যোগগুরু (Yogguru) এবং ব্যবসায়ী বাবা রামদেব উত্তরপ্রদেশ সরকারের সাম্প্রতিক নির্দেশকে সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে কানওয়ার যাত্রার পথে অবস্থিত খাবারের দোকান, রেস্তোরাঁ এবং ধাবাগুলিকে তাদের মালিকের নাম প্রকাশ্যে প্রদর্শন করতে বলা হয়েছে। রামদেব বলেন, “যদি রামদেবের নিজের পরিচয় প্রকাশ করতে কোনও সমস্যা না হয়, তবে রহমানের কেন সমস্যা হবে? প্রত্যেকের নিজের নামের প্রতি গর্ব করা উচিত।”
তিনি আরও যোগ করেন, (Yogguru) “নাম লুকানোর কোনও প্রয়োজন নেই। কাজের বিশুদ্ধতাই মুখ্য, হিন্দু, মুসলিম বা অন্য কোনও সম্প্রদায়ের হলেও তাতে কিছু যায় আসে না।” এই নির্দেশ বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, যেখানে বিরোধী দল এবং কিছু বিজেপি মিত্র দলও এটিকে ধর্মীয় ভেদাভেদের অভিযোগে সমালোচনা করেছে।
উত্তরপ্রদেশের (Yogguru) মুজাফফরনগর পুলিশ প্রথমে ১৮ জুলাই ২০২৪-এ একটি নির্দেশ জারি করে, যাতে কানওয়ার যাত্রার পথে খাবারের দোকানগুলিকে মালিকের নাম প্রদর্শন করতে বলা হয়। পরে এই নির্দেশকে ‘স্বেচ্ছাধীন’ করা হলেও, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বে রাজ্য সরকার ১৯ জুলাই ২০২৪-এ এটিকে রাজ্যব্যাপী বাধ্যতামূলক করেন।
সরকারের দাবি, এই নির্দেশ কানওয়ারীদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও পবিত্রতা বজায় রাখার জন্য। উত্তরাখণ্ড এবং মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনী পৌরসভাও এই নির্দেশ অনুসরণ করে অনুরূপ নীতি জারি করেছে।
এই নির্দেশ বিরোধী দলগুলির তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) নেতা আসাদুদ্দিন ওয়াইসি (Yogguru) এই নির্দেশকে মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি ‘বৈষম্যমূলক’ বলে অভিহিত করে এটিকে দক্ষিণ আফ্রিকার ‘আপারথাইড’ এবং নাজি জার্মানির ‘ইহুদি বয়কট’-এর সঙ্গে তুলনা করেছেন।
তিনি বলেন, (Yogguru)এই নির্দেশ মুসলিমদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বয়কটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব এটিকে ‘সামাজিক অপরাধ’ বলে উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। কংগ্রেস নেতা প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা এটিকে সংবিধান, গণতন্ত্র এবং ভারতের ভাগ করা ঐতিহ্যের উপর আক্রমণ বলে বর্ণনা করেছেন।
বিজেপির মিত্র দল জনতা দল (ইউনাইটেড) এবং রাষ্ট্রীয় লোক দল (আরএলডি)ও এই নির্দেশের বিরোধিতা করেছে। জেডি(ইউ) নেতা কে সি ত্যাগী বলেন, কানওয়ার যাত্রা দশকের পর দশক ধরে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে, এবং এই নির্দেশ ধর্মীয় বা জাতিগত বৈষম্য সৃষ্টি করতে পারে।
২২ জুলাই ২০২৪-এ সুপ্রিম কোর্ট(Yogguru) উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড সরকারের এই নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি করে। বিচারপতি হৃষিকেশ রায় এবং এস ভি এন ভাট্টির বেঞ্চ বলেন, খাবারের দোকানগুলি তাদের খাবারের ধরন প্রদর্শন করতে পারে, কিন্তু মালিক বা কর্মচারীদের নাম, ধর্ম বা জাতি প্রকাশের জন্য বাধ্য করা যাবে না।
আদালত এই নির্দেশকে ধর্মীয় ও জাতিগত বৈষম্যের সঙ্গে যুক্ত বলে উল্লেখ করে। এই মামলায় অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রোটেকশন অফ সিভিল রাইটস, তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মহুয়া মৈত্র, অধ্যাপক অপূর্বানন্দ ঝা এবং কলামিস্ট আকর প্যাটেলের পিটিশনের ভিত্তিতে শুনানি চলছে।
সরকারের যুক্তিউত্তরপ্রদেশ (Yogguru) সরকার দাবি করেছে, এই নির্দেশ কানওয়ারীদের ধর্মীয় বিশ্বাসের পবিত্রতা রক্ষা এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য। তারা বলছে, এটি কোনও ধর্মীয় বৈষম্য সৃষ্টির উদ্দেশ্য নয়, বরং তীর্থযাত্রীদের জন্য স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। তবে, বিরোধীরা এই যুক্তিকে ‘রাষ্ট্র-স্পনসরড বিগট্রি’ বলে সমালোচনা করেছে।
এই নির্দেশের ফলে মুসলিম কর্মচারীদের চাকরি হারানোর ঘটনা ঘটেছে। মুজাফফরনগরে কিছু মুসলিম কর্মচারী নিজে থেকে চাকরি ছেড়েছেন, যাতে দোকান মালিকদের সমস্যা না হয়। এই পরিস্থিতি ধর্মীয় বিভাজন এবং অর্থনৈতিক বয়কটের আশঙ্কা তৈরি করেছে।
অর্জুনের ধনুকের মতো অস্ত্র তৈরি করছে DRDO, বিশ্বের সেরা ক্ষেপণাস্ত্রগুলির মধ্যে একটি বলা হবে
বাবা রামদেবের (Yogguru) সমর্থন সত্ত্বেও, এই নির্দেশ ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতা এবং সামাজিক সম্প্রীতির উপর প্রশ্ন তুলেছে। সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ এই বিতর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কানওয়ার যাত্রার মতো ধর্মীয় অনুষ্ঠানে শান্তি ও ঐক্য বজায় রাখতে সরকার এবং সমাজের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।