দমদম বা বারাসাতে নয়, কোথায় হবে মোদীর জনসভা?

চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হারিয়েছে বিজেপি (BJP)। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বর্ধমান দুর্গাপুর ও বর্ধমান পূর্ব – দুই আসনেই পদ্ম প্রতীককে পিছনে ফেলে জয়…

Narendra Modi in Nandigram Rally

চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হারিয়েছে বিজেপি (BJP)। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বর্ধমান দুর্গাপুর ও বর্ধমান পূর্ব – দুই আসনেই পদ্ম প্রতীককে পিছনে ফেলে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই পরাজয়ের পর বিজেপির সংগঠন নিয়ে শুরু হয়েছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। বিশেষত, দক্ষিণ ও মধ্যবঙ্গের কিছু এলাকায় গেরুয়া শিবিরের সংগঠন ছিল কখনোই মজবুত নয়—লোকসভা ভোটের ফল সেই দুর্বলতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।

এই পটভূমিতে, রাজ্যে বিজেপি-র সংগঠন চাঙ্গা করতে ফের একবার আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। সূত্রের খবর অনুযায়ী, আগামী ১৮ জুলাই রাজ্যে সফরে আসছেন তিনি। প্রথমে শোনা গিয়েছিল, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাকপুর, বারাসত, বনগাঁ ও কলকাতা উত্তর–এই চার সাংগঠনিক জেলাকে ঘিরে জনসভার প্রস্তুতি চলছে। সম্ভাব্য স্থান হিসেবে উঠে এসেছিল দমদম সেন্ট্রাল জেলের মাঠ বা বারাসতের কোনও খোলা ময়দানের নাম।

   

কিন্তু শেষ মুহূর্তে পালটে যেতে পারে মোদির সভার ভেন্যু। সম্প্রতি দলের অন্দরমহলে আলোচনা শুরু হয়েছে দুর্গাপুর-কে কেন্দ্র করে। জানা যাচ্ছে, রাজ্য নেতৃত্বের একাংশের পরামর্শে দুর্গাপুরকে সম্ভাব্য সভাস্থল হিসেবে গুরুত্ব দিয়ে ভাবা হচ্ছে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সভার স্থান পরিদর্শনও ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয় নেতারাও প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। সব কিছু ঠিকঠাক চললে, দুর্গাপুরের কোনও বড় মাঠেই হবে মোদির জনসভা।

প্রসঙ্গত, দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরেই বিজেপির এক শক্তিশালী ভোটব্যাঙ্ক ছিল। দিলীপ ঘোষের মতো হেভিওয়েট নেতা এই এলাকা থেকেই ভোটে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে এই জায়গায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী কীর্তি আজাদ ও শর্মিলা সরকার যথাক্রমে বর্ধমান দুর্গাপুর ও বর্ধমান পূর্ব আসনে জয়ী হয়েছেন। গেরুয়া শিবিরের কাছে এটি ছিল বড় ধাক্কা। ফলে আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এখান থেকেই সংগঠনকে চাঙ্গা করতে চাইছে বিজেপি।

Advertisements

রাজনৈতিক মহলের মতে, দুর্গাপুরে জনসভা করার পরিকল্পনা নিছক এলাকা ভিত্তিক সিদ্ধান্ত নয়—এটি একটি স্ট্র্যাটেজিক মুভ। কারণ, দুর্গাপুর একদিকে যেমন শিল্পাঞ্চল, তেমনই তা বর্ধমান ও আসানসোলের মধ্যবর্তী একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক অঞ্চল। এছাড়া এই শহরে প্রচুর সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারীর বসবাস। প্রধানমন্ত্রী মোদির জনসভা মানেই সেখানে বিশাল জনসমাগম—এবং সেখান থেকেই নতুন বার্তা দিতে পারেন তিনি।

২০২৪-এর লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পর বিজেপির কাছে এই সভা কার্যত ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ ও ‘মরাল বুস্টিং’-এর অংশ। তাই দল চাইছে, দুর্গাপুরে মোদির উপস্থিতি শুধু প্রচার নয়, তা যেন হয় দলীয় কর্মীদের নতুন উদ্যমে উদ্বুদ্ধ করার মাধ্যমও।

এই মুহূর্তে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য রাজ্য বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব দিল্লির সঙ্গেও যোগাযোগ রেখে চলেছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে, আগামী ১৮ জুলাই দুর্গাপুরেই গর্জে উঠবেন প্রধানমন্ত্রী। এখন শুধু অপেক্ষা চূড়ান্ত ঘোষণার।