ন্যাশনাল কনফারেন্সের সভাপতি এবং জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ (Farooq Abdullah) রবিবার শ্রীনগরে একটি মহরম মিছিলে অংশ নিয়েছেন। তিনি মুসলিম সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকল অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “মুসলিমদের সকল মন্দ শক্তির বিরুদ্ধে একত্রিত হওয়া উচিত।
এটিই বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ।” শ্রীনগরের পুরোনো শহরে অনুষ্ঠিত এই মিছিলে অংশ নেওয়ার পর তিনি (Farooq Abdullah) সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। আবদুল্লাহ ইসলামকে শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের ধর্ম হিসেবে উল্লেখ করে এর মূল্যবোধের প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। শ্রীনগরের পুরোনো শহরে মহরম উপলক্ষে আয়োজিত এই মিছিলে ফারুক আবদুল্লাহ স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন।
মহরম মাসে শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষ হজরত ইমাম হুসেনের শাহাদাত স্মরণ করে মিছিল ও শোকসভার আয়োজন করে। এই মিছিলে হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন, যারা ইমাম হুসেনের ত্যাগ ও সাহসের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। ফারুক আবদুল্লাহ (Farooq Abdullah) এই মিছিলে অংশ নিয়ে শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা দেন।
তিনি (Farooq Abdullah) বলেন, “ইসলাম একটি শান্তিপূর্ণ ধর্ম, যা ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির শিক্ষা দেয়। আমাদের এই মূল্যবোধ ধরে রাখতে হবে এবং বিভেদ সৃষ্টিকারী শক্তির বিরুদ্ধে লড়তে হবে।” মিছিলের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আবদুল্লাহ মুসলিম সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি (Farooq Abdullah) বলেন, “আজ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে মুসলিম সম্প্রদায় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের সকল মন্দ শক্তির বিরুদ্ধে একসঙ্গে দাঁড়াতে হবে।” তিনি জম্মু ও কাশ্মীরের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে শান্তি ও স্থিতিশীলতার গুরুত্বের উপর জোর দেন।
আবদুল্লাহ (Farooq Abdullah) আরও বলেন, “ইসলাম আমাদের শান্তি, ভালোবাসা এবং ভ্রাতৃত্বের শিক্ষা দেয়। মহরমের এই মিছিল আমাদের ইমাম হুসেনের ত্যাগ ও সত্যের পথে লড়াইয়ের কথা মনে করিয়ে দেয়। আমাদের এই শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে সমাজে সম্প্রীতি ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।” জম্মু ও কাশ্মীরে মহরম মিছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক ঘটনা।
তবে, অতীতে নিরাপত্তার কারণে শ্রীনগরে এই মিছিলে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। ২০১৯ সালে ৩৭০ ধারা বাতিলের পর থেকে এই মিছিলগুলি কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। এই বছর শ্রীনগরে মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের উৎসাহ এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিরাপত্তা বাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় সম্ভব হয়েছে।
ফারুক আবদুল্লাহর (Farooq Abdullah) উপস্থিতি এই মিছিলে রাজনৈতিক ও সামাজিক ঐক্যের একটি বার্তা দিয়েছে। ফারুক আবদুল্লাহর এই মন্তব্য এবং মিছিলে অংশগ্রহণ রাজনৈতিক মহলে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতারা বলছেন, আবদুল্লাহর এই পদক্ষেপ জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণের সঙ্গে তাঁর গভীর সংযোগের প্রমাণ। অন্যদিকে, কিছু বিরোধী দল এই উপস্থিতিকে রাজনৈতিক সুবিধা অর্জনের কৌশল হিসেবে দেখছে।
তবে, স্থানীয় জনগণ আবদুল্লাহর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে, বিশেষ করে তাঁর শান্তি ও ঐক্যের বার্তাকে। মহরম মিছিল শিয়া সম্প্রদায়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ঘটনা, যা ইমাম হুসেনের শাহাদাতের স্মরণে আয়োজিত হয়। এই মিছিলে শুধু শিয়া সম্প্রদায়ই নয়, বিভিন্ন ধর্মের মানুষও অংশ নেন, যা জম্মু ও কাশ্মীরের ধর্মীয় সম্প্রীতির প্রতীক।
ফারুক আবদুল্লাহর (Farooq Abdullah) উপস্থিতি এই সম্প্রীতির বার্তাকে আরও জোরদার করেছে। তিনি বলেন, “ইসলাম শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের ধর্ম। আমাদের এই মূল্যবোধ ধরে রাখতে হবে এবং সকলের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে হবে।”প্রশাসনের ভূমিকাশ্রীনগরে মহরম মিছিলের জন্য প্রশাসন কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল।
পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী মিছিলের পথে মোতায়েন ছিল, যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। স্থানীয় প্রশাসনের এই উদ্যোগ মিছিলের শান্তিপূর্ণ আয়োজন নিশ্চিত করেছে। আবদুল্লাহ প্রশাসনের এই ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, “নিরাপত্তা বাহিনীর সহযোগিতায় আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এই মিছিল সম্পন্ন করতে পেরেছি।”
বিজেপি কর্মী খুনে সিবিআই তদন্তের মুখে শেখ শাহজাহান, কী প্রমাণ মিলবে?
ফারুক আবদুল্লাহর (Farooq Abdullah) মহরম মিছিলে অংশগ্রহণ এবং তাঁর শান্তি ও ঐক্যের বার্তা জম্মু ও কাশ্মীরের সামাজিক ও ধর্মীয় সম্প্রীতির একটি শক্তিশালী প্রতীক। তাঁর মন্তব্য মুসলিম সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করার আহ্বান জানিয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের জটিল রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতির মধ্যে এই বার্তা শান্তি ও স্থিতিশীলতার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।