরিদর্শন এবং প্রচারণাকে ধর্মের রাজনৈতিকীকরণ হিসেবে দেখা হয়।দুর্গাপূজা, কালীপূজা, এবং সরস্বতী পূজার মতো উৎসবগুলি রাজ্যের জনজীবনে গভীরভাবে প্রোথিত। তবে, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এই উৎসবগুলি রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

মালদার লক্ষ্মীকান্তপুরে মহরমের তাজিয়া শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা এবং হিন্দু এলাকায় হামলার ঘটনা এই ধরনের সংবেদনশীলতাকে আরও তীব্র করেছে।তৃণমূল কংগ্রেস দাবি করে, তারা সকল ধর্মের প্রতি সমান সম্মান প্রদর্শন করে এবং ধর্মীয় উৎসবগুলিকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলেছেন, তাঁর সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষে। তবে, বিজেপি অভিযোগ করে, তৃণমূলের তোষণ নীতি হিন্দুদের উৎসব পালনে বাধা সৃষ্টি করছে। এই বিতর্কের মধ্যে মোদির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ রাজ্যের রাজনৈতিক সমীকরণকে আরও জটিল করেছে।

সামাজিক (Bratya Basu) প্রভাবধর্মীয় প্রতীকের রাজনৈতিক ব্যবহার সামাজিক সম্প্রীতির উপর প্রভাব ফেলতে পারে। পশ্চিমবঙ্গে, যেখানে হিন্দু এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐতিহাসিকভাবে সম্প্রীতি বজায় ছিল, এই ধরনের অভিযোগ সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়াতে পারে। সমালোচকরা বলছেন, ধর্মীয় প্রতীকের অপব্যবহার কেবল ধর্মীয় ভাবাবেগকে উস্কে দেয় না, বরং সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করে।

এই অভিযোগ বিজেপি (Bratya Basu) এবং তৃণমূলের মধ্যে রাজনৈতিক বিতর্ককে আরও তীব্র করতে পারে। পশ্চিমবঙ্গে, যেখানে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন, এই ধরনের ইস্যু রাজনৈতিক প্রচারণার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে। বিজেপি যদি ধর্মীয় ইস্যুকে আরও জোরালোভাবে তুলে ধরে, তবে তৃণমূল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তাকে সামনে আনতে পারে।

জনধন প্রকল্পে অ্যাকাউন্ট বৃদ্ধির জোয়ারে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কেগুলিতে ৫০ হাজার নিয়োগ

এই ঘটনা ধর্ম এবং (Bratya Basu) রাজনীতির সম্পর্ক নিয়ে বৃহত্তর আলোচনার সূত্রপাত করেছে। সনাতন ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা এবং এর রাজনৈতিক ব্যবহারের মধ্যে সীমারেখা কোথায়, তা নিয়ে আগামী দিনে আরও বিতর্ক হতে পারে। পশ্চিমবঙ্গের জনগণ এই বিষয়ে কীভাবে সাড়া দেয়, তা রাজ্যের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।